রাজন্য রুহানি, জামালপুর : করোনা ভাইরাসের নমুনা পরীক্ষায় জামালপুরে নতুন করে শনাক্ত হয়েছেন ডাক্তার, নার্স, স্বাস্থ্য সহকারী, ওয়ার্ড বয় ও জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলীসহ ১৮ ব্যক্তি। বৃহস্পতিবার (৪ জুন) ময়মনসিংহ পিসিআর ল্যাবে ১৩৩টি নমুনা পরীক্ষায় নতুন করে এই ১৮ ব্যক্তি শনাক্ত হন। এ নিয়ে জেলায় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ৩২২ জনে দাঁড়াল।

শুক্রবার (৫ জুন) সকালে এ তথ্য নিশ্চিত করে সিভিল সার্জন ডাক্তার প্রণয় কান্তি দাস জানান, নতুন শনাক্ত ১৮ ব্যক্তির মধ্যে একজন ডাক্তার, দুজন সিনিয়র স্টাফ নার্স, দুজন স্বাস্থ্য সহকারী, একজন ওয়ার্ড বয়, একজন জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী রয়েছেন। শনাক্তদের মধ্যে রয়েছেন জামালপুর সদরে ৬ জন, সরিষাবাড়ীতে ২ জন, মাদারগঞ্জে ২ জন, ইসলামপুর ৬ জন ও দেওয়ানগঞ্জ ২জন। নতুন আক্রান্তদের নিয়ে জেলায় মোট আক্রান্ত ৩২২ জনে পৌঁছল।

স্বাস্থ্য বিভাগের একাধিক সূত্রে জানা গেছে, নতুন আক্রান্তদের মধ্যে সদর উপজেলার জামালপুর জেনারেল হাসপাতালের এক চিকিৎসক, দুজন সিনিয়র স্টাফ নার্স ও একজন ওয়ার্ড বয় রয়েছন।

সরিষাবাড়ি উপজেলার পৌর এলাকার সাতপোয়া গ্রামের ৪০ বছর বয়সী একজন নারী ও ৪৫ বছর বয়সী একজন পুরুষের দেহে করোনা ভাইরাসের উপস্থিতি শনাক্ত হয়েছে। করোনা পজিটিভ ওই নারীর ভাসুর ও তার মেয়ে কয়েক দিন আগে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। তারা ঢাকাতে পোশাক কারখানায় কাজ করতেন। তাদের দেহে করোনা উপসর্গ দেখা দিলে তারা ঢাকা থেকে নিজবাড়িতে এসেছেন।

ইসলামপুর উপজেলার জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী, খাদ্য কর্মকর্তা, এলজিইডির হিসাবরক্ষক ও উপজেলা পরিষদের এক কম্পিউটার অপারেটর করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন।

মাদারগঞ্জ উপজেলার দুজন পোশাক শ্রমিকের দেহে করোনা শনাক্ত হয়েছে। তারা সম্প্রতি ঢাকা থেকে নিজবাড়িতে এসেছেন।

দেওয়ানগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অধীনে কর্মরত দুজন স্বাস্থ্য সহকারীর দেহে করোনা ভাইরাসের উপস্থিতি পাওয়া গেছে।

সিভিল সার্জনের কার্যালয়ের বিকল্প তথ্য প্রদানকারী কর্মকর্তা জুনিয়র স্বাস্থ্য শিক্ষা অফিসার মো. আনিছুর রহমান জানান, নতুন শনাক্ত ১৮ জন নিয়ে জেলায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা হলো ৩২২ জন। উপজেলা অনুযায়ী আক্রান্তের পরিসংখ্যান হলো: সরিষাবাড়ী ২৯, মেলান্দহ ৫৩, মাদারগঞ্জ ১৮, বকশীগঞ্জ ৩৯, দেওয়ানগঞ্জ ২৬, ইসলামপুর ৬০ ও সদর ৯৭।

এছাড়া জেলায় সর্বশেষ নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে ৫১টি। এ পর্যন্ত মোট ৩৭৫৩টি নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। আক্রান্তদের মধ্যে মারা গেছেন ৪ জন। এদের মধ্যে ইসলামপুর উপজেলার ২ জন নারী, দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার একজন পুরুষ ও মেলান্দহ উপজেলার একজন বৃদ্ধ।

বর্তমানে শেখ হাসিনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসোলেশনে চিকিৎসাধীন রয়েছেন ৩২ জন। এর আগে এই হাসপাতালের আইসোলেশনে চিকিৎসা শেষে ছাড়পত্র নিয়ে ১০২ জন বাড়ি ফিরে গেছেন। এছাড়া হোম আইসোলেশনে চিকিৎসাধীন রয়েছেন ১৪৭ জন। হোম আইসোলেশনে চিকিৎসা শেষে ৩১ জন ছাড়পত্র পেয়েছেন। জেলায় মোট হোম কোয়ারান্টাইনের সংখ্যা ১৫২০ জন। এদের মধ্যে মোট ছাড়পত্র পেয়েছেন ১৩১৩জন। বর্তমানে ২০৭ জন হোম কোয়ারান্টাইনে রয়েছেন।

(আরআর/এসপি/জুন ০৫, ২০২০)