আব্দুল মালিক


সুশান্ত দাশ গুপ্ত একজন প্রতিবাদী মুজিব সৈনিক। তাঁর পরিচয় যতটুকু জেনেছি, তিনি যুক্তরাজ্যে আওয়ামী রাজনীতির সাথে ওতৎপ্রোতোভাবে জড়িত ছিলেন। রাজনীতির পাশাপাশি বঙ্গবন্ধু ও জননেত্রী শেখ হাসিনা’র রাজনীতির পক্ষে শক্তিশালী কলম সৈনিক, লন্ডন মহানগর আওয়ামী লীগের একজন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক ছিলেন। দেশে রাজনীতির পাশাপাশি তিনি একটি পত্রিকার সাথে জড়িত এবং অন্যায়ের প্রতিবাদী কলম সৈনিক।

আবু জাহির এমপি জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও ছাত্রনেতাও ছিলেন। দলের জন্য তাঁর অবদানও অনেক বেশি, ছোট করে দেখার অবকাশ নেই। যুক্তরাজ্যে তাঁর সাথে আমার দেখাও হয়েছে। আজকাল লোকমুখে এবং বিভিন্ন মাধ্যমে আমরা যা অবগত হচ্ছি তা মোটেই সুখকর নয়।

সাংবাদিক সুশান্তের বিরুদ্ধে হবিগঞ্জ প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক তথ্যপ্রযুক্তি আইনে মামলা করেছেন। কিন্তু প্রেসক্লাব কার স্বার্থে সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত করে। সাধারণ সম্পাদক মানেইতো নেতা । স্বাভাবিকভাবে নেতার দায়িত্ব হলো, ক্লাবের সদস্যদের ভাল-মন্দ দুটোই দেখা। কারো পক্ষে প্রলোব্দ হয়ে মামলা করা নয়।

জামিন দেওয়া না দেওয়া সেটা আদালতের এখতিয়ার বা আইনী বিষয়। আদালত বিচার বিশ্লেষণ করেই একজন আসামির জামিন দেবেন এবং জামিন নামঞ্জর করবেন। সে দিকে যেতে চাই না।

বর্তমান আওয়ামী লীগের এমপি আবু জাহিরকে প্রশ্ন করতে চাই। সাংবাদিক সুশান্তকে আপনরা এত ভয় কেন ? তাহলে কি ডাল ম্যা কুচ কালা হে !

সুশান্তের অপরাধ থাকতে পারে, কিন্তু অপরাধ কি ? বর্তমান এমপি আবু জাহিরের বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও ক্ষমতার অপব্যবহার নিয়ে লেখা। যদি অসত্য বা কন্ট্রভারসিয়াল হয়, তবে মানহানির মামলা হতে পারেন এবং সুশান্তও আইনি প্রক্রিয়ায় এর মোকাবেলা করবেন। আদালতের মাধ্যমে অভিযোগ প্রমাণিত হলে সুশান্ত সাজাপ্রাপ্ত হবেন এটাই স্বাভাবিক এবং আইন তাঁর নিজস্ব গতিতে চলবে। সুশান্তের বিরুদ্ধে আইসিটি আইনে মামলা হয়েছে। সুশান্তকে তাৎক্ষণিকভাবে গ্রেফতার করে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে।

মামলার ম্যারিট কিংবা ডিম্যারিট এটা নিয়ে লিখতে চাই না। শুধু সুশান্তের উপর মামলা কেন? এর আগে আমরা দেখেছি, ডজন খানেক জাতীয় পত্রিকা বিভিন্ন শিরোনামে এমপি আবু জাহিরের বিরুদ্ধে সংবাদ করেছে। কই ওইসব সংবাদপত্রের সম্পাদকের বা তার প্রতিবেদকের বিরুদ্ধে তো মামলা করেননি হবিগঞ্জ প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক। সুশান্তের বিরুদ্ধে মামলা করাটাই কি হবিগঞ্জ প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদকের অপরিহার্য হয়ে উঠেছিল। কিন্তু কেন?

এতগুলো জাতীয় পত্রিকা এমপি আবু জাহিরের বিরুদ্ধে বিগত কয়েক বছর ধরে লিখে আসছে, অথচ কোন মামলা করতে শুনিনি। তখন কোথায় ছিলেন হবিগঞ্জ প্রেসক্লাবের ওই সাধারণ সম্পাদক? সাংবাদিকতা একটি পবিত্র দায়িত্ব। কিন্তু হবিগঞ্জ প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক এই পবিত্র দায়িত্বকে প্রশ্নবিদ্ধ করছেন। যে মিডিয়ার উপর নির্ভর করে সত্য, ন্যায় এবং সমাজের উজ্জল ভবিষত। সেই মিডিয়া যদি প্রশ্নবিদ্ধ হয় তাহলে দেশ ও জাতির সুফল প্রতিষ্ঠিত হবে কি করে ?

পরিশেষে বলতে চাই, সুশান্তরা বেশিদিন জেলে থাকে না। একদিন বেরিয়ে আসবে বিজয়ীর বেশে-ফিরে আসবে আবারও তাঁর যুদ্ধের টেবিলে, যুদ্ধ হবে অন্যায়, অত্যাচারের বিরুদ্ধে, বঙ্গবন্ধুর আদর্শে, শোষণহীন সমাজ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে। জনসমক্ষে উন্মোচিত হবে সমাজের সকল অনিয়ম, অনৈতিকতা আর দুষ্কর্মের গডফাদারদের বিদঘুটে মুখোস।

লেখক : সাংবাদিক, কলাম লেখক।