রঘুনাথ খাঁ, সাতক্ষীরা : বাংলাদেশ ওয়ার্কার্স পার্টির নেতা মকবুল হোসেনের সাতক্ষীরা শহরের রাধানগরের বাসায় হামলা চালিয়ে ভাঙচুর, লুটপাট ও উচ্ছেদের চেষ্টার প্রতিবাদ এবং দোষীদের শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন কর্মসুচি পালিত হয়েছে। সোমবার সকাল ১০টায় সাতক্ষীরা শহরের কেষ্ট ময়রার ব্রীজের পাশে জাতীয় শ্রমিক ফেডারেশনের উদ্যোগে এ কর্মসুচি পালিত হয়।

মানববন্ধন চলাকালে বক্তব্য দেন বাংলাদেশ ওয়ার্কার্স পার্টির সাতক্ষীরা জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. ফাহিমুল হক কিসলু, জেলা জাসদের সাধারণ সম্পাদক প্রভাষক ইদ্রিস আলী, সদর উপজেলা ওয়ার্কার্স পার্টিও সাধারণ সম্পাদক আলী হোসেন, ভূমিহীন নেতা আলী নূর খান বাবুল, ছাত্রলীগ নেতা কামরুল ইসলাম, শ্রমিক ফেডারেশনের সদস্য রবিউল ইসলাম প্রমুখ।

বক্তারা বলেন, ১৯৮৪ সালে আশাশুনির কল্যাণপুর গ্রামের দাউদ সরদার সাতক্ষীরা শহরের কামাননগরের মিরাজ আলীর কাছ থেকে রাধানগরের একটি দোকান ঘর ভাড়া নিয়ে সেখানে ব্যবসা শুরু করেন। ১৯৯১ সালে তিনি ওই দোকানের পিছনে বসবাস করার জন্য আড়াই শতক জায়গা কেনার জন্য মিরাজ আলীর কাছে ৭৫ হাজার টাকা দিয়ে চুক্তিপত্র করেন। নীচু জমিতে মাটি ভরাট করার পর সেখানে ঘরবাড়ি বানিয়ে বসবাস শুরু করেন দাউদ সরদার। মিরাজ আলী জমি রেজিষ্টি করে দেওয়ার আগেই মারা যান। ওই বাড়িতেই বেড়ে ওঠেন দাউদ সরদারের ছেলে মকবুল হোসেন।

বারবার বলার পরও মিরাজ আলীর ছেলেরা দাউদ সরদারকে জমি লিখে দেননি। ২০১৮ সালে দাউদ সরদার মারা গেলে ওই জমি জবরদখল করার চেষ্টা চালান মিরাজ আলীর ছেলে জামায়াত সমর্থক সামাদ ও তার জামাতা সাইফুল ইসলাম। একপর্যায়ে তারা সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে মকবুলের বসতবাড়ি ভাঙচুর করে লুটপাট শেষে তাদেরকে উচ্ছেদের চেষ্টা চালায়।

গত বৃহষ্পতিবার সালাম, সাইফুল ও তাদওে সন্ত্রাসী বাহিনী আবারো হামলা চালালে প্রতিহত করার চেষ্টা করে মকবুল। বিষয়টি নিয়ে থানায় অভিযোগ করার পর সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা আবুল খায়ের সরদারকে উভয়পক্ষকে নিয়ে বসাবসির মাধ্যমে মীমাংসার উদ্যোগ নেন সাতক্ষীরা সদও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ আসাদুজ্জামান।

রবিবার বিকেলে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোঃ নজরুল ইসলামের বাড়িতে বসাবসির জন্য দিন ধার্য করেন আবুল খায়ের সরদার। উভয়পক্ষ তাতে রাজি হলেও শুক্রবার সকালে সালাম ও সাইফুলের নেতৃত্বে আবারো সন্ত্রাসীরা ওই বাড়িতে হামলা চালিয়ে ঘরের চাল ও দেয়ালের অংশ বিশেষ ভেঙে দেয়। প্রতিরোধের মুখে সন্ত্রাসীরা পিছু হটে। এ ঘটনায় শনিবার সালাম ও সাইফুলের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ করেন মকবুল হোসেন। দুর্ভাগ্য হলেও সত্যি অভিযোগের তিনদিন পেরিয়ে গেলেও পুলিশ হামলাকারিদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেয়নি। ফলে সন্ত্রাসীরা মকবুল ও তার পরিবারকে আবারো উচ্ছেদের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

বক্তারা আরো বলেন, বিষয়টি নিয়ে বাংলাদেশ ওয়ার্কার্স পার্টির সাতক্ষীরা জেলা শাখার সভাপতি সাংসদ অ্যাড. মুস্তাফা লুৎফুল্লাহ, সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. ফাহিমুল হক কিসলু ও সদও শাখার সভাপতি স্বপন কুমার শীল থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বললেও হামলা ও ভাঙচুর অব্যহত আছে। এ হামলা মেনে নেওয়া হবে না। অবিলম্বে হামলাকারিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করে মকবুলের পরিবারকে পূর্বের জায়গায় বসবাসের ব্যবস্থা করে দিতে হবে।

(আরকে/এসপি/জুন ০৮, ২০২০)