আঞ্চলিক প্রতিনিধি, বরিশাল : আগৈলঝাড়ায় পিতৃ-মাতৃহীন অনাথ কিশোরীকে অপহরণের পর নাজিরপুরে তিন মাস আটকে রেখে ধর্ষণের অভিযোগে সহায়তাকারী ফুফুকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ধর্ষিতাকে ডাক্তারী পরীক্ষার জন্য হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে।

থানা অফিসার ইন চার্জ মো. আফজাল হোসেন জানান, উপজেলার রত্নপুর গ্রামের ধর্ষিতা কিশোরী (১৫) তার মা মারা গেলে ছোট বোন নিয়ে দাদার পরিবারে আশ্রিত ছিল। বাবা ঢাকায় কাজ করতেন। দাদা-দাদী মারা যাবার পরে তার বাবা দ্বিতীয় বিয়ে করে ঢাকায় বসবাস শুরু করেন।

বাবা ঢাকায় থাকার কারনে অনাথ ওই কিশোরী ও তার ছোট বোনকে বাড়ির উপরের ফুফু সম্পর্কের সাহেদ শেখ এর স্ত্রী আকলিমা বেগম (৫৫)কে দেখা-শোনার জন্য বলেন।

বাড়িতে আকলিমার ভাসুর সহিদ শেখ (৪০) ওরফে সুমনসহ পরিবারের অন্যান্য স্বজনের যাতায়াতের সুবাদে আসামীদের সাথে ওই কিশোরীর পরিচয় ছিলো। সেই পরিচয়ের সুত্র ধরে গত ১৬ মার্চ সন্ধ্যায় সহিদ শেখ মোবাইল ফোনে কিশোরীকে বাড়ির পাশে রাস্তার উপর তার সাথে দেখা করতে বলে।

কিশোরী আত্মীয়তার কারলে সহিদ শেখ এর সাথে রাস্তায় দেখা করতে গেলে সেখানে পূর্বে পরিকল্পিতভাবে অবস্থান করা পিরোজপুর জেলার নাজিরপুর থানার মাটিভাঙ্গা গ্রামের সহিদ শেখ ওরফে সুমন, একই থানার মাহমুদকান্দি গ্রামের সরোয়ার ফরাজীর ছেলে রেজাউল ফরাজী, আকলিমা বেগমসহ অজ্ঞাতনামা ২/৩জন মিলে জোর করে কিশোরীকে অপহরণ করে মোটরসাইকেলে করে পিরোজপুর নিয়ে সহিদ শেখ ওরফে সুমন এর বাড়িতে আটকে রাখে।

১৭ মার্চ রাতে আটক কিশোরীকে সহিদ শেখ ওরফে সুমন জোর পূর্বক ধর্ষণ করে। এর পরে কিশোরীকে প্রায় তিন মাস তার বাড়িতে আটকে রেখে সুমন অব্যাহতভাবে কিশোরীকে ধর্ষণ করে আসছিলো।

গত ১০ জুন কৌশলে ধর্ষিতা কিশোরী সেখান থেকে পালিয়ে বাড়ি চলে এসে বৃহস্পতিবার ঘটনার বর্ননা দিয়ে ধর্ষকসহ তাদের সহযোগী চার জনের বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করে। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই তৈয়বুর রহমান জানান, অভিযোগ পেয়ে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় অভিযান চালিয়ে ধর্ষণে সহায়তাকারী ধর্ষিতার চাচি আকলিমা বেগমকে আটক করেন তিনি।

অপহরণ ও ধর্ষণ মামলা নং-১২(১৯/৬/২০) এর সহায়তাকারী হিসেবে আকলিমাকে গ্রেফতার দেখিয়ে শুক্রবার দুপুরে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। এদিকে ধর্ষিতাকে ডাক্তারী পরীক্ষার জন্য বরিশাল শেবাচিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে বলেও জানান মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই তৈয়বুর রহমান।

(টিবি/এসপি/জুন ১৯, ২০২০)