নাটোর প্রতিনিধি : নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলার ইকরী গ্রামের কৃষক মোবারক হোসেন হত্যার কারণ উম্মোচিত হয়েছে। আরিফা খাতুন নামক একজন যৌনকর্মী ও তার তিন সঙ্গী মিলে মোবারক হোসেনকে শ্বসরোধে হত্যা করেছে। 

শুক্রবার দুপুরে নাটোরের পুলিশ সুপার লিটন কুমার সাহা এক প্রেসব্রিফিং এ তথ্য জানান।

পুলিশ হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত ইকরী গ্রামের সীমান্তবর্তী গুরুদাসপুর উপজেলার সোনাবাজু গ্রামের কাঁচু খাঁর স্ত্রী আরিফা খাতুন (৩০), একই গ্রামের ইমরুল প্রামাণিকের ছেলে রশিদ প্রামাণিক (৩৮), জিয়াউর রহমানের ছেলে জিহাদ আলী(৩২) ও ইকরী গ্রামের আব্দুল বারীর ছেলে আসাদুল ইসলাম (৩২)কে গ্রেফতার করে আদালতে জবানবন্দি নিয়েছে।

পুলিশি তদন্তে খুনের কারণ হিসেবে জানা যায়, গ্রেফতারকৃত আসামী রশিদ, জিহাদ, আসাদুল ও নিহত মোবারকের সাথে টাকার বিনিময়ে অবৈধ শারীরিক সম্পর্ক ছিলো গৃহবধূ আরিফা খাতুনের। এদের মধ্যে আর্থিক অবস্থা খারাপ হওয়ায় মোবারক ঠিকমতো টাকা পরিশোধ করতে পারতেন না। এ নিয়ে নিজেদের মধ্যে কথা কাটাকাটির জেরে আরিফার সাথে অন্য তিনজনের অবৈধ সম্পর্কের কথা মোবারক মানুষের মাঝে প্রচার করে। এছাড়া আসামী আসাদুলের স্ত্রীর সাথে নিহত মোবারকের অবৈধ সম্পর্ক ছিলো। এতে তারা ক্ষুদ্ধ হন এবং মোবারককে একটি উচিত শিক্ষা দেয়ার জন্য পরিকল্পনা শুরু করেন।

পরে গত ১৫ জুন বিকেলে ইকরী গ্রামের বেড়ী বিলে একটি পাট ক্ষেতের পাশে গরু চরাচ্ছিলেন মোবারক। এসময় পূর্ব পরিকল্পনা মতো আরিফা সেখানে উপস্থিত হয়ে মোবারককে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপনের প্রলোভন দেখিয়ে পাটক্ষেতে নিয়ে যান। পাটক্ষেতে ঢোকার সাথে সাথে মোবারকের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে রশিদ, জিহাদ ও আসাদুল। কোনো কিছু বুঝে ওঠার আগেই মোবারকের হাত ও পা বেঁধে ফেলে তারা। এরপর আরিফা মোবারককে ঘুরিয়ে মাটির সাথে মুখ চেপে ধরে শ্বাসরোধ করে মোবারকের মৃত্যু নিশ্চিত করে।

প্রেস ব্রিফিং এ পুলিশ সুপার লিটন কুমার সাহা আরও জানান, হত্যাকান্ড ঘটানোর পর আসামীরা স্বাভাবিক কাজকর্ম করতে থাকে। তারা হত্যাকান্ড ঘটাতে গিয়ে কোনোপ্রকার ফোনকল বা প্রযুক্তি ব্যবহার করেনি।

চাঞ্চল্যকর এ ঘটনা অনুসন্ধানে একযোগে কাজ করেছেন সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবুল হাসনাত, বড়াইগ্রাম থানার অফিসার ইনচার্জ দিলিপ কুমার দাস, গুরুদাসপুর থানার অফিসার ইনচার্জ মোজাহারুল ইসলাম, গোয়েন্দা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ আনারুল ইসলাম প্রমুখ।

(এডিকে/এসপি/জুন ১৯, ২০২০)