আবীর আহাদ


করোনা মহামারির চলমান দু:সময়ে দেশের বীর মুক্তিযোদ্ধাদের বিশেষ চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করার জন্য প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা চেয়েছে একাত্তরের মুক্তিযোদ্ধা সংসদ । অদ্য জাতীয় প্রচার মাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ দাবি জানানো হয়েছে ।

একাত্তরের মুক্তিযোদ্ধা সংসদের চেয়ারম্যান লেখক গবেষক আবীর আহাদ প্রেরিত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘চলমান জীবনবিনাশী করোনা মহামারিকালে সারাবিশ্বের সঙ্গে বাংলাদেশও আক্রান্ত হওয়ায় বিশেষ করে বয়োজ্যেষ্ঠ মুক্তিযোদ্ধারা বিপন্ন অবস্থায় দিনাতিপাত করছেন ।

ইতিমধ্যে বহু মুক্তিযোদ্ধা করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে বিনা চিকিৎসায় করুণ অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেছেন, বহুসংখ্যক মুক্তিযোদ্ধা করোনার উপসর্গ নিয়ে যন্ত্রণাময় জীবন যাপন করছেন । অতি পরিতাপের বিষয় এই যে, সরকারি ও বেসরকারি কোনো হাসপাতালে গিয়ে মুক্তিযোদ্ধা পরিচয় দিয়ে অনেকে দীর্ঘক্ষণ লাইনে দঁড়িয়েও ভাইরাস সনাক্তের লক্ষ্যে পরীক্ষা করাতে পারছেন না । জাতীয় গণমাধ্যমে এরই মধ্যে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান বলে বিবেচিত বেশকিছু চিকিৎসাবঞ্চিত মুক্তিযোদ্ধার ক্রন্দনরত হৃদয়বিদারক দৃশ্য দেখা গেছে, যা খুই কষ্টদায়ক ও দুর্ভাগ্যজনক ।’

বিবৃতিতে আবীর আহাদ বলেন, ‘মহান মুক্তিযুদ্ধের বীর সেনানী মুক্তিযোদ্ধারা সবাই প্রায় সত্তর বা তারও বেশি বয়সের হওয়ায় প্রাণঘাতি ভাইরাসে সহজেই অধিক আক্রান্ত হওয়ার মতো মানুষ । উপরন্তু করোনার ব্যয়বহুল চিকিৎসা নির্বাহ করা তাদের পক্ষে একেবারেই অসম্ভব । সম্প্রতি করোনা চিকিৎসা থেকে ফিরে-আসা কিছু লোকের বক্তব্য থেকে জানা যায় যে, করোনা প্রতিরোধকর্মে হাসপাতালে প্রতিদিনই পঞ্চাশ হাজার টাকা খরচ করতে হচ্ছে ! মুক্তিযোদ্ধারা অধিকাংশই চরমতম মানবেতর জীবনযাপন করছে ।

মাসিক বারো হাজার টাকা ভাতাই তাদের একমাত্র সম্বল । এই টাকা দিয়ে সংসার চালানো যেখানে অসম্ভব সেখানে এতো বড়ো ব্যয়বহুল চিকিৎসা কীভাবে তারা নির্বাহ করবে ? এ অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমরা এই অনুরোধ রাখতে চাই যে, করোনা মহামারীকালে জাতীয় বীরদের জন্যে যেনো সরকারিসহ দেশের প্রতিটি হাসপাতালে যথাযোগ্য গুরুত্বের সঙ্গে বিনামূল্যে চিকিৎসার লাভের নির্দেশ প্রদান করা হয় এবং এই নির্দেশ বাস্তবায়নের ব্যবস্থা যেনো গৃহীত হয় । জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু-কন্যা প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার সরকার জাতীয় বীরদের জন্যে বিভিন্ন রাষ্ট্রীয় ভাতা ও অন্যান্য সুবিধাদি ব্যবস্থা করে মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি সম্মান দেখানো হয়েছে ।

এ-কারণে অসহায় ও বিপন্ন মুক্তিযোদ্ধাদের জন্যে এই মহামারিকালে চিকিৎসা ব্যবস্থার পাশাপাশি বিশেষ ভাতার ব্যবস্থা করা হলে তা আরেকটি উল্লেখযোগ্য দৃষ্টান্ত স্থাপিত হবে বলেও একাত্তরের মুক্তিযোদ্ধা সংসদ মনে করে এবং মাননীয় প্রধানমন্ত্রী অতি সত্বর এ-ব্যবস্থাটি গ্রহণ করবেন বলেও তারা দৃঢ় আস্থা পোষণ করে ।'

লেখক :চেয়ারম্যান, একাত্তরের মুক্তিযোদ্ধা সংসদ।