স্টাফ রিপোর্টার : ২০২০-২১ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট মানুষ বাঁচানো নয় বলে দাবি বিএনপির এমপিদের। ঘোষিত বাজেটে জনগণকে চরম মূল্য দিতে হবে বলেও আশঙ্কা তাদের।

বৃহস্পতিবার (২৫ জুন) বিকেলে বিএনপিদলীয় এমপিদের ‘বাজেট পর্যালোচনা ও চলমান করোনা পরিস্থিতি’ বিষয়ক ভার্চুয়াল আলোচনা সভায় এসব কথা বলা হয়।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশনায় অনুষ্ঠিত সভাটি সঞ্চালনা করেন বগুড়া- ৬ আসন থেকে নির্বাচিত এমপি গোলাম মোহাম্মদ সিরাজ।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ- ২ আসনের সংসদ সদস্য মো. আমিনুল ইসলাম বলেন, আমরা যদি করোনার সময়টা ভালোভাবে অতিক্রান্ত করতে চাই এবং ভবিষ্যতে অর্থনৈতিক অবস্থা ভালো রাখতে চাই, এটার ড্রাইভিং পজিশনে বসে সরকারকেই অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে।

তিনি বলেন, আর্থিক অনুদানের জন্য সরকার যে লোনটা দিয়েছে এটা নিয়ে সারাদেশে খুব বাজে কথা হচ্ছে। সবাই বলছে, এই টাকা কোথায়? কীভাবে দেয়া হচ্ছে? আমি বলি কী, এসব না বলে সবকিছুর জন্য একটা মনিটরিং সেল গঠন করেন। কিন্তু সেটা করা হচ্ছে না। আমি যতটুকু জানি, আমাদের সরকারের কাছে ৩৫ মিলিয়ন ডলার রিজার্ভ রয়েছে। এখন আমি বলব, এই মুহূর্তে ব্যাংক থেকে লোন না নিয়ে রিজার্ভ থেকে ৫ বা ১০ মিলিয়ন ডলার ব্যাংকে দিয়ে দেন। ব্যাংকের ইকুইপমেন্ট যদি ঠিক থাকে তাহলে আবার আমাদের অর্থনীতি গড়ে উঠবে।

এমপি আমিনুল বলেন, এবারের যে বাজেট ঘোষণা করা হয়েছে, সেটা হওয়া উচিত ছিল করোনাভিত্তিক অথবা মানুষ বাঁচাওভিত্তিক। আমাদের যে বাজেট ঘোষণা হয়েছে, এটা দিয়ে আমরা কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে যেতে পারব না।

বগুড়া- ৪ আসন থেকে নির্বাচিত এমপি মোশারফ হোসেন বলেন, এবার যে বাজেট ঘোষণা করা হয়েছে, এটার আকার এতটাই বড় যে এর বাস্তবায়ন কীভাবে হবে? এই টাকা কোথা থেকে আসবে? করোনাকালীন সময়ের বাস্তব চিত্র অর্থমন্ত্রী বা অর্থ মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্টরা মনে হয় জানেন না।

তিনি বলেন, উন্নত বিশ্বে আমরা যেটা দেখেছি, মূল বাজেট পরিচালনা করার জন্য ছয় মাসের একটা প্রাক-বাজেট করা হয়। আমিও মনে করেছিলাম, এই করোনা মহামারি মোকাবিলার জন্য ছয় মাসের একটা বাজেট দেয়া হবে। কিন্তু করা হয়েছে এর উল্টোটা। এই বাজেট উচ্চাভিলাসী। এত বড় বাজেটের অর্থের উৎসটা কোথায়, সেটা কিন্তু অর্থমন্ত্রী উল্লেখ করেননি তার বাজেট বক্তৃতায়।

মোশারফ বলেন, বাজেটের উদ্দেশ্য যদি জনগণের উন্নয়ন হয়ে থাকে তাহলে এই বাজেটে আরও অনেক কিছু যোগ করার প্রয়োজন ছিল।

ঠাকুরগাঁও- ৩ আসনের মো. জাহিদুর রহমান জাহিদ বলেন, করোনার শুরু থেকেই সরকার কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। মূলত তাদের এই ব্যর্থতার কারণেই দেশের এই হাল। সরকারের ভুল পদক্ষেপের কারণে দেশের মানুষের জীবন আজ হুমকির মুখে।

তিনি বলেন, করোনার এই মহামারিতে সরকার যে বাজেট ঘোষণা করেছে, আমি মনে করি এই বাজেট জনগণের আশা-আকাঙ্খার কোনোটাই পূরণ করতে পারেনি। উন্নয়ন বাদ দিয়ে মানুষের জীবনকে রক্ষা করাই হচ্ছে এখন বড় কথা।

জাহিদ বলেন, সরকারের উচিত হবে এখন মানুষকে বাঁচানো। এটা-ই হওয়া উচিত। কিন্তু মানুষ বাঁচানোর লক্ষ্যে কোনো বাজেট হয়নি। যেকোনো সরকার ক্ষমতায় থাকলে উন্নয় তো হবেই। কিন্তু দেশের জনগণের প্রতি না তাকিয়ে, এই মুহূর্তে জনগণের যা প্রয়োজন সেদিকে না তাকিয়ে আজ যদি উন্নয়নের দিকে সরকার চলে যায় তাহলে সেটার মাশুল আমাদের দেশের জনগণকে চরমভাবে দিতে হবে।

ভার্চুয়াল সভায় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর যুক্ত থাকলেও তিনি কোনো বক্তব্য দেননি।

সভায় সংরক্ষিত এমপি রুমিন ফারহানা, চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩ আসনের এমপি হারুনুর রশীদ হারুন বক্তব্য দেন।

(ওএস/এসপি/জুন ২৫, ২০২০)