ঈশ্বরগঞ্জ (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি : পরিবেশ বান্ধব, মাটির উর্বরতা শক্তি বৃদ্ধি ও ফসল উৎপাদনে অবদান রাখায় ঈশ্বরগঞ্জে দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে ভার্মি কম্পোস্ট বা কেঁচো সার । 

জমিতে অতি মাত্রায় বালাই নাশক, আগাছা নাশক, কৃত্রিম হরমোন ও রাসায়সিক সার ব্যবহার করায় দিন দিন মাটির উর্বরতা শক্তি নষ্ট হয়ে জৈব পদার্থের পরিমাণ কমে যাচ্ছে। কেঁচো সার একটি প্রাকৃতিক জৈব সার। বালাই নাশক ও রাসায়নিক সার ব্যবহারে বিনষ্ট মাটির উর্বরতা শক্তি ফিরিয়ে আনতে সক্ষম। মাটির উর্বরতা শক্তি ফিরিয়ে আনতে ঈশ্বরগঞ্জের ইতোমধ্যে ছয় জন কৃষক কৃষি বিভাগের সাথে পরামর্শ করে ভার্মি কম্পোস্ট সার উৎপাদন শুরু করেছেন। তারা উৎপাদিত সার নিজের জমিতে ব্যবহার করে ধান পাট ও শাক সবজির প্রচুর ফলন পেয়েছেন।

উপজেলার পাইকুড়া গ্রামে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় কৃষক মোজাম্মেল হক বাড়ির আঙ্গিনায় ছায়াযুক্ত স্থানে ১০টি রিং স্থাপন করে পুরনো গোবর আর রেড বেঙ্গল কেঁচো দিয়ে রিং গুলো ঢেকে রেখেছেন। প্রতিটি রিংএ দুই হাজার থেকে দুই হাজার ৫’শ টি কেঁচো রয়েছে। কেঁচো গুলো রিংএর গোবর খেয়ে মল ত্যাগ করে। এই মল চা পাতার মতো হালকা ও ঝুর ঝুর হয়ে রিং এর উপর দিকে উঠতে থাকে। প্রথম এক মাস পর রিং গুলো থেকে ৫০ থেকে ৬০কেজি ভার্মি কম্পোস্ট সার তৈরি হয়। পরে প্রতি এক সপ্তাহ পর পর সার উত্তোলন করা যায়।

কৃষক মোজোম্মেল হক জানান, তার উৎপাদিত কম্পোস্ট সার ১০ টাকা কেজি দরে নিজ এলাকার চাহিদা মিটিয়ে উপজেলার বিভিন্ন স্থানে বিক্রি করে আর্থিক ভাবে লাভবান হচ্ছেন।যার ফলে তিনি বাণিজ্যিক ভাবে এ কেঁচো সার উৎপাদন শুরু করেছেন। কৃষক মোজাম্মেলের ফসলের আশানুরুপ ফলন দেখে গ্রামের মানুষ ভার্মি কম্পোস্ট বা কেঁচো সার ব্যবহারে আকৃষ্ট হচ্ছেন।

ওই ব্লকের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা আলী আখছার খান জানান, ভার্মি কম্পোস্ট সার ব্যবহার করলে জমিতে রাসায়নিক সারের ব্যবহার কমে আসে মাটিতে জৈব উপাদান বৃদ্ধি পায়, পানির ধারণ ক্ষমতা বাড়ায়, বাটির বুনট উন্নত করে, শিকর বিস্তার সহজ করে এবং উদ্ভিদের প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদান যোগায়। এই সার রাসায়নিক সারের মূল্যের অর্ধেক বা তিন ভাগের এক ভাগ।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সাধন কুমার গুহ মজুমদার জানান, মুজিব বর্ষ উপলক্ষ্যে ঈশ্বরগঞ্জে ১২জন ভার্মি কম্পোস্ট সার তৈরির উদ্যোক্তা তৈরি করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। ইতোমধ্যে ৬জন উদ্যোক্তা তৈরি করা হয়েছে।

(এন/এসপি/জুন ২৮, ২০২০)