আন্তর্জাতিক ডেস্ক : কাশ্মীরে কি তাহলে যুদ্ধ বাঁধবেই? চীন-পাকিস্তান দুই দেশের সঙ্গেই দ্বন্দ্ব, কিন্তু কার সঙ্গে আগে যুদ্ধে জড়াবে ভারত- তা এখনও পরিষ্কার নয়। তবে, ইতোমধ্যেই এ অঞ্চলে শুরু হয়ে গেছে যুদ্ধপ্রস্তুতি।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, জম্মু-কাশ্মীর প্রশাসনের পক্ষ থেকে স্থানীয় এলপিজি গ্যাস পরিবেশকদের আগামী দু’মাসের জন্যে রান্নার গ্যাসের সিলিন্ডার মজুত রাখার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

প্রশাসন বলছে, ভূমিধসের কারণে এলাকার সড়ক যোগাযোগ ব্যাহত হতে পারে। এজন্যই গ্যাস মজুত করতে বলা হচ্ছে।

তবে স্থানীয়রা বলছেন, সরকার যে কারণই দেখাক না কেন, তাদের পূর্বঅভিজ্ঞতা বলছে, কাশ্মীরে বড় কিছুই ঘটতে চলেছে।

শুধু গ্যস মজুতই নয়, গান্ডারওয়াল এলাকার পুলিশ সুপারের দপ্তর থেকেও জারি হয়েছে একটি নির্দেশিকা। এতে কার্গিল সংলগ্ন এলাকার ১৬টি স্কুল খালি করে দিতে বলা হয়েছে। সেগুলো এখন থেকে নিরাপত্তারক্ষীদের জন্য ব্যবহার করা হবে।

কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা রক্ষার ৩৭০ ধারা বাতিলের পর থেকেই নতুন করে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক। বারবার যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করে হামলার পাল্টাপাল্টি অভিযোগ রয়েছে দুই পক্ষেরই। সম্প্রতি ভারতে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির জন্য পাকিস্তান সীমান্তে চার শতাধিক জঙ্গি অপেক্ষা করছে বলে দাবি করেছে নয়া দিল্লি। গত সপ্তাহে নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর গোলাবর্ষণে ভারত-পাকিস্তান দুই দেশেরই মানুষজন হতাহতের খবর পাওয়া গেছে।

পাকিস্তানের সঙ্গে এ দ্বন্দ্বের মধ্যেই কয়েক সপ্তাহ ধরে চীনের সঙ্গেও চরম বিরোধ চলছে ভারতের। লাদাখের গালওয়ান উপত্যকায় দুই পক্ষের সংঘর্ষে প্রায় হারিয়েছেন ২০ ভারতীয় সেনা, আহত হয়েছেন অন্তত ৭৬ জন। চীনা বাহিনীর কতজন হতাহত হয়েছেন তা নিশ্চিত করেনি দেশটি। এরপর থেকে দুই পক্ষই যুদ্ধের প্রস্তুতি নিচ্ছে সীমান্তে।

ভারতের দাবি, গালওয়ান উপত্যকা ছাড়িয়ে চীনা বাহিনী গোগরার হটস্প্রিং, প্যানগং লেক, দেপসাং উপত্যকায় বাড়তি সেনা মোতায়েন করেছে। গালওয়ানে চীনের নতুন স্থাপনা নির্মাণের চিত্র ধরা পড়েছে উপগ্রহের ছবিতেও। জবাবে সীমান্তে সেনা বাড়াচ্ছে ভারতও। লাদাখের সব ক’টি ঘাঁটি সক্রিয় করা হয়েছে। পাঠানো হয়েছে ট্যাংক, যুদ্ধবিমানসহ ভারী অস্ত্রশস্ত্র। ফলে, ভূ-স্বর্গ কাশ্মীরে এখন বাজছে যুদ্ধের দামামা। শেষপর্যন্ত কি সেখানে সহিংসতা এড়ানো যাবে নাকি বইবে রক্তগঙ্গা- উত্তরের অপেক্ষায় সারাবিশ্ব। ইন্ডিয়া টাইমস।

(ওএস/এসপি/জুন ২৯, ২০২০)