জামালপুর প্রতিনিধি : যমুনার অব্যাহত পানি বৃদ্ধিতে প্লাবিত হচ্ছে নতুন নতুন এলাকা। অপেক্ষাকৃত নিচু অঞ্চল ছাপিয়ে পানি ঢুকে পড়েছে বাড়িঘর, রাস্তাঘাট ও ফসলি জমিতে। সড়কের উঁচুস্থান ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আশ্রয় নিচ্ছে প্লাবিত এলাকার মানুষেরা। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে ৬টি উপজেলার ২৭টি ইউনিয়নের প্রায় দেড়লাখ মানুষ। বন্যাদুর্গত এসব এলাকার মানুষেরা ভুগছে শুকনো খাবার ও বিশুদ্ধ পানির সংকটে।

গত ২৪ ঘন্টায় ৩৬ সেন্টিমিটার বেড়ে যমুনার পানি বাহাদুরাবাদ পয়েন্টে বিপদসীমার ৮৬ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে, সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় এ তথ্য জানিয়েছেন পানি উন্নয়ন বোর্ডের পানি পরিমাপক মো. আব্দুল মান্নান।

পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় প্লাবিত নতুন এলাকার মধ্যে রয়েছে মেলান্দহ উপজেলার মাহমুদপুর, দুরমুঠ, নাংলা, কুলিয়া, ফুলকোচা, ঝাউগড়া এবং মাদারগঞ্জ উপজেলার বালিজুড়ি, জোড়খালি, চর পাকেরদহ ইউনিয়নের বিস্তীর্ণ এলাকা। সব মিলিয়ে জেলার ৬ টি উপজেলা ইসলামপুর, দেওয়ানগঞ্জ, মেলান্দহ, মাদারগঞ্জ, সরিষাবাড়ি ও বকশীগঞ্জের ২৭টি ইউনিয়নে প্রায় দেড়লাখ মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে।

বন্যার পানিতে গত দুদিনে দুই শিশুর মৃত্যু হয়েছে। রোববার বিকেলে বন্যার পানিতে ডুবে মাদারগঞ্জের বালিজুড়ি ইউনিয়নের মির্জাপুর গ্রামে সোহান (৭) মারা গেছে। এছাড়া সোমবার দুপুরে মারা গেছে মেলান্দহের দুরমুঠ ইউনিয়নের রুকনাই গ্রামে সানি (১২)। পানিতে ডুবে এই দুই শিশুর মৃত্যু নিশ্চিত করেছেন বালিজুড়ি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোজাম্মেল হক ও দুরমুঠের চেয়ারম্যান সৈয়দ খালেকুজ্জামান জুবেরী।

জেলা বন্যা ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মো. নায়েব আলী জানান, দুর্গত এলাকার জন্য ৬০ মেট্রিকটন চাল ও নগদ ৫লাখ টাকা বরাদ্ধ দেওয়া হয়েছে।

জামালপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আমিনুল ইসলাম জানান, জেলায় ৫ হাজার ৫৯৩ হেক্টর পাট ও ৬ হাজার ৯০৭ হেক্টর জমির ফসল বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে।

বন্যাদুর্গত এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, পানিবন্দী মানুষেরা দূর এলাকা হতে নৌকাযোগে বিশুদ্ধ পানি আনছে। যতটুকু পানি তারা সংগ্রহ করছেন তা পরিবারের জন্য অপ্রতুল। এছাড়া প্লাবিত এলাকার মানুষেরা রান্নার জ্বালানি সংকটে পড়ে রান্নাবান্না না করতে পেরে অনেকেই উপোস রয়েছেন। দুর্গত মানুষেরা দ্রুত বিশুদ্ধ পানি ও শুকনো খাবারের দাবি জানিয়েছেন।

(আরআর/এসপি/জুন ২৯, ২০২০)