আঞ্চলিক প্রতিনিধি, বরিশাল : কার ভুলের খেসারত দিতে হচ্ছে আগৈলঝাড়ার হত দরিদ্রদের ? মাসের পর মাস কেটে গেলেও অসহায়দের মোবাইল ফোনের একাউন্টে  আজও প্রধান মন্ত্রীর বরাদ্দকৃত ২৫শ টাকা পায়নি তারা। 

করোনা মোকাবেলায় সারাদেশে লকডাউনের কারণে বেকার হয়ে পড়া শ্রমজীবি মানুষের দুঃখ কস্ট লাঘবের জন্য সারাদেশে অসহায়, দুঃস্থদের তালিকা প্রনয়নের নির্দেশ দেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী।

প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা অনুযায়ি বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলার ৫টি ইউনিয়নে কর্মহীন হয়ে পড়া অসহায়, দুঃস্থ ৬হাজার ৭শ ৪০জন দরিদ্র শ্রমজীবি পরিবারের তালিকা প্রনয়ন করে সংশ্লিষ্ঠ ইউনিয়ন পরিষদগুলো।

তালিকা অনুযায়ি রাজিহার ইউনিয়নে ১হাজার ৪শ ৮৪জন, বাকাল ইউনিয়নে ১হাজার ৮শ ২১জন, বাগধা ইউনিয়নে ১হাজার ৪শ ১৫জন, গৈলা ইউনিয়নে ১হাজার ২শ ৮১জন ও রতœপুর ইউনিয়নে ১হাজার ২শ ৮১জন দরিদ্র পরিবারের নাম তালিকাভুক্ত করা হয়। চেয়ারম্যানদের দেয়া ওই তালিকা উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসের মাধ্যমে উপজেলা তথ্য প্রযুক্তি অফিসের সহকারী প্রোগ্রামার আমিনুল ইসলাম প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরের সার্ভারে প্রেরণ করেন।

প্রেরিত তালিকা অনুযায়ি গত ঈদের আগে প্রধানমন্ত্রীর ঘোষিত তহবিল থেকে ঈদ শুভেচ্ছা হিসেবে মেসেজে (ক্ষুদে বার্তা) আসে। ক্ষুদে বার্তা প্রাপ্তরা ঈদের আগেই নগদ, বিকাশ, রকেট সার্ভিসের মাধ্যমে ২৫শ টাকা উত্তোলন করেন। তবে তালিকার ২৫ থেকে ৩০ভাগ লোকের বেশী তাদের ফোনে বার্তা না পাওয়ায় তারা কোন টাকা তুলতে পারেনি।
দীর্ঘ দিনেও দুঃস্থরা টাকা না পাওয়ায় উপজেলা জুড়ে বইছে ব্যাপক আলোচনা ঝড়। অবশ্য সারাদেশে তালিকা প্রনয়ন নিয়ে বিভিন্ন জায়গায় ব্যপক দূর্নীতির অভিযোগও ওঠে।

এ ব্যাপারে ২নং সদর বাকাল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বিপুল দাস জানান, রোজার ঈদের আগে স্বল্প সময়ের মধ্যে তালিকা প্রনয়ন করে উপজেলা প্রশাসনের কাছে জমা দিয়েছেন তারা। কিছু লোকে ঈদের আগেই টাকা পেয়েছে, তবে অধিকাংশ লোকেই এখনো টাকা পায়নি জানিয়ে কি কারনে টাকা পাচ্ছেনা সে ব্যাপারে তিনি কোন সদোত্তর দিতে পারেননি।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসার মোর্শারফ হোসেন জানান, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ি চেয়ারম্যানদের মাধ্যমে তালিকা প্রনয়ন করে উপজেলা তথ্য প্রযুক্তি অফিসের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে প্রেরণ করা হয়েছে। কি কারনে সবাই টাকা পাচ্ছে না তা তিনি বলতে পারেন নি।

উপজেলা তথ্য ও প্রযুক্তি অধিদপ্তরের উপজেলা সহকারী প্রোগ্রামার আমিনুল ইসলাম বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ি মাঠ পর্যায় থেকে তালিকা তৈরী করে ত্রাণ মন্ত্রনালয়ে প্রেরণ করা হয়েছে। ত্রাণ মন্ত্রনালয় থেকে ওই তালিকা প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে প্রেরণ করা হয়। প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর থেকে তালিকা প্রেরণ করা হয় অর্থ মন্ত্রনালয়ে। অর্থ মন্ত্রনালয় সেই তালিকা যাচাই বাছাইয়ের জন্য বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ কোম্পানী (বিটিসিএল) এর কাছে প্রেরণ করে। বিটিসিএল তালিকার ব্যক্তির জাতীয় পরিচয়পত্র ও তার দেয়া মোবাইল নম্বর তার মালিকানার মিল না থাকায় টাকা পাচ্ছেন না তারা।

তবে প্রেরিত তালিকার কত সংখ্যক লোক টাকা পেয়েছেন বা পাননি এ সংক্রান্ত কোন তথ্য তাদের কাছে নেই। তবে শিঘ্রই তারা একটি তালিকা পাবেন, যাতে টাকা প্রাপ্ত ব্যক্তি ও না পাওয়া ব্যাক্তির নাম জানা যাবে। যারা টাকা পান নি পুনরায় জাচাই বাছাই করে তালিকা প্রের করা হলে তারও টাকা পাবেন।

এ ব্যাপারে আগৈলঝাড়া উপজেলা নির্বহী অফিসার রওশন ইসলাম চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, যারা এখনও টাকা পায়নি হয়ত তাদের ভোটার আইডি কার্ড বা মোবাইল নম্বর ভুল হয়েছিল। সেই ভুলগুলো সংশোধন করে পুনরায় পাঠানো হবে। সংশোধিত তালিকা মন্ত্রনালয়ে গেলে তালিকাভুক্ত সবাই টাকা পাবেন।

(টিবি/এসপি/জুন ৩০, ২০২০)