স্টাফ রিপোর্টার : বুড়িগঙ্গায় ডুবে যাওয়া ‘এমএল মর্নিং বার্ড’ লঞ্চের মালিকেরও কোনো খবর পাওয়া যাচ্ছে না। বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) কিংবা নৌ-পুলিশ কারো কাছেই তার খবর নেই। মালিক পক্ষের কেউ নিজ থেকে এখনও যোগাযোগ করেননি, তবে সংশ্লিষ্টরা মালিক পক্ষের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করছেন।

গতকাল সোমবার সকালে ঢাকা-চাঁদপুর রুটের ময়ূর-২ নামের একটি লঞ্চের ধাক্কায় কমপক্ষে ৫০ যাত্রী নিয়ে ঢাকা-মুন্সিগঞ্জ রুটের মর্নিং বার্ড লঞ্চটি সদরঘাটের কাছে শ্যামবাজারের দিকে ডুবে যায়। এ ঘটনায় মঙ্গলবার দুপুর পর্যন্ত ৩৩ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। ময়ূর-২ লঞ্চের মালিক-কর্মীসহ ৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে নৌ-পুলিশ। এখনও কাউকে গ্রেফতার করতে পারা যায়নি, সব আসামী পলাতক রয়েছে।

মঙ্গলবার দুপুরে নৌ-পুলিশের এসপি (ঢাকা অঞ্চল) মো. ফরিদুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, ‘নৌ-পুলিশের ডিআইজি লঞ্চ দুর্ঘটনার বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে নিয়ে বলেছেন যে, ভুক্তভোগীদের খুঁজতে গেলে সময় লাগবে। নৌ-পুলিশই বাদী হয়ে মামলা করবে। তখনই আমরা এই মামলার এজাহারের কাজ শুরু করি। আমরা ইতোমধ্যে ৩৩ জনের লাশ উদ্ধার করেছি, তাদের নাম-ঠিকানা যাচাই করে এজাহারটা লিখতে লিখতে দেরি হয়। গতরাত আড়াইটায় মামলাটা হয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা যাদের আসামী করেছি, তাদের যে ঠিকানা পেয়েছি সেখানে অভিযান চালিয়েছি। তারা পলাতক রয়েছেন। আমরা যেহেতু বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে নিয়েছি, তারা বাংলাদেশের যেখানে থাকুক না কেন আমরা ধরে ফেলব। ৭ জনকে আসামী করা হয়েছে। এক নম্বর আসামীই হলেন ময়ূর-২ লঞ্চের মালিক। লঞ্চটি আমরা আলামত হিসেবে জব্দ করেছি।’

ডুবে যাওয়া মর্নিং বার্ড লঞ্চের মালিককে পেয়েছেন কি-না, জানতে চাইলে এসপি ফরিদুল ইসলাম বলেন, ‘তিনি এখনও আমাদের কাছে আসেননি। আমরা তার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করছি। তবে এই মুহূর্তে আমাদের সর্বোচ্চ গুরুত্ব হচ্ছে আসামীকে গ্রেফতার করা।’

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া নদীর পাশের একটি সিসি ক্যামেরার ভিডিওতে দেখা গেছে, বিশাল আকৃতির ময়ূর-২ ও অপেক্ষাকৃত অনেক ছোট মর্নিং বার্ড পাশাপাশি দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে। খানিকটা এগিয়েই ময়ূর-২ মর্নিং বার্ডের উপর উঠে যায় এবং উল্টে গিয়ে তলিয়ে যায় যাত্রী বোঝাই লঞ্চটি।

সেই ভিডিও দেখে নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, ‘যেভাবে ঘটনা ঘটেছে, আমার মনে হয়েছে এটা পরিকল্পিত। এটা কোনো দুর্ঘটনা নয়, হত্যাকাণ্ড।’

এই দুর্ঘটনায় নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় ৭ সদস্য বিশিষ্ট ও বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) চার সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করেছে।

(ওএস/এসপি/জুন ৩০, ২০২০)