মুন্সীগঞ্জ প্রতিনিধি : মুন্সীগঞ্জের মাওয়ায় এমএল পিনাক-৬ লঞ্চটি ডুবে যাওয়ার জন্য বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) ও লঞ্চঘাট মালিক সমিতিকে দায়ী করেন পিনাক-৬এর মালিক মো. আবু বকর সিদ্দিক কালু।

বুধবার আটক হওয়ার পর র‌্যাব সদর দফতরে সাংবাদিকদের কাছে তিনি এ দাবি করেন।

চট্টগ্রামের আগ্রাবাদ হাউস বিল্ডিং থেকে মঙ্গলবার রাত সোয়া ৩টার দিকে তাকে আটক করে বুধবার দুপুরে র‌্যাবের
সদর দফতরে নিয়ে আসা হয়।

আবু বকর বলেন, ‘ঈদের আগে ১০ দিন এবং পরে ১০ দিন নৌঘাট নিয়ন্ত্রণ করে বিআইডব্লিউটিএ এবং লঞ্চঘাট মালিক
সমিতি। তাই অতিরিক্ত যাত্রী উঠানোর ক্ষেত্রে মালিকের নিষেধ থাকলেও কিছু করার থাকে না। জোর করেই তারা
অতিরিক্ত যাত্রী লঞ্চে উঠিয়ে দেয়। কিছু বলতে গেলেই স্থানীয় নেতারা সারেংদের মারতে আসে। এখানে মালিকের কি
করার আছে?’

ঘটনার পর পালিয়ে বেড়ানো প্রসঙ্গে বকর বলেন, ‘আমি মালিক, ভয় পেয়েছি। মনের দুর্বলতা ছিল বলেই পালিয়ে
বেড়িয়েছি। তবে যখন টেলিভিশনে ঘটনাটি দেখেছি বুকটা তখন ফাইট্টা গেছে, আমি সহ্য করতে পারিনি।’
এদিকে, র‌্যাব সদর দফতরে দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে র‌্যাবের মিডিয়া এন্ড লিগ্যাল উইংয়ের পরিচালক মুফতি মাহমুদ দাবি করেন, লঞ্চটি ফিটনেসবিহীন অবস্থায় অনেক দিন ছিল। লোভের বশবর্তী হয়ে মালিক নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে ফিটনেস সার্টিফিকেট সংগ্রহ করে।

বিআইডব্লিউটিএ-এর জড়িত কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে কিনা জানতে চাইলে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘এ ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদনের সুপারিশে যে নির্দেশনা থাকবে র‌্যাব সেই অনুযায়ী কাজ
করবে।’
লঞ্চডুবির ঘটনায় মামলার অন্য আসামিদের আটক করা হবে কিনা জানতে চাইলে মুফতি মাহমুদ বলেন, ‘অন্য আসামিদের আটকেরও চেষ্টা চলছে।’

এ সময় তিনি বলেন, ‘আবু বকরকে খুব শিগগিরই পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হবে।’
মুন্সীগঞ্জের মাওয়ায় দুই শতাধিক যাত্রী নিয়ে লঞ্চডুবির ঘটনায় এমএল পিনাক-৬ এর মালিক এবি সিদ্দিক কালু, ওই
লঞ্চের সারেং ও সুকানিসহ ছয় জনের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা হয়। বিআইডব্লিউটিএ-এর পক্ষ থেকে দুর্ঘটনার পরদিন
৫ জুন মুন্সিগঞ্জের লৌহজং থানায় মামলাটি করা হয়।’ এতে আসামিদের বিরুদ্ধে বেপরোয়া যান চলাচল, ভাড়ার জন্য অতিরিক্ত যাত্রী বহন ও অবহেলাজনিত মৃত্যুর অভিযোগ আনা হয়েছে।

(ওএস/এটিআর/আগস্ট ১৩, ২০১৪)