স্টাফ রিপোর্টার : সদ্য বিদায় নেয়া ২০১৯-২০ অর্থবছরের মাত্র ৪টি প্রতিষ্ঠান প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) মাধ্যমে পুঁজিবাজারে এসেছে। এক অর্থবছরে এটি সর্বনিম্ন আইপিও আসার রেকর্ড।

বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) আগের চেয়ারম্যান এম খায়রুল হোসেনের নেতৃত্বাধীন কমিশনের বিরুদ্ধে একের পর দুর্বল কোম্পানির আইপিও অনুমোদন দেয়ার অভিযোগ উঠলে গত বছরের এপ্রিলে নতুন আইপিও না দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয় বিএসইসি।

অবশ্য নতুন করে আইপিও দেয়ার উদ্দেশ্যে জুলাই মাসে আইপিওতে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কোটা বাড়িয়ে পাবলিক ইস্যু রুলস ২০১৫-এর সংশোধন আনে বিএসইসি। এরপরও চলতে থাকে আইপিও খরা। এর মধ্যেই দেখা দেয় মহামারি করোনাভাইরাসের প্রকোপ। পরিবর্তন আসে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসিতেও।

আগের কমিশনের চেয়ারম্যান ও দুই কমিশনার চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের মেয়াদ শেষ হলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াতুল ইসলামের নেতৃত্বে বিএসইসির দায়িত্ব নেয় নতুন কমিশন। দায়িত্ব নেয়ার পর এক মাসের বেশি সময় গেলেও নতুন কমিশন এখনও কোনো আইপিও অনুমোদন দেয়নি।

তথ্য পর্যালোচনায় দেখা যায়, বিএসইসি গত ১২ অর্থবছরে ১১৯টি কোম্পানির আইপিও অনুমোদন দিয়েছে। অর্থাৎ বছরে গড়ে আইপিও দিয়েছে ১০টি।

বিএসইসির ওয়েবসাইটে দেয়া আর্কাইভ অনুযায়ী, সবচেয়ে কম আইপিও দেয়া হয়েছে ২০১৮-১৯ অর্থবছরে। নিয়ন্ত্রক সংস্থাটির ওয়েবসাইটে ২০০৮-০৯ অর্থবছর পর্যন্ত আইপিওর তথ্য দেয়া আছে।

বিএসইসির এই তথ্য অনুযায়ী, ২০১৯-২০ অর্থবছরে আইপিও অনুমোদন দেয়া হয়েছে ৪টি। তার আগে ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ১২টি, ২০১৭-১৮ অর্থবছরে ১০টি, ২০১৬-১৭ অর্থবছরে ৫টি, ২০১৫-১৬ অর্থবছরে ৯টি, ২০১৪-১৫ অর্থবছরে ১৫টি এবং ২০১৩-১৪ অর্থবছরে ১৬টি আইপিও অনুমোদন দেয়া হয়।

এছাড়া ১০১২-১৩ অর্থবছরে ১২টি, ২০১১-১২ অর্থবছরে ১০টি, ২০১০-১১ অর্থবছরে ৭টি, ২০০৯-১০ অর্থবছরে ১২টি এবং ২০১৮-০৯ অর্থবছরে ৭টি আইপিও অনুমোদন দেয়া হয়।

একটি মার্চেন্ট ব্যাংকের শীর্ষ কর্মকর্তা বলেন, নিয়ন্ত্রক সংস্থা আইপিও অনুমোদন কমিয়ে দিয়েছে। আবার আইনে প্রত্যেকটি ইস্যু ম্যানেজারকে ২ বছরে অন্তত একটি ফাইল দাখিল করার বাধ্যবাধকতা করে রাখা হয়েছে। ২ বছরে একটি ফাইল দাখিল করতে না পারলে সনদ বাতিল করার বিধান রয়েছে।

তিনি বলেন, ২ বছরে একটি করে ফাইল দাখিল করলেও ৬২টি মার্চেন্ট ব্যাংকের ফাইল জমা পড়বে ৩১টি। কিন্তু কমিশন যদি ৪টি আইপিও অনুমোদন দেয়, তাহলে ওই ৩১টি ফাইল জমা করে লাভ কী?

ডিএসইর এক সদস্য বলেন, শেয়ারবাজারে নতুন নতুন ভালো আইপিও আসার কোনো বিকল্প নেই। বাজারে যত ভালো কোম্পানি আসবে, বাজারের গভীরতা ততো বাড়বে। কিন্তু দুর্বল কোম্পানির আইপিও অনুমোদন দেয়া হলে বাজার ক্ষতিগ্রস্ত হবে। তাই নিয়ন্ত্রক সংস্থার উচিত বাজারে ভালো ভালো কোম্পানির আইপিও বাড়ানোর পদক্ষেপ নেয়া। সেই সঙ্গে আইপিও অনুমোদনে দীর্ঘসূত্রতা কমানো। তালে বাজার আরও গতিশীল হবে।

(ওএস/এসপি/জুলাই ০১, ২০২০)