স্টাফ রিপোর্টার : অবিলম্বে ইস্ট ওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের তিন শিক্ষার্থীর বহিষ্কারাদেশ বাতিলের দাবি জানিয়েছে শিক্ষার্থীরা। অন্যথায় কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিয়েছে শিক্ষার্থীরা।

বুধবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মধুর ক্যান্টিনে এক সংবাদ সম্মেলনে এ হুঁশিয়ারি দেন শিক্ষার্থীরা। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ইস্ট ওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের তড়িৎ প্রকৌশল বিভাগের শেষ সেমিস্টারের ছাত্র আব্দুল্লাহ আল মাহফুজ জাকারিয়া।

লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, অবিলম্বে ইস্ট ওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের তিন ছাত্রের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করতে হবে। বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের অনিয়ম, অব্যাবস্থাপনা দূরীকরণে ছাত্রস্বার্থ সংরক্ষণে সমন্বিত সরকারী নীতিমালা করতে হবে।

বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী অধিকার মঞ্চের ব্যানারে এ সংবাদ সম্মেলন করা হয়।

লিখিত বক্তব্যে জাকারিয়া বলেন, “অবকাঠামোগত সমস্যা সমাধানের দাবিতে আন্দোলন করায় আমিসহ তিন শিক্ষার্থীকে ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটি কর্তৃপক্ষ বহিষ্কার করেছেন । লিফট, এয়ার কন্ডিশন, স্টাডি রুম, ল্যাব, ল্যাবের প্রিন্টার এবং ক্লাশ রুমের প্রোজেক্টর সংস্কার এবং সংযোজনসহ আরো বেশ কিছু মৌলিক এবং প্রয়োজনীয় সংস্কারের দাবিতে প্রায় ২ বছরের অধিক সময় ধরে আন্দোলন করে আসছিলাম।

এ সময়ের মধ্যে কর্তৃপক্ষকে একাধিকবার সমস্যার কথা উল্লেখ করে আবেদন দেয়া সত্ত্বেও কোনো সমাধান মেলেনি।

অবশেষে গত মে মাসের ২১ থেকে ২৬ তারিখে আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকশো শিক্ষার্থী আন্দোলনে নামতে বাধ্য হই। আন্দোলনের নেতৃত্ব দেবার কারণে আমিসহ তিন শিক্ষার্থীকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার করা হয়।

গত মে মাসে বেশ গরম পড়েছিল। ওই সময়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্র(এসি) অকার্যকর হয়ে পড়ে।

বিশ্ববিদ্যালয়টি সেন্ট্রাল এসি সিস্টেমে চলত। যার ফলে বদ্ধ রুমে পর্যাপ্ত আলো এবং বাতাসের অভাবে প্রায় দমবন্ধ অবস্থার সৃষ্টি হয়। গরমে ক্লাশ করা কোনোভাবেই সম্ভবপর ছিলোনা, কারণ এসি অকার্যকর এবং কিছু রুমে ফ্যান থাকলেও শব্দে লেকচার শুনা যায়না যার দরুন ফ্যান বন্ধ করে রাখতে হতো। এতে বেশ কিছু শিক্ষার্থী অসুস্থ ও কয়েকজন অচেতন হয়ে পরে।

এ ছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ে স্টাডি রুম, কমন রুমসহ যেসব ফ্যাসিলিটিজ এর কথা বলে ভর্তি করা হয় তার অনেক কিছুরই অস্তিত্ব নেই বিশ্ববিদ্যালয়ে। স্টাডি রুম নেই বলে অভিযোগ জানিয়েছিল শিক্ষার্থীরা। একইসঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের লিফট নষ্ট হয়ে যায় এবং কয়েকটি লিফট প্রথম থেকেই অকার্যকর থাকায় ৮-৯ তলা সিড়ি বেয়ে উঠতে হতো। এসব বিষয়ে বেশ কয়েকবার বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে জানিয়েও লাভ হয়নি। এসব কারণে একসময়ে আন্দোলনে নামে শিক্ষার্থীরা। আমরা তিনজন আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়ায় গত ২৪ জুলাই ঈদ ছুটির আগে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধের দিন ষড়যন্ত্র করে আমাদের তিনজনকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

অন্য দুইজন হলেন ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগের শেষ সেমিস্টারের ছাত্র কাজি মাহবুবুল হক তমাল এবং ব্যবসায় প্রশাসন এর ৫ম সেমিস্টারের ছাত্র তানভীর আহমেদ সিদ্দিকি।

এরআগে ২০১০ সালের ভ্যাট বিরোধী আন্দোলনের সময় ফারহান হাবীবসহ আরো অনেক শিক্ষার্থীকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার করা হয়।

অথচ বিশ্ববিদ্যালয় তদারকির দায়িত্বে থাকা বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন কর্তৃক প্রণীত Private University Act-1992 মোতাবেক শিক্ষার্থীদের শিক্ষা জীবন নষ্ট হয় এমন কোনো সিদ্ধান্ত কোনো বিশ্ববিদ্যালয় নিতে পারবেনা। প্রতিনিয়তই বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে এর ব্যত্যয় ঘটছে।

জাকারিয়া বলেন, দাবি সম্বলিত স্বারকলিপি ইউজিসি, শিক্ষামন্ত্রণালয় ও ইস্ট ওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে আজ দেওয়া হবে।

(ওএস/এটিআর/আগস্ট ১৩, ২০১৪)