মির্জাগঞ্জ (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি : পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জ উপজেলার চরখালী সমবায় মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. গোলাম মোস্তফা খানের রোষানলের কারনে এক ল্যাব সহকারি শিক্ষক (সিভিল) মো. জহিরুল ইসলাম বাশারের বৈধ সকল কাগজপত্র থাকা সত্বেও এমপিওভুক্ত হতে পারেনি বলে অভিযোগ উঠেছে। প্রধান শিক্ষক অর্থের বিনিময়ে অন্য শিক্ষককে এমপিওভুক্ত করনে শিক্ষক জহিরুলের ১৪ বছরের স্বপ্নভঙ্গ হতে বসেছে।

এ ব্যাপারে সুবিচারের আশায় কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের সচিব বরাবর লিখিত ভাবে আবেদন করেছেন এমপিও বঞ্চিত মো. জহিরুল ইসলাম বাশার। এ অভিযোগের ভিত্তিত্বে ৩০ জুন বোর্ড থেকে জেলা ও উপজেলা শিক্ষা অফিসার এবং প্রধান শিক্ষকসহ ১১ জনকে নোটিস প্রদান করেছেন এবং ৭ জুলাই অনিয়ম ও দুর্নীতি সম্পর্কে তদন্তে কারিগড়ি ও মাদ্রসা শিক্ষা বিভাগের সভা কক্ষে উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে।

অভিযোগে বলা হয়, বিধি মোতাবেক সিভিল কনট্রাকশন ও জেনারেল ইলেকট্রিক্যাল ওয়ার্কস ট্রেডে ট্রেড ইনস্ট্রাকটর পদে ও ওই ট্রেডের অনুকূলে ২ (দুই) জন ল্যাব সহকারী পদে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির আলোকে আবেদন ও নিয়োগ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে ২০০৬ সালের ২ ডিসেম্বর আমি (জহিরুল) ও অপরজন মো. মামুন ল্যাব সহকারী পদে নিয়োগপ্রাপ্ত হই। আমরা উভয়ই ২০০৬ সালের ৩ ডিসেম্বর একই তারিখে বিদ্যালয়ে যোগদান করে কর্মরত আছি। সেই থেকে সমবায় মাধ্যমিক বিদ্যালয় চরখালীর ল্যাব সহকারী (সিভিল) পদে নিযোগপ্রাপ্ত হয়ে সুনামের সাথে কাজ করছেন জহিরুল। কিন্তু পক্ষপাতিত্ব করে অন্যায়ভাবে সম্প্রতি অন্য ল্যাব সহকারীর নাম এমপিওভুক্তির জন্য প্রেরণ করেছেন প্রধান শিক্ষক।

চলতি বছরের সালের ৩০ এপ্রিল সমবায় মাধ্যমিক বিদ্যালয়টি সিভিল কনস্ট্রাকশন ট্রেড এমপিওভুক্তির পরই তৈরি হয় নতুন জটিলত। এ ক্ষেত্রে জনবল কাঠামো ও এমপিও নীতিমাল ২০১৮ অনুযায়ী উল্লিখিত সিভিল কনট্রাকশন ট্রেডে ল্যাব সহকারী পদে একজনই মাত্র এমপিওভুক্ত হতে পারে। সেক্ষেত্রে অত্র বিদ্যালয়ে ল্যাব সহকারী পদে নিয়োগপ্রাপ্ত দুজনের মধ্যে মোঃ জহিরুল ইসলাম বাশারের শিক্ষাগত যোগ্যতা এসএসসি (ভোকেশনাল) বিল্ডিং মেইনটেন্যান্স, যা এমপিওর শর্ত মোতাবেক ট্রেড সিভিল কনস্ট্রাকশন সংশ্লিষ্ট। অপরদিকে মো. মামুন হোসেনের শিক্ষাগত যোগ্যতা এসএসসি (ভোকেশনাল) জেনারেল মেকানিক্স, যা এমিপিওভুক্ত ট্রেড সিভিল কনস্ট্রাকশন সংশ্লিষ্ট নয়। সঙ্গত কারণেই শর্তযুক্ত ট্রেড অনুযায়ী মো. জহিরুল ইসলাম বাশারই এমপিওভুক্তির যোগ্য।

কিন্তু বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক অনৈতিক লেনদেনের মাধ্যমে এমপিওর শর্ত গোপন রেখে জহিরুল ইসলাম বাশারকে বাদ দিয়ে মো. মামুনের অনুকূলে বোর্ডে কাগজপত্র প্রেরণ করেন। বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর এ নিয়ে শিক্ষকদের মধ্যে অসন্তোষ বিরাজ করছে। এমপিও বঞ্চিত মো. জহিরুল ইসলাম বাশার বলেন, আমি যোগদানের তারিখ হতে অদ্যাবধি সিভিল কনস্ট্রাকশন ল্যাব সহকারী পদে কর্মরত আছি। সভিল কনস্ট্রাকশন ট্রেড বিষয়ের ক্লাস পরিচালনা তথা রেজিন্ট্রেশন কার্যক্রম পরিচালনাসহ যযাবতীয় কার্যক্রম পরিচালনা পরিচালনা করে আসছি। যার প্রমাণস্বরূপ প্রধান শিক্ষক স্বাক্ষরিত বিভিন্ন কাগজপত্র রয়েছে।

এ ছাড়া ক্লাস রুটিন এবং শিক্ষক হাজিরা রেজিস্টার উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের একাডেমিক সুপারভাইজারের স্যার পরিদর্শনে রয়েছে। এ বিষয়ে সমবায় মাধ্যমিক বিদ্যালয় চরখালীর অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক মোঃ গোলাম মোস্তফা খান বলেন, এ নিয়োগ ২০০৬ সালে হয়েছে।

এ কারণে আমরা ১৯৯৫ সালের পরিপত্রের আলোকে মো. মামুনকে এপিওভূক্ত করার চিঠি দিয়েছি। নিয়োগ পরিক্ষার সময়ে মো. জহিরুল ইসলাম বাশার ও মো. মামুনের দু’জনের পরীক্ষা মামুন প্রথম হয়েছে। তাই এমপিওভুক্তির জন্য মামুনের কাগজপত্র ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।

(ইউজি/এসপি/জুলাই ০৫, ২০২০)