স্টাফ রিপোর্টার : বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদ বলেছেন, দুর্নীতি ও লুটপাটই হচ্ছে ওবায়দুল কাদের সাহেবদের কাছে পূর্ণিমার আলো। তাদের ব্যর্থতার সমালোচনা শুনলেই সেটিকে তারা অন্ধকার বলে মনে করছেন। তিনি আরও বলেন, নিষ্কর্মার ঢেঁকি স্বাস্থ্যমন্ত্রীর অযোগ্যতা ও তার আত্মীয়-স্বজন এবং ক্ষমতাসীনদের সিন্ডিকেটের দুর্নীতির কারণে স্বাস্থ্য সেক্টর ভেঙে পড়েছে।

মঙ্গলবার (৭ জুলাই) নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক ভিডিও সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের সমালোচনা করে রিজভী বলেন, ‌“ওবায়দুল কাদের সাহেব বলেছেন, ‘করোনার এই সংকটেও আজগুবি তথ্য দিয়ে জাতিকে বিভ্রান্ত করছে বিএনপি। পূর্ণিমার রাতেও বিএনপি অমাবস্যার অন্ধকার দেখতে পায়’। বিএনপি জাতিকে বিভ্রান্ত করছে না বরং জাতির সামনে প্রতিনিয়ত সঠিক তথ্য তুলে ধরছে বিএনপি। নিষ্কর্মার ঢেঁকি স্বাস্থ্যমন্ত্রীর অযোগ্যতা ও তার আত্মীয়-স্বজন এবং ক্ষমতাসীনদের সিন্ডিকেটের দুর্নীতির কারণে স্বাস্থ্য সেক্টর ভেঙে পড়েছে। করোনাসহ কোনো রোগেরই চিকিৎসা পাচ্ছে না মানুষ। করোনার টেস্ট না করিয়েই দেয়া হচ্ছে করোনার রিপোর্ট। বিনা চিকিৎসায় পথে ঘাটে মারা যাচ্ছে মানুষ। কবরস্থানে লাশ দাফনের জায়গা নেই। এখনো সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসায় ১০০ টাকার মধ্যে ব্যক্তির পকেট থেকে ব্যয় হয় ৬৬ টাকা। আর বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে গেলে তো ঘটি-বাটি, সহায়-সম্পদ সব খোয়াতে হয়।”

তিনি বলেন, ‘সরকার চিকিৎসার মতো মানুষের একটি মৌলিক অধিকারকে অগ্রাহ্য করে মেগা প্রজেক্ট নিয়েই ব্যস্ত আছে। মানুষের জীবন-মরণের প্রশ্নটি সরকারের কাছে কোনো মূল্য নেই। যারা জনগণের ক্ষমতা কেড়ে নিয়ে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা দখল করে তারা জনগণের মৌলিক চাহিদাগুলোকে কখনই আমলে নেবে না। তারা কালাকানুন দিয়েই জনগণকে বন্দী রেখে এক মনুষ্যত্বহীন কর্তৃত্ববাদী শাসনকে টিকিয়ে রাখতে চাইবে।’

‘অভাবের তাড়নায় লাইন ধরে ঢাকা ছাড়ছে মানুষ। ধারদেনা করে কোনোরকমে জীবনযাপন করছে মধ্যবিত্ত ও নিম্ন-মধ্যবিত্তের মানুষরা। ব্যাংকগুলো লুট করে খালি করে দেয়া হয়েছে। এবারের কাল্পনিক বাজেটেও সরকারের টার্গেট হচ্ছে ব্যাংক থেকে ব্যাপক পরিমাণে ঋণ নেয়। এই ঋণ জনকল্যাণের কাজে ব্যবহৃত হবে না, এই ঋণ মেগা প্রজেক্টের নামে লুটপাটেই শেষ হয়ে যাবে। আকণ্ঠ দুর্নীতিতে নিমজ্জিত সকল সেক্টর। প্রতিদিন এসব খবর গণমাধ্যমে প্রকাশ হচ্ছে। দুর্নীতি ও লুটপাটই হচ্ছে ওবায়দুল কাদের সাহেবদের কাছে পূর্ণিমার আলো। তাই তাদের ব্যর্থতার সমালোচনা শুনলেই সেটিকে তারা অন্ধকার বলে মনে করছে’-বলেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রিজভী আহমেদ।

রিজভী বলেন, ‌‘করোনাকালে সরকার গণমাধ্যমের গলায় ফাঁস পরিয়ে রাখলেও তারপরেও যতটুকু সংবাদ প্রকাশিত হচ্ছে তাতে সরকারি দলের লোকদের দুর্নীতির কাহিনী শুনলে গা শিউরে ওঠে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ আওয়ামী লীগ নেতার রিজেন্ট হাসপাতালে করোনার সঠিক পরীক্ষা না করে হাজার হাজার মানুষদের দেয়া হয়েছে করোনার পরীক্ষার ভুল রিপোর্ট। যার পজিটিভ তাকে দেয়া হয়েছে নেগেটিভ আর যার নেগেটিভ তাকে দেয়া হয়েছে পজিটিভ রিপোর্ট। এইভাবে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে ওই হাসপাতালটি। এতে কত মানুষের জীবন নিয়ে সর্বনাশা খেলা করা হয়েছে, তা বলে শেষ করা যাবে না।’

বিএনপির এই সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব বলেন, ‘এখন করোনার নমুনা পরীক্ষাও নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে। করোনার এই উচ্চ সংক্রমণেরও সময়ও কেন করোনা পরীক্ষা কমে গেল তার কি কোনো উত্তর দিতে পারবেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক? কয়েকদিন আগে ১৫-১৬ হাজার জনের নমুনা পরীক্ষা করা হচ্ছিল। এখন তা ১১-১২ হাজারে নেমে এসেছে, প্রায় ৪-৫ হাজার কমে গেছে। এর অর্থ সরকার জবরদস্তিমূলকভাবে করোনার সংক্রমণ কম-এটি জনগণকে দেখানোর জন্য করোনার পরীক্ষা নিয়ন্ত্রণ করছে।’

(ওএস/এসপি/জুলাই ০৭, ২০২০)