নাগরপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি : কেন্দ্রীয় কর্মসূচীর অংশ হিসেবে টাঙ্গাইলের নাগরপুরে কিন্ডারগার্টেন শিক্ষক-কর্মচারীরা সরকারি সহায়তাসহ ৬ দফা দাবিতে মানববন্ধন করেছে। 

বৃহস্পতিবার (০৯ জুলাই) সকালে সরকারি আর্থিক সহায়তা সহ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান টিকিয়ে রাখতে ব্যাংক লোণ প্রদান, কিন্ডারগার্টেনগুলোর নিবন্ধন প্রদান, বিদ্যুৎ গ্যাস ও পানির বিল মওকুফ, জেএসসি ও এসএসসি পরীক্ষা নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের নামে দেওয়ার সুযোগ ও কিন্ডারগার্টেন প্রতিষ্ঠানের জন্য পৃথক বোর্ড গঠনের দাবীতে বাংলাদেশ কিন্ডারগার্টেন স্কুল এন্ড কলেজ ঐক্য পরিষদ নাগরপুর উপজেলা শাখা উপজেলার নয়ান খান মেমোরিয়াল উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে টাঙ্গাইল-আরিচা আঞ্চলিক মহাসড়কে ঘন্টাব্যাপী এক মানববন্ধন করেছে।

টাঙ্গাইলের নাগরপুরে কিন্ডারগার্টেন স্কুলের শিক্ষকরা করোনার প্রভাবে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। করোনার কারণে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় কর্মহীন হয়ে পড়া উপজেলার কিন্ডারগার্টেন স্কুলের (কেজি) শিক্ষকদের পরিবারে চলছে এখন নীরব দুর্ভিক্ষ। কারণ তাদের পরিবার চলে শিক্ষার্থীদের বেতনের টাকায়। অসচ্ছল পরিবারের এসব শিক্ষকের সহায়তায় কেউ এগিয়ে না আসায় চরম বিপাকে পড়েছেন তারা। প্রতিষ্ঠানের ভাড়া দিতে না পারায় অনেকে প্রতিষ্ঠান বিক্রির নোটিশ টাঙ্গিয়ে দিয়েছেন। আবার অনেকেই বেতন ভাতা না পেয়ে পেশা বদল করে ভিন্ন পেশায় ঝুকছেন।

জানা গেছে, নাগরপুর উপজেলার ৭৫টি কিন্ডারগার্টেন স্কুলে কমপক্ষে ৭০০ জন শিক্ষক-শিক্ষিকা ও কর্মচারী নিয়োজিত রয়েছেন। তারা প্রায় ১৮ হাজার শিক্ষার্থীর পাঠশিক্ষা কার্যক্রম চালিয়ে আসছেন। এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অধিকাংশই শিক্ষার্থীর মাসিক বেতনের টাকায় পরিচালিত হয়। শিক্ষার্থীদের টাকায় শিক্ষকরা বেতন-ভাতা পেয়ে থাকেন। তা দিয়ে চলে শিক্ষকদের অসচ্ছল পরিবারের ভরণ-পোষণ।

কিন্তু করোনার প্রভাবে প্রতিষ্ঠানগুলো ছুটি থাকার কারণে শিক্ষার্থীদের বেতনও বন্ধ রয়েছে। পাশাপাশি বন্ধ রয়েছে এসব শিক্ষকের প্রাইভেট টিউশন। ফলে কোনোদিক থেকেই তারা উপার্জন করতে পারছেন না। এসব প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের অর্থবিত্ত না থাকলেও সমাজে তারা শিক্ষক হিসেবেই সম্মানীয়। ফলে তারা না পারছেন লাইনে দাঁড়িয়ে ত্রাণ নিতে, না পারছেন মুখ ফুটে কাউকে কিছু বলতে। ফলে এখন তারা তাদের সংসারের ব্যয়ভার বহন করতে হিমশিম খাচ্ছেন।

নাগরপুর উপজেলা কিন্ডারগার্টেন সমিতির সভাপতি মীর ওবায়েত হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক গোলাম মোস্তফা বলেন, আমাদের কেজি স্কুলের শিক্ষকরা সরকারি কোনো সুযোগ-সুবিধা পায় না। এই দুর্যোগমুহূর্তে এখনও পর্যন্ত শিক্ষকরা সরকারি বা বেসরকারিভাবে কোনো ধরনের সহযোগিতা না পাওয়ায় তাদের পরিবারে হাহাকার বিরাজ করছে। তাই সরকারের কাছে চলমান দুর্যোগে কিন্ডারগার্টেন শিক্ষক-কর্মচারীদের সরকারি সহায়তার আবেদন জানাচ্ছি।

(আরএস/এসপি/জুলাই ০৯, ২০২০)