প্রবাস ডেস্ক : যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণাঞ্ছলে করোনা সংক্রমণের হার অস্বাভাবিকহারে বাড়ছে। স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার আবারও সংক্রমণের নতুন রেকর্ড গড়েছে দেশটি। এদিন ৬৫ হাজার মানুষের শরীরে নতুন করে সংক্রমণ ধরা পড়েছে। আগেরদিন যা ছিল ৬০ হাজার। কোভিড-১৯ মহামারিতে সংক্রমণ আর মৃত্যুর ক্ষেত্রে অনাকাঙ্ক্ষিত সব রেকর্ড সৃষ্টি হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রে। জনস হপকিন্স ইউনিভার্সিটির পরিসংখ্যান এ তথ্য জানা গেছে। মার্কিন সংবাদমাধ্যম বাংলা প্রেস এ খবর জানিয়েছে। 

আক্রান্ত ও মৃত্যু দুটিতেই বিশ্বে শীর্ষে যুক্তরাষ্ট্র। শুক্রবার বাংলাদেশ সময় দুপুর ১২টা পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রে ৩১ লাখেরও বেশি মানুষ আক্রান্ত শনাক্ত হয়েছেন, মৃত্যুবরণ করেছেন ১ লাখ ৩৩ হাজার। গত কয়েকদিনে সংক্রমণ খুব বেশি মাত্রায় বেড়েছে। এখন প্রতিদিন ৫০-৬০ হাজার পজিটিভ শনাক্ত হচ্ছেন। মৃত্যুও বেড়ে গেছে। গত তিনদিনে গড়ে ৯০০ মানুষের প্রাণহানি ঘটেছে। কেন এতটা বেড়ে গেল? কী এর কারণ? যুক্তরাষ্ট্রের সংক্রমণ রোগ বিশেষজ্ঞ ও হোয়াইট হাউজের কভিড-১৯ সংক্রান্ত ট্যাস্ক ফোর্সের সদস্য ড. অ্যান্থনি ফাউচি মনে করেন, কিছু কিছু অঙ্গরাজ্যে খুব তাড়াতাড়ি লকডাউন শিথিল করার খেসারত দিতে হচ্ছে এখন।

ফাউচি বলছেন, ‘সতর্কতার সঙ্গে ও বিবেচনাপ্রসূতভাবে লকডাউন তুলে নেয়ার স্বাস্থ্যবিধি ও নির্দেশনা দেয়া হলেও কিছু কিছু অঙ্গরাজ্য এসব নির্দেশকে তোয়াক্কা না করে খুব তাড়াতাড়ি সবকিছু খুলে দিয়েছে। বিশেষ করে বললে ফ্লোরিডাকেই দেখুন, আমি মনে করি সেখানে সবকিছু খুব দ্রুত খুলে দেয়া হয়েছে, এখন ভাইরাসটিও খুব দ্রুত বাড়ছে। এটা যেন সত্যিকার এক ঝড়, যা সংক্রমণ রোগ ও জনস্বাস্থ্য খাতের মানুষদের জন্য এক দুঃস্বপ্ন।’

ফ্লোরিডায় গত কিছুদিন ধরে প্রতিদিন গড়ে ৯ হাজার মানুষের দেহে ভাইরাসের উপস্থিতি শনাক্ত হচ্ছে। গত মাসের পর দিনে ১ হাজারের নিচে কখনো নামেনি। কোভিড-১৯ মহামারিতে যুক্তরাষ্ট্রে সবচেয়ে খারাপ অবস্থায় রয়েছে ফ্লোরিডা। এ রাজ্যটিতে এখন হাসপাতালে রোগীদের ঠাঁই হচ্ছে না। রাজ্যের ২০৭টি ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটের মধ্যে বৃহস্পতিবার ৪৫টি পরিপূর্ণ, আর বাকিগুলোও ছিল ৯০ শতাংশ পূর্ণ।

এমন পরিস্থিতিতে সেখানকার স্বাস্থ্য বিভাগ বেসামাল হয়ে পড়েছে। টাম্পা জেনারেল হাসপাতালের প্রধান এপিডেমিলজিস্ট জন সিনোট বলেন, ‘হাসপাতাল আর স্বাস্থ্য সেবা খাতের সহকারীরা যখন সংক্রমণের ঢেউ নিয়ে কথা বলেন, তখন তারা শুধু একটি ঘটনা নিয়েই হয়তো বলেন। কিন্তু প্রতিদিন আমরা যার মুখোমুখি হচ্ছি তা যেন প্রতিদিন একটি বাস দূর্ঘটনার সমতুল্য এবং এটি বেড়েই চলেছে।’

(বিপি/এসপি/জুলাই ১০, ২০২০)