রঘুনাথ খাঁ, সাতক্ষীরা : ঢাকার রিজেন্ট হাসপাতালের মালিক প্রতারক সাহেদ করিমকে সাতক্ষীরা  সীমান্ত থেকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব। বুধবার  ভোর সোয়া ৫টায়  দেবহাটা উপজেলার  কোমরপুর সীমান্ত এলাকার বেইলি ব্রীজের নিচ দিয়ে লবঙ্গ নদীপথে নৌকায় তিনি বোরকা পরা অবস্থায় ভারতে পালিয়ে যাচ্ছিলেন। এসময় আগে থেকে  গোয়েন্দা নজরদারিতে রাখা সাহেদ করিমকে র‌্যাব সদস্যরা চ্যালেঞ্জ করেন। পরে তাকে গ্রেফতার করা হয় বলে জানিয়েছেন র‌্যাব সাতক্ষীরা কোম্পানি কমান্ডার এএসপি বজলুর রহমান। 

এদিকে গ্রেফতারের পর র‌্যাব সাতক্ষীরা স্টেডিয়ামে এনে এক প্রেস ব্রিফিং করে। র‌্যাবের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশন) কর্নেল তোফায়েল আহমেদ এক প্রেস ব্রিফিংয়ে বলেন, সাতক্ষীরা সীমান্তের কয়েকজন দালাল মানুষ পাচার ও চোরাকারবারে জড়িত। এদের মধ্যে বাপ্পি দালালসহ কয়েকজনকে তারা চিহ্নিত করেছেন। তাদের মাধ্যমেই সাহেদ করিম ভারতে পালিয়ে যাচ্ছিল বলে উল্লেখ করেন তিনি। এর আগে সাহেদ করিম তার চুল ও গোফ কেটে ছেটে ফেলে। পরে বোরকা পরে পালিয়ে যাচ্ছিল সে।

তিনি জানান, তার কাছ থেকে একটি পিস্তল ও ৩ রাউন্ড গুলি জব্দ করা হয়েছে। আটকের সময় তার সাথে র‌্যাব সদস্যদের ধস্তাধস্তি হয়। প্রেস ব্রিফিংয়ে বলা হয় , গত কয়েকদিন ধরে তাকে গ্রেফতারের জন্য সাতক্ষীরার আইনশৃংখলা বাহিনী বিভিন্ন স্থানে হানা দিয়ে আসছিল।

এর আগে র‌্যাব তার বিদেশে পালিয়ে যাবার পথ রুখতে তার পাসপোর্ট জব্দ করে। অবশেষে চোরাপথে ভারতে পালানোর সময় গ্রেফতার হলো সাহেদ করিম। সকাল আটটায় তাকে হেলিকপ্টারে ঢাকায় নিয়ে যাওয়া হয়।

১৯৪৭ এ দেশভাগের সময় সাহেদ করিমের দাদা এমদাদুল করিম তৎকালিন পাকিস্তানে চলে আসেন। এ সময় তারা সাতক্ষীরা মহকুমার দেবহাটায় বসবাস শুরু করেন। পরে তারা সাতক্ষীরা শহরের পলাশপোল কামাননগরে বসবাস করতে থাকেন। সাহেদ করিমের মা সাফিয়া করিম সাতক্ষীরা জেলা মহিলা লীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। ২০১০ সালে তিনি মারা যান। এর আগে ১৯৯৮ সালে সাতক্ষীরা সরকারি উচ্চ বালক বিদ্যালয়ে দশম শ্রেণিতে পড়াকালে সাহেদ করিম নানা অপরাধ করে ঢাকায় পালিয়ে যান। সেখানে তিনি গড়ে তোলেন রিজেন্ট হাসপাতালসহ বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান।

গ্রেফতারের পর সাহেদ করিমকে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে হেলিকপ্টারে ঢাকায় নিয়ে যাওয়া হয়।

(আরকে/এসপি/জুলাই ১৫, ২০২০)