আমতলী (বরগুনা) প্রতিনিধি : আমতলীতে আমনের বিআর-২৩ ধানের ৩১ টাকা কেজির বীজ এখন  ১০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। শেষ মুহুর্তে কৃষকরা নিরুপায় হয়ে খোলা বাজারে কৃষকদের মজুদ করা বীজ চরা দামে কিনে নিচ্ছেন। যেখানে বিআর ২৩ ধানের সরকারী মূল্য ৩১ টাকা কেজি সেখানে ১০০ টাকা দরে বীজ কিনতে গিয়ে কৃষকরা দিশেহারা হয়ে পরেছে।  

আমতলী উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানাগেছে, আমতলীতে এ বছর আমন চাষাবাদের লক্ষমাত্রা ধরা হয়েছে ২৩ হাজার ৫০০ হেক্টর জমি। ওই জমির আবাদের জন্য বীজ ধান প্রয়োজন ৫’শ ৮০ মেট্রিক টন। এর মধ্যে ৯৫% কৃষক ফলন ভালো হওয়ায় বিআর-২৩ জাতের বীজ ধানের চাষাবাদ করেন। উপজেলার মোট জমির অর্ধেক বীজ কৃষকরা মজুদ রেখে থাকেন। অবশিষ্ট অর্ধেক জমির জন্য দুই’শ ৯০ মেট্রিক টন বীজের চাহিদা রয়েছে।

আমতলী কৃষি অফিস দুই’শ ৯০ মেট্রিক টন আমন ধানের বীজ বরাদ্দ চেয়ে পটুয়াখালী বিএডিসি কর্তৃপক্ষকে চাহিদা পাঠিয়েছে। কিন্তু বিএডিসি কর্তৃপক্ষ ৫৮ মেট্রিক টন বীজ ধান সরবরাহ করেছে। যা প্রয়োজনের তুলনায় নগন্য। এতে বীজ সংকটে পরে উপজেলার কৃষকরা। উপজেলার ডিলার ও বীজের দোকানে বিআর-২৩ ধানের বীজ পাওয়া যাচ্ছে না। বীজ না পেয়ে দিশেহারা হয়ে পরেছে কৃষকরা। আষাঢ় মাসের শেষ এবং শ্রাবনের শুরুতে আমনের বীজতলার জন্য বীজের চাহিদা রয়েছে। শেষ মুহুর্তে বিআর-২৩ ধানের বীজের জন্য হন্য হয়ে ঘুরছে কৃষকরা।

বুধবার আমতলী পৌর শহরের বাঁধঘাট বাজারে বিআর-২৩ ধানের বীজ ১০০ টাকা কেজিতে বিক্রি করতে দেখা গেছে। কৃষকরা সরকারী কিংবা কোন কোম্পানীর বীজ না পেয়ে গৃহস্ত কৃষকের মজুদ করা বীজ ধান চরা দামে কিনে নিয়ে যাচ্ছেন।

টেপুরা গ্রামের রুহুল আমি বলেন, দুই মণ বিআর-২৩ ধানের বীজ বাজারে এনেছিলাম। ১০০ টাকা কেজি ধরে মুহুর্তের মধ্যে বিক্রি করে ফেলেছি। তিনি আরো বলেন, বিশ মণ ধান আনলে বিক্রিতে সমস্যা হতো না। কৃষকদের কাছে বিআর-২৩ ধানের বীজ মানে হিরা মানিক পাওয়া।

কৃষক আছলাম বলেন, বাজারে বিআর-২৩ ধানের বীজ পাইনা। এক কৃষক কিছু বীজ এনেছিল। ওই বীজ থেকে পাঁচ কেজি ১০০ টাকা দরে কিনে এনেছি।

পাইকারী ধান বিক্রেতা মো. শহীদুল ইসলাম মোল্লা বলেন, বাজারে বিআর-২৩ ধান নেই। শেষ মুহুর্তে কৃষকরা মজুদ করা বীজ বাজারে বিক্রি করতে এনেছে। ওই বীজের দুই মণ বীজ ধান আমার কাছে ছিল তা বিক্রি করে দিয়েছি।

আমতলী উপজেলা কৃষি অফিসার সিএম রেজাউল করিম বলেন, আমতলীতে বিআর-২৩ জাতের ধানের বীজের প্রচুর চাহিদা রয়েছে। বিএনডিসি পটুয়াখালীতে বিআর -২৩ এর চাহিদা দেওয়ার পরও বীজ পাচ্ছি না। যে কারনে বীজের সংকট দেখা দিয়েছে।

(এন/এসপি/জুলাই ১৫, ২০২০)