শামীম হাসান মিলন, চাটমোহর (পাবনা) : কোন প্রকার দরপত্র আহবান বা অনুমোদন না নিয়েই পাবনার চাটমোহর উপজেলার হরিপুরে সরকারি সড়ক, হরিপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও দূর্গাদাস হাইস্কুল এন্ড কলেজের বিভিন্ন প্রজাতির ১৪টি গাছ বিক্রির অভিযোগ হরিপুর ইউপি চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. মকবুল হোসেন, দূর্গাদাস স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ আলী হায়দার সরদারসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলার বাদী হরিপুর ইউনিয়ন ভূমি অফিসের সহকারী ভূমি কর্মকর্তা বিপুল কুমার জোয়ার্দার। মামলা নং ৯,তাং ১৫/০৭/২০২০ ইং।

জানা যায়, কোন প্রকার অনুমোদন না নিয়েই হরিপুর দূর্গাদাস হাইস্কুল এন্ড কলেজের সভাপতিসহ গভর্নিং বডির সদস্যরা হরিপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, দূর্গাদাস স্কুল এন্ড কলেজ এবং সরকারি রাস্তার গাছ বিক্রি করে। এরমধ্যে আম, কাঁঠাল, মেহগণি গাছ রয়েছে। গাছগুলো ২ লাখ ৪ হাজার টাকায় বিক্রি করা হয় বলে হরিপুর দূর্গাদাস স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ আলী হায়দার সরদার নিশ্চিত করেন।

সোমবার (১৩ জুলাই) গাছ কাটা শুরু হলে খবর পেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সরকার মো. রায়হান গাছ কাটা বন্ধ করে দেন। মঙ্গলবার (১৪ জুলাই) সরেজমিন পরিমাপ করে ৫টি গাছ সরকারি সড়কে এবং বাকিগুলো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সীমানায় পড়ে। গাছগুলো জব্দ করে উপজেলা পরিষদে আনা হয়। একই সাথে চাটমোহর থানায় স্কুল এন্ড কলেজের গভর্নিং বডির সভাপতি হরিপুর ইউপি চেয়ারম্যান, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. মকবুল হোসেন, স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ আলী হায়দার সরদারসহ ৯ জনকে বিবাদী করে একটি মামলা দায়ের করা হয়।

এলাকাবাসী জানান, হরিপুর স্কুল এন্ড কলেজ এবং প্রাথমিক বিদ্যালয় একই ক্যাম্পাসে অবস্থিত। প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নতুন বিল্ডিং অনুমোদন হয়েছে। এই সুযোগে প্রাথমিক বিদালয়টির ভবন পশ্চিম দিক থেকে পূর্ব দিকে স্থানান্তর করার পরিকল্পনা করে স্কুল এন্ড কলেজের গভর্নিং বডি। সে মোতাবেক পূর্বপাশের ১৪টি গাছ বিক্রির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। উপজেলার বা জেলা পর্যায়ের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কোন প্রকার অনুমোদন না নিয়ে স্কুল এন্ড কলেজের গভর্নিং বডির সভাপতিসহ অন্যরা নিজেরাই সিদ্ধান্ত নিয়ে গাছগুলো ২ লাখ ৪ হাজার টাকায় বিক্রি করে। ইতোপূর্বেও ইউপি চেয়ারম্যান মকবুল হোসেন স্কুল এন্ড কলেজের বেশ কিছু গাছ বিক্রি করে দিয়েছেন।

স্কুল এন্ড কলেজের সভাপতি ও হরিপুর ইউপি চেয়ারম্যান আ’লীগ নেতা মো. মকবুল হোসেন বলেন, প্রাইমারী স্কুলের বিল্ডিং করার জন্যই এই গাছ বিক্রি করা হয়েছে। আমি যা কিছু করেছি প্রতিষ্ঠানের মঙ্গলের জন্য করেছি। কখনও কোন অনিয়ম করিনি। সরকারি সড়কের গাছ কেন বিক্রি করলেন-এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমি ভালো করতে গিয়ে খারাপ হয়ে গেলাম। কী আর বলবো।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সরকার মোহাম্মদ রায়হান বললেন, খবর পাওয়ার পরই গাছ কাটা বন্ধ করে দেওয়া হয়। পরিমাপ করে সরকারি সড়কে ৫টি গাছ পড়েছে। কাটা গাছগুলো সিজ (জব্দ) করে উপজেলা পরিষদে আনা হয়েছে। পরবর্তীতে থানায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।

থানার ওসি মো.আমিনুল ইসলাম জানান, হরিপুর ইউনিয়ন ভূমি অফিসের সহকারী ভূমি কর্মকর্তা বাদি হয়ে ইউপি চেয়ারম্যা, অধ্যক্ষসহ ৯ জনকে আসামী করে থানায় মামলা হয়েছে। মামলা দায়ের হওয়ার পরই আইনগত ব্যবস্থা অনুযায়ী আসামীদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।

(এস/এসপি/জুলাই ১৫, ২০২০)