শামীম হাসান মিলন, চাটমোহর (পাবনা) : পাবনার চাটমোহরে মহামারী করোনার প্রভাব পড়েছে পশুর হাটগুলোতে। করোনাভাইরাসের প্রভাবে কমেছে গরুর দাম। ঈদ-উল-আযহাকে সামনে রেখে গরুর দাম কমলেও ক্রেতা পাচ্ছেনা খামারীরা। 

রবিবার (১৯ জুলাই) চাটমোহরের বৃহৎ পশুর হাট অমৃতকুন্ডা (রেলবাজার) হাটে গিয়ে দেখা গেল, হাটে যথেষ্ট পরিমাণ গরু-মহিষ উঠেছে। তবে বেচাকেনা কম। হাটের কোথাও সামাজিক দূরত্ব বা স্বাস্থ্যবিধি মানার কোন বালাই নেই। হাট কমিটিরও এ ব্যাপারে কোন উদ্যোগ নেই।

ব্যাপারী ও খামারীরা বললেন,‘এবার লাভ তো দূরে থাক, চালান (আসল) সিয়ে ঘরে ফেরাই আমাদের মূল লক্ষ্য’। হাট ঘুরে দেখা গেল পুরো হাট গরু, ছাগল আর মহিষে ঠাসা। ক্রেতাও আছে। তবে দাম কম। অনেক ক্রেতাই বাজার যাচাই করতে যেন এসেছেন।

উপজেলার মথুরাপুরের ব্যাপারী আব্দুল মতিন বললেন, ৫টি গরু নিয়ে এসেছি। এখন পর্যন্ত (বিকেল ৩টা) একটিও বিক্রি হয়নি। তিনি বললেন এবার কোরবানীর হাটে ব্যবসা হবে না। করোনা সবকিছু ওলোট-পালট করে দিয়েছে।

আরেক ব্যাপারী আহম্মদ আলী বললেন, মাংসের দামে (২০ হাজার টাকা মণ) গরু বিক্রি করলেও লাভ হবে না। কিন্ত ক্রেতা ১৫ হাজার টাকা মণ হিসেব করে দাম বলছে। এতে লোকসান গুনতে হচ্ছে। দেশের যে পরিস্থিতি তাতে কামনা করছি, চালানটা বাঁচানোই দায়।

চাটমোহর পৌর এলাকার ছোট শালিখা মহল্লার খামারী ফজলুল হক নয়ন বললেন, করোনার আগে যে গরু এক লাখ টাকা দাম ছিলো। এখন তা ৮০ হাজার টাকাতেও বিক্রি হচ্ছে না। গরুর দাম কমে যাওয়ায় চরম বিপাকে খামারীরা। অনেকেই বৈশ্বিক মহামারী করোনার কারণে কোরবানী দিচ্ছেন না। ফলে চাহিদা অনেক কম। তাছাড়া এবার ঢাকা থেকে ব্যাপারীরা আসছেন না। এখানকার ব্যাপারীরাও গরু ঢাকা নিচ্ছেন না। যদি বিক্রি না হয়। ফলে খামারীরা রয়েছেন লোকসানের আশংকায়।

উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা কৃষিবিদ মহির উদ্দিন বললেন, হাটে না গিয়ে অনলাইনে কোরবানীর পশু ক্রয়-বিক্রয়ের জন্য আমরা খামারীদের উদ্বুদ্ধ করছি।

বৃহৎ এহাটটিতে লোকের সমাগম প্রচুর। তবে বেচাকেনা কম। হাটের কোথাও সামাজিক দূরত্ব বা স্বাস্থ্যবিধি মানার কোন বালাই নেই। হাট কমিটিরও এ ব্যাপারে কোন উদ্যোগ নেইনি। চোখে পড়েনি প্রশাসনের নজরদারি।

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সরকার মোহাম্মদ রায়হান বলেন, ইতোমধ্যে আমি হাটের অব্যবস্থাপনার তদারকির জন্য এসিল্যান্ডকে বলেছি। এছাড়া হাটে স্বেচ্ছাসেবকদের কাজে নিয়োজিত যুবকদের সামাজিক দুরত্ব বজায় রাকতে সহযোগীতা ও সতর্কতা মুলক কার্যক্রম পরিচালনা করার কথা রয়েছে। হাটের অনিয়মের বিষয়ে প্রশাসন অবশ্যই ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।

(এস/এসপি/জুলাই ১৯, ২০২০)