স্টাফ রিপোর্টার : আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অভিযানের লাইভ (সরাসরি) সম্প্রচার দুর্নীতি-অনিয়ম উদঘাটনে প্রতিবন্ধক হতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। সোমবার (২০ জুলাই) সচিবালয়ে বাংলাদেশ ক্লাইমেট চেঞ্জ জার্নালিস্ট ফোরামের (বিসিজেএফ) নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময়ের সময় এক প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী এ মন্তব্য করেন।

সরাসরি সম্প্রচারের বিষয়টি নীতিমালার আওতায় আনার চিন্তা করছেন কিনা- জানতে চাইলে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘গণমাধ্যমের এই বিকাশ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাত ধরেই হয়েছে। আজ ৩০টি প্রাইভেট টেলিভিশন চ্যানেল, একটিও ছিল না ১৯৯৬ সালে প্রধানমন্ত্রীর দেশ পরিচালনার দায়িত্ব পাওয়ার আগে। গত সাড়ে ১১ বছর আগে ১০টি ছিল আজকে ৩০টি হয়েছে। আরও বেশ কয়েকটি সম্প্রচারে আসার অপেক্ষায়। এতে প্রতিযোগিতা বেড়েছে এটা সঠিক।’

তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি যেকোনো জিনিস প্রদর্শন করার ক্ষেত্রে একটি নিয়মনীতি নিজ থেকেই মানতে হয়। এটি রাষ্ট্রকে সবসময় করেই দিতে হবে নট দ্যাট। অবশ্যই রাষ্ট্রীয় একটি নিয়মনীতি থাকার তো প্রয়োজন আছে। কিন্তু কিছু নিয়মনীতি নিজেকেও মানতে হয়।’

‘কোনো নিউজ যদি আমি ভিজ্যুয়ালি দেখাই সেটা জনগণের মাধ্যমে ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া নাকি নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া দেখা দেবে, নাকি জনগণকে প্রচণ্ডভাবে ভীত সন্ত্রস্ত করে তুলবে- এই জিনিসগুলো মাথায় রেখেই সবকিছু সম্প্রচার করা প্রয়োজন বলে আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি।’

মন্ত্রী বলেন, ‘ইংল্যান্ড কিংবা ইউরোপে হাসপাতালের ভেতরে গিয়ে কোনো মুমূর্ষু রোগীকে দেখাতে পারে না। আমাদের দেশে আমরা দেখতে পাই হাসপাতালের ভেতরে টেলিভিশন ক্যামেরা গিয়ে সেখানে লাইভ সম্প্রচার করছে।’

তিনি বলেন, ‘কোনো একটি অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে, সেটিকে লাইভ সম্প্রচার করা হচ্ছে। অভিযান যদি লাইভ সম্প্রচার হয়, এটার কী আদৌ প্রয়োজনীয়তা আছে। অভিযান তো দুর্নীতি বা অনিয়ম উদঘাটনের জন্য, সেটির লাইভ সম্প্রচার, আমি মনে করি দুর্নীতি-অনিয়ম উদঘাটনের ক্ষেত্রে সেটি প্রতিবন্ধকতা হয়েও দাঁড়াতে পারে।’

‘সুতরাং এই জিনিসগুলো আমাদের ভাবা প্রয়োজন। আমাদের দেশে যারা সাংবাদিকতা করেন তারা যথেষ্ট জ্ঞানী ও বুদ্ধিমান। আমি আশা করি বিষয়টি মানুষের মধ্যে নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া তৈরি করবে বা মানুষকে ভীতসস্ত্রস্ত করে তুলবে বা শিশু-কিশোরদের মধ্যে প্রচণ্ড নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া তৈরি করবে সেগুলো আমরা নিজে থেকেই পরিহার করতে পারি।’

রিজেন্ট, জেকেজির পর গতকাল সাহাবউদ্দিন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে অভিযান পরিচালিত হয়েছে- বিষয়টি কীভাবে দেখছেন- জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘দেখুন স্বাস্থ্যখাতে সব ধরনের অনিয়ম-দুর্নীতি দূর করার যে কর্মসূচি সরকার নিয়েছে, সরকার যে প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে, সেটার অংশ হিসেবে সাহাবউদ্দিন মেডিকেল কলেজে অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘সাহাবউদ্দিন সাহেব একজন বিএনপি নেতা। তিনি গত নির্বাচনে বিএনপির পক্ষ থেকে সংসদ নির্বাচনও করেছিলেন। এখানে কে কোন দলের সরকার সেটা দেখছে না। সাহেদ আওয়ামী লীগের নাম ভাঙানোর চেষ্টা করত যদিও আওয়ামী লীগের কোনো কমিটিতে সে ছিল না। যেই এই অনিয়মের সঙ্গে যুক্ত থাকবে তার বিরুদ্ধে সরকার ব্যবস্থা নেবে।’

এ সময় বিসিজেএফের সভাপতি কাওসার রহমান ও সাধারণ সম্পাদক মোতাহার হোসেনসহ অন্য নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

(ওএস/এসপি/জুলাই ২০, ২০২০)