নীলকন্ঠ আইচ মজুমদার, ঈশ্বরগঞ্জ (ময়মনসিংহ) : ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলায় দিন দিন জনপ্রিয় হচ্ছে মাল্টা চাষ। উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় বাণিজ্যিকভাবে চাষ হচ্ছে মাল্টা। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবার ফলনও হয়েছে অনেক ভালো। আশানুরুপ বাজার দর পাওয়ায় চাষিরাও আর্থিকভাবে হচ্ছেন লাভবান । মাল্টা মিনারেল ও ভিটামিন সি সমৃদ্ধ একটি সুস্বাদু ফল। বিদেশি মাল্টার চেয়ে স্থানীয় বাগানে উৎপাদিত মাল্টা খেতে মিষ্টি এবং বাজার দর ভালো হওয়ায় ঈশ্বরগঞ্জে মাল্টা চাষে ঝুঁকছেন চাষীরা। 

স্থানীয় কৃষি বিভাগ সুত্রে জানা যায়, ২০১৭/১৮ অর্থবছরে রাজস্ব বাজেটের আওতায় উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়নে প্রান্তিক চাষীদের পুষ্টি চাহিদা পূরণ ও আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী করে তোলার লক্ষ্যে ১০টি মাল্টাবাগান করে দেয়া হয়। মাল্টা বাগান করে অনেকই সফল হয়েছেন। মাল্টা চাষে সফল এমন একজন চাষী হলেন মগটুল ইউনিয়নের উত্তর গালাহার গ্রামের ফারুক হোসেন। তিনি ২০১৭ সালে কৃষি বিভাগের সহায়তায় ২০ শতক জমিতে বারি-১ ও বারি-২ জাতের মাল্টা বাগান গড়ে তোলেন । সরেজমিন বাগানে গিয়ে দেখা যায়, তার বাগানে ৫০টি মাল্টা গাছ রয়েছে। প্রতিটি গাছে দুই থেকে আড়াইশ মাল্টা ধরেছে।

কৃষক ফারুক জানান, একটি গাছ থেকে পাঁচ হাজার টাকার মাল্টা বিক্রি করা যাবে। গত বছর নতুন বাগানে ফলন কম হওয়ায় ৩০টি মাল্টা গাছ থেকে প্রায় ৯০হাজার টাকার মাল্টা বিক্রি হয়েছে। এবার ৫০টি গাছে আশানুরুপ ফলন হয়েছে। চাষী ফারুক বলেন এবছর শ্রমিক মজুরি সার বাবদ ৪০ হাজার টাকা ব্যয় হয়েছে। সব খরচ বাদে তিনি এবার বাগান থেকে প্রায় দেড় লক্ষাধিক টাকা আয় করতে পারবেন বলে আশা করছেন।

উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মোয়াজ্জেম হোসেন জানান, বাগানে জৈব সার ব্যবহার করার কারণে উৎপাদিত মাল্টা খেতে সুমিষ্ট ও স্থানীয়ভাবে এর চাহিদা বেশি। এ ফল সম্পূর্ণ বিষ মুক্ত হওয়ায় স্থানীয়ভাবে ২শ টাকা দরে বাগানেই বিক্রি হয়ে যায়।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সাধন কুমার গুহ মজুমদার জানান, উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়নে ছোট বড় আরো ৯টি মাল্টা বাগান রয়েছে। মাল্টা ভিটামিন সি সমৃদ্ধ বহুবর্ষজীবি উদ্ভিদ। মাল্টা চাষ করে টানা ১৫ থেকে ২০ বছর পর্যন্ত ফলন পাওয়া যায়। দীর্ঘমেয়াদি মাল্টা আবাদ করে স্বাবলম্বী হওয়া সম্ভব।

(এন/এসপি/জুলাই ২৫, ২০২০)