মানিক সরকার মানিক, রংপুর : রংপুর ডেডিকেটেড করোনা হাসপাতালে কেন্দ্রীয় অক্সিজেন প্লান্ট বসানোর কাজ এক সপ্তাহ আগে শেষ হওয়ার পরও সিভিল সার্জন ও বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালকের রশি টানাটানির কারণে তা চালু করা যাচ্ছে না বলে অভিযোগ উঠেছে। এতে করে একদিকে যেমন করোনা সংক্রমিতদের জীবন-মরণের সম্মুক্ষিণ হতে হচ্ছে, অন্যদিকে মেশিনপত্রের কার্যকারিতা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। এদিকে এ ঘটনায় জেলাবাসীর মাঝে সৃষ্টি হয়েছে চরম ক্ষাভের। 

করোনা সংক্রমিত বেশিরভাগ রোগীই হাসপাতালে আসছেন শ্বাসকষ্ট নিয়ে। বর্তমানে রংপুরের অত্যাধুনিক এই হাসপাতালটিতে সিলিন্ডারের মাধ্যমে রোগিদের অক্সিজেন সরবরাহ করা হচ্ছে। সারাদেশে ডেডিকেটেড হাসপাতাল গুলোতে পর্যাপ্তভাবে কেন্দ্রীয় অক্সিজেন সাপোর্ট না থাকায় সরকার জরুরী ভিত্তিতে দ্রুত গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি হাসপাতালে সেন্ট্রাল সাপ্লাই ব্যবস্থা চালু করতে 'অক্সিজেন লিকুইড প্ল্যান্ট’ স্থাপনের নির্দেশ দেন। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কার্যাদেশ নিয়ে এক্সপেট্রা অক্সিজেন লিমিটেড রংপুর কোভিড হাসপাতালে এক সপ্তাহ আগে প্ল্যান্ট স্থাপনের কাজ শেষ করলেও বর্তমানে তা চালু করতে পারছে না।

এক্সপেট্রা অক্সিজেন লিমিটেডের এজিএম প্রকৌশলী মামুন উর রশিদ জানান, তারা যখন এক স্থানে ৬০ থেকে ৭০ শতাংশ কাজ শেষ করে ফেলে, তখন কর্তৃপক্ষ তাদের সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে বিভাগীয় স্বাস্থ্য কর্মকর্তা তাকে জানান, এই স্থানে এটি স্থাপন না করে অন্যস্থানে করলে ভালো হতো। এতে করে আটকে যায় বাকী কাজ সমাপ্তের কাজ। এ অবস্থায় তাদের আর কিছইু করার নেই। ফলে তারা চালু করতে পারছে না কেন্দ্রীয় এই অক্সিজেন প্লান্টটি।

সিভিল সার্জন সমস্যার কথা স্বীকার না করলেও বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক বলছেন, তাকে না জানিয়ে প্ল্যান্টটি স্থাপনের পর সেটির সাইট সিলেকশন পেপারে অনুমোদন চাওয়া হচ্ছে। যা তিনি দেবেন না বলে জানিয়ে দেন।

সিভিল সার্জন ডা. হিরম্ব কুমার রায় জানান, বর্তমানে সিলিন্ডারের মাধ্যমে অক্সিজেন সাপ্লাই আছে। তিনি আশা করছেন, শিগগিরই কেন্দ্রীয় কার্যক্রম চালু করতে পারবেন।

অন্যদিকে স্বাস্থ্য বিভাগীয় পরিচালক ডা. আমিন আহমেদ খান বলেন, আমাকে তিনি কিছু জানাননি। যে স্থানে এটি স্থাপন করা হচ্ছে সে বিষয়ে তিনি কোন অনুমোদন দেননি। এদিকে এ দুই কর্মকর্তার এ রশি টানাটানির কারণে একদিকে যেমন চালু করা যাচ্ছে না অতি জরুরি কেন্দ্রীয় এই অক্সিজেন প্লান্টটি, অন্যদিকে অক্সিজেন অভাবে মরতে বসেছে জরুরি রোগিরা। এতে করে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে জেলাবাসীর মাঝে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, শিগগিরই সমাধান না হলে প্ল্যান্টটি তারা উঠিয়ে অন্য কোন হাসপাতালে স্থাপন করবেন।

(এমএস/এসপি/জুলাই ২৫, ২০২০)