নিউজ ডেস্ক : বাংলাদেশের ইতিহাসের বাঁক বদলনো সিংহপুরুষ, বাঙালি জাতিরজনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বর্ণাঢ্য ব্যক্তি রাজনৈতিক জীবন ও কার্যক্রম নিয়ে তৈরি করা হয়েছে ‘বঙ্গবন্ধু’ মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন। ফলে খুব সহজেই মোবাইলের মাধ্যমে স্মার্টফোনের এই দুনিয়ায় দেশ-বিদেশের কোটি কোটি তরুণ প্রজন্মের কাছে জাতিরজনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জীবন ও দর্শন খুব সহজেই পৌঁছে যাবেন ‘বঙ্গবন্ধু’।

প্রথমে গুগল প্লে স্টোরের মাধ্যমে অ্যান্ড্রয়েড ডিভাইস ব্যবহারকারীরা এবং পরে অন্য প্ল্যাটফর্মের ব্যবহারকারীরাও ডাউনলোড করে ব্যবহার করতে পারবেন ‘বঙ্গবন্ধু’ অ্যাপ্লিকেশন।

অ্যাপ্লিকেশনটিতে প্রবেশ করলে মূল মেন্যুতে বঙ্গবন্ধুর আত্মজীবনী, ভাষণ, সাক্ষাৎকার, চিঠি, ফটোগ্যালারি এবং বঙ্গবন্ধু জাদুঘর এই ছয়টি মেন্যু পাওয়া যাবে। আত্মজীবনীতে প্রবেশ করলে সংক্ষিপ্ত জীবনী এবং অসমাপ্ত আত্মজীবনী নামে দুইটি সাব মেনু পাওয়া যাবে। সংক্ষিপ্ত জীবনীতে ১৯২০ থেকে শুরু করে ১৯৭৫ সাল পর্যন্ত বিভিন্ন ঘটনাবহুল সময়ে বঙ্গবন্ধুর কর্মকান্ড জানা যাবে। গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় জন্ম নেওয়া একজন সাধারণ ছেলে কীভাবে একটি রাষ্ট্রের, একটি জাতির জনক হয়ে ওঠেন তার ধারাবাহিক বর্ণনা আছে এখানে।

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, অ্যাপসটি অনুমোদনের জন্য গত ৯ আগষ্ট বঙ্গবন্ধু মেমোরিয়াল ট্রাস্টের মাননীয় সভাপতির কাছে আবেদন করা হয়েছে। অনুমোদনের পর আগষ্ট মাসেই এটি সবার জন্য উন্মুক্ত করা হবে। উদ্বোধনের পর অ্যাপ্লিকেশনটিকে বঙ্গবন্ধু মেমোরিয়াল ট্রাস্টের কাছে হস্তান্তর করা হবে এবং ভবিষ্যতে অ্যাপ্লিকেশনটির তথ্য ব্যবস্থাপনা, প্রয়োজনীয় হালনাগাদকরণ, নতুন তথ্য সংযোজন ইত্যাদি ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব এই প্রতিষ্ঠানের কাছেই সংরক্ষিত থাকবে।
এদিকে অসমাপ্ত আন্তজীবনীতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ বইটির পিডিএফ ভার্সন পাওয়া যাবে।

অ্যাপসটির ভাষণ মেন্যুতে রয়েছ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের গুরুত্বপূর্ণ সকল ভাষণ। এখান থেকে মোবাইলেই ভাষণের ভিডিও দেখতে পাওয়া যাবে। ৭ই মার্চ এর ঐতিহাসিক ভাষণ, ১০ জানুয়ারি ১৯৭২ সালে ভারতে দেয়া ভাষণ, স্বদেশ প্রত্যাবর্তন ভাষণ, জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে বাংলায় ভাষণ, জুলিও কুরি পদক প্রাপ্তির সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে ভাষণ, ১৯৭৫ সালের ২৬ জানুয়ারি সোহরায়ার্দী উদ্যানে ভাষণ, ৭০ এর নির্বাচনের পূর্বে রেডিও পাকি¯ত্মানে দেওয়া ভাষণ এই অ্যাপ্লিকেশনে পাওয়া যাবে। ফটোগ্যালারিতে প্রবেশ করলে বঙ্গবন্ধুর কর্মময় এবং ব্যক্তিজীবনের ১১৩ টি দুর্লভ ছবি পাওয়া যাবে।
এছাড়া সাক্ষাৎকার মেন্যুতে প্রবেশ করলে বিভিন্ন দেশি বিদেশি সাংবাদিকদের কাছে দেওয়া বঙ্গবন্ধুর ৬ টি দুর্লভ সাক্ষাৎকার পাওয়া যাবে। এসকল সাক্ষাৎকারে বঙ্গবন্ধুর দর্শন, রাষ্ট্র পরিচালনার নীতি, দেশপ্রেম ইত্যাদি বিষয় উঠে এসেছে।

চিঠি মেন্যুতে প্রবেশ করলে বঙ্গবন্ধুর হাতে লেখা অনেকগুলো চিঠি পাওয়া যাবে। এই চিঠিগুলো বঙ্গবন্ধু জেলে বন্দী অবস্থায় পিতা, রাজনৈতিক সহকর্মী, স্ত্রী, সন্তানদের উদ্দেশ্য করে লিখেছিলেন। বঙ্গবন্ধু জাদুঘর মেন্যুতে প্রবেশ করলে ঢাকার ধানমন্ডিতে অবস্থিত বঙ্গবন্ধু জাদুঘর এবং টুঙ্গিপাড়া জাদুঘরের ঠিকানা ও গুগল ম্যাপে অবস্থান পাওয়া যাবে।

বঙ্গবন্ধু মেমোরিয়াল ট্রাস্টের অনুমোদন নিয়ে ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুর মহাপ্রয়াণ দিবসে সবার জন্য উন্মুক্ত হচ্ছে এই অ্যান্ড্রয়েড অ্যপ্লিকেশনটি। বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে এ অ্যাপ্লিকেশন তৈরির উদ্যোগ নেয় ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়। তরুণ প্রজন্মের কাছে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ তুলে ধরতেই অ্যাপটি বানানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়। ‘বঙ্গবন্ধু’ অ্যাপ্লিকেশনটি প্রস্তুত করছে দেশের অন্যতম মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন নির্মাতা প্রতিষ্ঠান এমসিসি লিমিটেড।

মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জনগণের হাতের মুঠোয় সরকারি সেবা পৌঁছে দেয়া, দক্ষ জনশক্তি গড়ে তোলা, তথ্যপ্রযুক্তির আন্তর্জাতিক বাজারে দেশীয় শিল্পের প্রবেশের সুযোগ সৃষ্টির জন্য জাতীয় পর্যায়ে মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন উন্নয়নে সচেতনতা ও দক্ষতা বৃদ্ধি কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। এর আওতায় অন্য কার্যক্রমের পাশাপাশি ১০০টি মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন নির্মাণ করা হচ্ছে।


(ওএস/এএস/আগস্ট ১৪, ২০১৪)