দিনাজপুর প্রতিনিধি : জাতীয় সংসদের হুইপ ইকবালুর রহিম বলেছেন, বর্তমান সরকার নৃতাত্ত্বিক আদিবাসী জনগোষ্ঠীর উন্নয়নে বিভিন্ন কর্মসূচী গ্রহণ করেছে। এরই অংশ হিসেবে প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার নিজস্ব তহবিল থেকে আদিবাসীদের লেখাপড়ার জন্য অর্থ বরাদ্দ করা হয়েছে। এই অর্থ আরও বরাদ্দ করার আশ্বাস দিয়ে হুইপ ইকবালুর রহিম সরকারের এসব সুযোগ গ্রহণ করে আদিবাসীদের শিক্ষার দিকে মনোযোগ দিয়ে তাদের আশা-আকাংখা পূরনের আহ্বান জানান।

আন্তর্জাতিক আদিবাসী দিবস উপলক্ষে বৃহস্পতিবার দিনাজপুর শিল্পকলা একাডেমী মিলনায়তনে আলোচনাসভা, আদিবাসী মুক্তিযোদ্ধাদের সম্বর্ধনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে হুইপ ইকবালুর রহিম একথা বলেন।

অনুষ্ঠানে আদিবাসীদের বিভিন্ন সমস্যার কথা শুনে হুইপ ইকবালুর রহিম বলেন, লেখাপড়ায় মনোযোগের পাশাপাশি মাদক পরিহার করলে আদিবাসীদের ৮০ শতাংশ সমস্যা এমনিতেই দূর হয়ে যাবে এবং আদিবাসী জনগোষ্ঠিও সমাজে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারবে। এজন্য তিনি সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধির আহ্বান জানান।

হুইপ ইকবালুর রহিম বলেন, পাক-হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন হয়েছে। কিন্তু অর্থনৈতিক উন্নয়নের যুদ্ধ এখনও চলছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের সব জনগোষ্ঠির মানুষের আশা-আকাংখা পূরনে অর্থনৈতিক উন্নয়নের যে যুদ্ধ শুরু করেছে সব জনগোষ্ঠীর মানুষকে সেই যুদ্ধে অংশ নিয়ে ভিশন-২০২১ বাস্তবায়ন করতে হবে। এ জন্য তিনি আদিবাসী জনগোষ্ঠীকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, স্বাধীনতা বিরোধী সরকার ও স্বৈরাচারী সরকার এদেশে ৩৪ বছর ক্ষমতায় থাকলেও আদিবাসীদের উন্নয়নে কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি। আওয়ামীলীগ সরকার ক্ষমতায় এসে পাহাড়ী আদিবাসীদের শান্তির জন্য শান্তিচুক্তি করেছে। এছাড়াও সমতল ভূমির আদিবাসীদের উন্নয়নে সরকার বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। তিনি বলেন, আদিবাসীদের ভূমি রক্ষায় পৃথক ভূমি কমিশন গঠনের চিন্তাভাবনা করছে সরকার।

গত সাড়ে ৫ বছরে দিনাজপুর সদর উপজেলার আদিবাসীদের উন্নয়নের কথা উল্লেখ করে হুইপ ইকবালুর রহিম বলেন, সদর উপজেলার অনেক আদিবাসীর বাড়ি-ঘর নির্মাণ, আদিবাসী শিশুদের লেখাপড়ার উন্নয়নে বিভিন্ন অনুদান দেয়া হয়েছে। এই ধারা অব্যাহত থাকবে বলে আশ্বাস দেন তিনি।

অক্সফ্যামের সহযোগিতায় আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন, দিনাজপুরের পুলিশ সুপার রুহুল আমীন, অক্সফ্যামের প্রজেক্ট কো-অর্ডিনেটর সৈকত বিশ্বাস, দিনাজপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি চিত্ত ঘোষ, দিনাজপুর সমাজ সেবা অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক স্টিফেন মুর্মু ও কাহারোল মহিল ডিগ্রী কলেজের অধ্যক্ষ আঞ্জুয়ারা বেগম। বিশিষ্ট নাট্য ব্যাক্তিত্ব শাহজাহান শাহ-এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন, আদিবাসী নেত্রী রেখা হাসদা, আদিবাসী নেতা রামে সরেন ও দিনাজপুর মহিলা পরিষদের আন্দোলন সম্পাদিকা সুমিত্রা বেশরা। অনুষ্ঠানে মুখ্য আলোচক ছিলেন, দিনাজপুর সঙ্গীত মহাবিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যক্ষ গণেশ সরেন।
অনুষ্ঠানে জেলার ১০ জন আদিবাসী মুক্তিযোদ্ধাকে সম্বর্ধনা দেয়া হয়।

(এটি/জেএ/আগস্ট ১৪, ২০১৪)