চাটমোহর (পাবনা) প্রতিনিধি : পুলিশের সোর্স দাবি করে বেপরোয়ভাবে নানা অপকর্মের হোতা মিজানুর রহমান ওরফে মিজানকে প্রবাসীর স্ত্রীকে তুলে নিয়ে আটকে রেখে ধর্ষণ করা মামলায় আটক করেছে পুলিশ। 

পাবনার চাটমোহরে এক সন্তানের জননী প্রবাসীর স্ত্রীকে তুলে নিয়ে আটকে রেখে ধর্ষণ করার অভিযোগে মামলা দায়েরের পর সোমবার ভোরে তাকে আটক করা হয়।

পুলিশের সোর্স দাবি করা মিজান উপজেলার বিলচলন ইউনিয়নের রামনগর পশ্চিমপাড়া গ্রামের মৃত হাসান আলীর ছেলে। এরআগে রোববার রাতে ওই গৃহবধূর বাবা বাদী হয়ে থানায় মামলা দায়ের করেন। এদিকে মিজানের গ্রেফতারের খবরে খুশি হয়ে এলাকায় মিষ্টি বিতরণ করেছে স্থানীয়রা।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, একই উপজেলার বোঁথর গ্রামের জনৈক এক প্রবাসীর স্ত্রী বেশকিছুদিন ধরে ধূলাউড়ি গ্রামে বাবার বাড়িতে বসবাস করছিলেন। গত ২৯ জুলাই বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে ওই গৃহবধূ বাজারে যাওয়ার উদ্দেশ্যে বাড়ি থেকে বের হয়ে ভ্যানের জন্য অপেক্ষা করার সময় মিজানসহ অজ্ঞাত কয়েকজন যুবক জোরপূর্বক সিএনজি অটোরিকশাতে তুলে ওই গৃহবধূকে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যায়।

এরপর ওই গৃহবধূর স্বজনরা অনেক খোঁজাখুঁজির ৩দিন পর মিজানের মা আছিয়া বেওয়ার বাড়ি থেকে তাকে উদ্ধার করেন। এদিকে মিজান ওই গৃহবধূকে আটকে রাখাকালীন সময়ে জোর পূর্বক কয়েকবার ধর্ষণ করে। পরে এ ঘটনার পর রোববার রাতে ওই গৃহবধূর বাবা বাদী হয়ে মিজানকে প্রধান আসামী করে থানায় অপরহরণ ও ধর্ষণ মামলা দায়ের করেন। সোমবার ভোরে অভিযান চালিয়ে অভিযুক্ত মিজানকে আটকের পর গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে সোপর্দ করে পুলিশ।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন চাটমোহর থানার ওসি আমিনুল ইসলাম।

এদিকে স্থানীয় একাধিক সূত্র জানায়, একসময়ের ভ্যান চালক মিজান দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় নিজেকে পুলিশের সোর্স পরিচয় দিয়ে নানা অপরাধ কর্মকান্ড করতো। প্রতিনিয়ত থানায় যাতায়াত ছিল তার। ছিল মাদক সংশ্লিষ্টতাও। পুলিশের কথা বলে ভয়ভীতি দেখিয়ে অবৈধ সুবিধা নেয়া থেকে শুরু করে সব অপরাধ কর্মকান্ডের সাথে জড়িত ছিল এই মিজান। রাতারাতি কোটি টাকার মালিক বনে যাওয়া মিজান অতিসম্প্রতি করেছেন বিশাল পাকা দালান বাড়ি। তার ভয়ে এলাকার কেউ মুখ খোলার সাহস পেতেন না।

তবে চাটমোহর থানার নতুন ওসি আমিনুল ইসলাম যোগদানের পর পাল্টে যায় সব সমীকরণ। থানায় আসা-যাওয়া বন্ধ হয়ে যায় তার। নতুন ওসির কাছে সুবিধা করতে না পেরে এলাকা থেকে গা-ঢাকা দেয় মিজান। এমতাবস্থায় প্রবাসীর স্ত্রীকে জোরপূর্বক তুলে নিয়ে ধর্ষণের অভিযোগে থানায় মামলা দায়ের পর আটক হয় সে। মিজানের আটকের খবরে এলাকার মানুষের মধ্যে স্বস্তি নেমে আসে এবং মিষ্টি বিতরণ করেন স্থানীয়রা।

এ ব্যাপারে সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (চাটমোহর সার্কেল) সজীব শাহরীন বলেন, শুনেছি মিজান নামের ওই ব্যক্তির একসময় থানায় যাতায়াত ছিল। তার নামে বেশ কিছু অভিযোগও রয়েছে। তবে জনৈক এক প্রবাসীর স্ত্রীকে জোর করে আটকে রেখে ধর্ষণের অভিযোগে মামলা দায়েরের পর তাকে আটক করা হয়েছে বলে জানান তিনি।

(এস/এসপি/আগস্ট ০৩, ২০২০)