স্টাফ রিপোর্টার : স্বাস্থ্যকর জীবন যাপনের জন্য জনপ্রিয় একটি ট্রেন্ড হয়ে উঠেছে সুগার ফ্রি খাবার খাওয়া। মানুষেরা আরও ক্যালোরি সচেতন হয়ে ‘সুগার ফ্রি’ এবং অন্যান্য লো-ক্যালোরির মিষ্টি খাবার রাখছেন ডায়েটে। ন্যূনতম ক্যালরির সাথে মিষ্টতার স্বাদ দিয়ে, সুগার ফ্রি এর মতো স্বল্প ক্যালোরি মিষ্টিগুলো অগণিত মানুষকে তাদের স্বাস্থ্য এবং ফিটনেসের লক্ষ্য অর্জনে সাহায্য করেছে।

ক্যালোরি কমানোর সুবিধা এবং কম-ক্যালোরির মিষ্টির ক্রমবর্ধমান চাহিদা এগুলোকে জনপ্রিয় করে তুলেছে, তবে এই সুগার ফ্রি খাবার নিয়ে মূলধারার মিডিয়াগুলিতে বিতর্ক রয়েছেই। এর কারলে স্বাস্থ্যের নানা পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে- এমনটাই প্রচলিত অনেকের মাঝে। তবে সুগার ফ্রি খাবারগুলো কোনো স্বাস্থ্য সমস্যার কারণ হতে পারে, এমন কোনো চূড়ান্ত প্রমাণ নেই।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের খাদ্য ও ওষুধ প্রশাসন (ইউএসএফডিএ) দ্বারা অনুমোদিত:

অ্যাসপার্টাম নিয়ে শতাধিক গবেষণা হয়েছে। সব গবেষাণায় এটাই প্রমাণিত যে, এটি মানবদেহের জন্য নিরাপদ। বাজারে ব্যবহারের জন্য অনুমোদিত হওয়ার আগে বিশ্বব্যাপী খাদ্য সুরক্ষা কর্তৃপক্ষ কর্তৃক অনুমোদিত সমস্ত স্বল্প বা নন-ক্যালরি মিষ্টিগুলোর ঝুঁকি মূল্যায়ন করেছে। এরপর বিজ্ঞানীরা এই সিদ্ধান্তে আসেন যে, সুগার ফ্রি জাতীয় পণ্যগুলোর কোনো পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া নেই।

ইউরোপীয় ফুড সেফটি অথরিটি (ইএফএসএ) এবং ওয়ার্ল্ড হেলথ অর্গানাইজেশন (ডাব্লুএইচও) দ্বারা অনুমোদিত:

ইউরোপ এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাম্প্রতিক গবেষণা সুগার ফ্রি খাবারে ব্যবহৃত মিষ্টি নিরাপদ বলে নিশ্চিত করেছে। অ্যাসপার্টাম মানুষের ব্যবহারের জন্য নিরাপদ, ইফএসএএ এই মিষ্টিকে ঝুঁকিমুক্ত হিসেবে মূল্যায়ন করে। ইএফএসএ প্রাণি ও মানব উভয়ক্ষেত্রেই এর প্রভাব নিয়ে গবেষণা করে।

খাদ্য সম্পর্কিত ইউরোপীয় কমিশনের বৈজ্ঞানিক কমিটি এবং খাদ্য সংযোজন সম্পর্কিত একটি যৌথ এফএও / ডব্লুএইচও বিশেষজ্ঞ কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে, এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছে যে, সুগার ফ্রি খাবার মানবদেহের জন্য নিরাপদ। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাও এই সিদ্ধান্তে পৌঁছেছে যে, স্বল্প-ক্যালোরি মিষ্টির কোনো পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া নেই।

স্বল্প-ক্যালোরি মিষ্টি - ওজন নিয়ন্ত্রণে ভূমিকা

স্বল্প-ক্যালোরি মিষ্টি ক্যালোরির পরিমাণ কমিয়ে আনে ও ওজন হ্রাসে সহায়তা করতে পারে। চিনির জায়গায় যখন এই খাবারগুলো ব্যবহার করা হয় তখন এগুলো নেট শক্তি (ক্যালোরি) গ্রহণ কমাতে এবং ওজন পরিচালনায় সহায়তা করতে পারে। এছাড়াও এগুলো রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়ায় না।

চিনি থেকে মুক্তি

নিয়মিত চা পানকারীরা ক্ষেত্রে চিনির বদলে সুগার ফ্রি বেছে নিতে পারেন। এটিডায়েটে যুক্ত করা মানে স্বাস্থ্যের কোনোরকম ক্ষতি ছাড়াই চা এবং অন্যান্য পানীয়গুলো নিয়মিত পান করতে পারবেন। এছাড়াও, এটি অল্পতেই একই পরিমাণ মিষ্টি স্বাদ দিতে পারবে।

ওজন কমাতে চাইলে এবং ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য এটি মনে রাখা গুরুত্বপূর্ণ যে, এমন কোনো ‘ম্যাজিক বুলেট’ সমাধান নেই যা রাতারাতি স্বাস্থ্যের লক্ষ্য অর্জন করতে পারে। তবে স্বাস্থ্যকর জীবনধারা অনুশীলনের পাশাপাশি স্বল্প-ক্যালোরি মিষ্টির স্মার্ট ব্যবহার অবশ্যই ওজন হ্রাসের লক্ষ্যে পৌঁছাতে সহায়তা করতে পারে। সর্বোপরি, স্বল্প-ক্যালোরি মিষ্টি সর্বোত্তম ফলাফলের জন্য পরিমিত গ্রহণ করা উচিত।

(ওএস/এসপি/আগস্ট ০৫, ২০২০)