স্টাফ রিপোর্টার : করোনা ভাইরাসের সংক্রমণের কারণে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের পুষ্টি লাভ ব্যাহত হচ্ছে এবং এতে করে খাদ্য সরবরাহ, উপার্জন ও খাদ্য বৈচিত্র সীমিত হয়ে পড়েছে। বিশ্ব স্তন্যদান সপ্তাহে (১-৭ আগস্ট ২০২০) পুষ্টি সেবা বাড়াতে পুষ্টি সেক্টর বিভিন্ন উদ্যোগ ও পদক্ষেপ গ্রহনের আহ্বান জানিয়েছে।

কক্সবাজার পুষ্টি সেক্টরের জরুরি পরিস্থিতিতে নবজাতক ও শিশুদের খাওয়ানোর বিশেষজ্ঞ গ্ল্যাডিস লাসু বলেন, মহামারির আগেও প্রায় ৪০ শতাংশ রোহিঙ্গা পরিবার নিয়মিত পর্যাপ্ত পরিমাণে খাবার খেতেন না এবং খাদ্য বৈচিত্রের অভাব ছিল। ৫ বছরের কম বয়সী রোহিঙ্গা শিশুদের ১১ শতাংশ তীব্র অপুষ্টিতে ভুগছে; যা বাচ্চাদের বিকাশ, বৃদ্ধি এবং বেঁচে থাকার জন্য হুমকিস্বরূপ।

পুষ্টি সেক্টরের পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব বলা হয়েছে। এতে আরও বলা হয়, ২০১৭ সালের আগস্ট মাসে রোহিঙ্গা সংকট শুরুর সময় সাত লাখেরও বেশি মানুষ মিয়ানমার থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়। সেই অবস্থা থেকে পরিস্থিতির অগ্রগতি হচ্ছিল। পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুদের বৈশ্বিক তীব্র অপুষ্টি ২০১৭ সালে ১৯.৩ শতাংশ থেকে কমে ২০১৯ সালে তা ১০.৯ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। তবে, কোভিড১৯ মহামারি পরিস্থিতিতে গত তিন বছরের অগ্রগতিকে নাজুক করে তুলেছে।

শিশুদের প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য বুকের দুধ খাওয়ানো বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ যা শিশুর স্বাস্থ্যকর বৃদ্ধি এবং বিকাশে সাহায্য করে। প্রথম ছয় মাস শুধুমাত্র বুকের দুধ খাওয়ানোর ব্যবস্থা করা উচিত, অর্থাৎ অন্য কোনো তরল বা ঘন খাবার দেওয়া উচিত নয়, এমনকি পানিও নয়। রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে, জন্মের প্রথম তিন দিনের মধ্যে প্রায় ৫০ শতাংশ মা মধু, সরিষার তেল এবং চিনির পানি ব্যবহার করে থাকেন। যদিও ছয় মাসের কম বয়সী শিশুদের মাত্র ৬৪ শতাংশ কেবলমাত্র বুকের দুধ পায়।

কক্সবাজারের পুষ্টি সেক্টরের সমন্বয়কারী বখোদির রহিমভ গুরুত্বারোপ করে বলেন, “আমরা পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুদের মধ্যে অসুস্থতা ও মৃত্যুহার কমিয়ে আনতে জরুরি সেবা হিসাবে রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে কেবলমাত্র বুকের দুধ খাওয়ানোকে ব্যপকভাবে উৎসাহিত করছি।”

পুষ্টি সেক্টর ২ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা শিশু, গর্ভবতী এবং স্তন্যদানকারী মহিলাদের জীবন রক্ষাকারী পুষ্টিসেবা দিয়ে যাচ্ছে।

কক্সবাজারের পুষ্টি সেক্টরের সমন্বয়কারী বখোদির রহিমভ বলেন, “কোভিড-১৯ এর সময়, গুজব এবং ভুল ধারণা থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য আমরা মায়েদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করি। এ পরিস্থিতিতে প্রথম থেকেই মায়ের বুকের দুধ খাওয়ানো নিরাপদ, ফেস মাস্কেএর ব্যবহার এবং স্বাস্থ্যবিধী মেনে চলার প্রচারনা ও উৎসাহ দিয়ে আসছি।”

(ওএস/এসপি/আগস্ট ০৬, ২০২০)