স্টাফ রিপোর্টার : মার্চে সংক্রমণ শুরুর দিকে দ্রুত করোনা শনাক্ত ও অ্যান্টিবডি পরীক্ষার জন্য অ্যান্টিজেন্ট ও অ্যান্টিবডি কিটের উদ্ভাবন করে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র। নানা চড়াই-উৎরাই পেরিয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) কিটের কার্যকারিতা পরীক্ষা করাতে সক্ষম হয় প্রতিষ্ঠানটি। সে যাত্রায় কিটের অনুমোদন মেলেনি। এরপরও প্রায় দেড় মাস পার হয়েছে। তবে হাল ছাড়েনি গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র।

তারা বলছে, ওষুধ প্রশাসন অধিদফতরের প্রণয়ন করা নতুন নীতিমালা অনুযায়ী কিটের কার্যকারিতা পরীক্ষা করাতে যেসব সরঞ্জাম প্রয়োজন, সেগুলো আমদানিতে সরকারের অনাপত্তিপত্র (এনওসি) পেয়েছে। সেগুলো আসতে ১৫ দিন লাগতে পারে। এরপর ফের বিএসএমএমইউতে কিটের কার্যকারিতা পরীক্ষা করা হবে।

বৃহস্পতিবার (৬ আগস্ট) এসব তথ্য জানান গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র উদ্ভাবিত কিটের বিজ্ঞানী দলের প্রধান ড. বিজন কুমার শীল।

তিনি বলেন, ‘কিট এখনও মূল্যায়নের অপেক্ষায়। ওষুধ প্রশাসন প্রণয়ন করা যুক্তরাষ্ট্রের ওষুধ প্রশাসনের (এফডিএ) নীতিমালা অনুযায়ী মূল্যায়নের জন্য যে পরিবেশ সৃষ্টি দরকার বা জিনিসগুলো দরকার, সেগুলো আনার প্রক্রিয়ায় আমরা আছি। এনওসি পাওয়া গেছে। ওগুলো এনে তারপর শুরু হবে।’

তিনি বলেন, ‘এফডিএ’র গাইডলাইন অনুযায়ী টেস্ট করতে হলে স্যাম্পলগুলো এরাইজার কিট দিয়ে ওটাকে ক্যারেক্টারাইজড করে তারপর করতে হবে। এ কারণে রিএজেন্ট বা এরাইজার কিটটা এখনও বাংলাদেশে এসে পৌঁছেনি। ওটা আনার জন্য অনুমোদন পাওয়া গেছে। ওটা এলে বিএসএমএমইউতে এটা ব্যবহার করে স্যাম্পল ক্যারেক্টারাইজ করে তারপর টেস্ট করা হবে।’

বিএসএমএমইউতেই এবার কিটের কার্যকারিতা পরীক্ষা হচ্ছে কি না জানতে চাইলে ড. বিজন কুমার শীল বলেন, ‘বিএসএমএমইউতে করা হবে। যেহেতু তারা আগে করেছে, বিষয়টা জানে, আমার মনে হয়, সেখানেই করাটা ভালো।’

এফডিএর নীতিমালা অনুযায়ী কিটের সক্ষমতা যাচাই করতে বিএসএমএমইউ সক্ষম কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘হ্যাঁ, রিএজেন্ট চলে এলেই করতে পারবে। কিছু লাগবে না। রিএজেন্ট আসতে ১৫ দিনের মতো লাগতে পারে। ইতিমধ্যে আমরা এগুলো আনার প্রক্রিয়া শুরু করেছি।’

বিএসএমএমইউতে এর আগে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের কিটের কার্যকারিতা পরীক্ষা করাতে এক মাসের বেশি সময় লেগেছিল। এ বিষয়ে ড. বিজন কুমার বলেন, ‘এবার অনেক দ্রুত করা সম্ভব হবে। কারণ এবার স্যাম্পল অনেক কম পরীক্ষা করা হবে। গতবার পরীক্ষা করা হয়েছিল ৫০০টি স্যাম্পল, এবার করা হবে ১২০টি। এবার অনেক কম সময় লাগতে পারে।’

দেশের বিদ্যমান করোনা পরিস্থিতি সম্পর্কে জানতে চাইলে ড. বিজন কুমার বলেন, ‘আমার কাছে মনে হচ্ছে, করোনা এখন ধীরে ধীরে উপশহর, গ্রামের দিকে ঢুকছে। ঢাকায় কিন্তু এখন কম। মানুষ যেহেতু ঈদের সময় বাড়ি গেছে, ভাইরাসটাও ধীরে ধীরে ওইদিকেই যাচ্ছে। এটার সম্ভাবনা বেশি।’

শীতের আগে করোনার ব্যাপক প্রভাব থেকেও মুক্তি পাওয়ার সম্ভাবনা আছে বলেও মনে করেন তিনি। ড. বিজন বলেন, ‘এখন কিন্তু করোনা ফুসফুসের চেয়ে কিডনি, পেটের সমস্যার দিকে বেশি যাচ্ছে।’

(ওএস/এসপি/আগস্ট ০৬, ২০২০)