রূপক মুখার্জি, নড়াইল : রাজধানীতে মাইক্রোবাস চাপায় নিহত তরুন পর্বতারোহী লোহাগড়ার রেশমা নাহার রত্নাকে (৩২) গ্রামের বাড়ি ধোপাদহ গ্রামে দাফন করা হয়েছে। শনিবার সকাল সাড়ে আটটায় নিজ বাড়িতে জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।

নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার কাশিপুর ইউনিয়নের ধোপাদহ গ্রামে রেশমা নাহার রত্নার বাড়ি। তিনি ওই গ্রামের বীরবিক্রম আফজাল হোসেন শিকদারের মেয়ে। গত শুক্রবার সকাল সাড়ে ৮ টার দিকে সাইকেল চালানোর সময় ঢাকার সংসদ ভবন এলাকায় মাইক্রোবাসের চাপায় নিহত হন রেশমা। গত শুক্রবার গভীর রাতে নিহত রেশমার লাশ নিজ বাড়িতে আনা হয়। এ সময় নিহতের স্বজনসহ প্রতিবেশিদের কান্নায় এলাকার বাতাস ভারী হয়ে ওঠে। অনেকেই কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন।

শনিবার সকালে লোহাগড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুকুল কুমার মৈত্র নিহতের মরদেহে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন। এসময় নিহত রেশমার আত্মীয়-স্বজনসহ নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ উপস্থিত ছিলেন।

পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, রেশমা তিন ভাই আর চার বোনের মধ্যে সবার ছোট। তিনি ঢাকার নিউমার্কেট এলাকায় আইয়ুব আলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করতেন। থাকতেন মিরপুর এলাকায় সরকারি কোয়ার্টারে। লোহাগড়া উপজেলায় স্কুল পর্যায়ের লেখাপড়া শেষ করে ঢাকার ইডেন মহিলা কলেজ থেকে মাস্টার্স পাশ করেন।

বাংলাদেশের কেওক্রাডং পর্বতে ওঠার মাধ্যমে রেশমা পর্বত অভিযান শুরু করেন। তিনি আশপাশের দেশেও পবর্ত পাড়ি দিয়েছেন। ভারতে নেহেরু ইনস্টিটিউট অব মাউন্টেনিয়ারিংয়ে প্রশিক্ষণ নিয়েছিলেন। রেশমা এভারেস্টের চূড়ায় ওঠার স্বপ্ন দেখছিলেন। সে জন্য প্রস্ততি নিচ্ছিলেন। কিন্তু নিয়তির নিষ্ঠুর পরিহাস রেশমার স্বপ্ন সড়ক দূর্ঘটনায় শেষ হয়ে গেলো। আত্মীয়-স্বজন ও শুভকাক্ষীদের কাঁদিয়ে না ফেরার দেশে চলে গেলেন তিনি। তার স্বজনরা রেশমার মৃত্যূকে দুর্ঘটনা বলতে রাজি নন। এটি হত্যাকান্ড। তারা রেশমা হত্যার বিচার চান ।

(আরএম/এসপি/আগস্ট ০৮, ২০২০)