ইন্দ্রজিৎ কুমার সাহা, কালিয়াকৈর (গাজীপুর) : গাজীপুরের কালিয়াকৈরে বাল্যবিয়ের প্রস্তুতিকালে তিন সন্তানের জনক বর ও কিশোরী কনেকে আটক করেছে পুলিশ। পরে ভ্রাম্যমান আদালত তাদের দুজনকে কারাদণ্ড প্রদান করেছেন। রবিবার (৯ আগস্ট) দুপুরে বর-কনে দুজনকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। 

সাজাপ্রাপ্তরা হলেন, কালিয়াকৈর উপজেলার ফুলবাড়িয়া উত্তরপাড়া গ্রামের মোজাম্মেল হকের ছেলে তারেক মিয়া (২৪) ও পাশের কাচিঘাটা গ্রামের আব্দুল কাদেরের মেয়ে রোজিনা আক্তার (১৬)। সে এবছর এসএসসি পরিক্ষায় উর্ত্তীর্ণ হয়েছেন।

ভ্রাম্যমান আদালত ও ভুক্তভোগী পরিবার সুত্রে জানা গেছে, তারেক মিয়া পেশায় ট্রাক চালক। তিনি ইতিপূর্বে আরো তিনটি বাল্য বিবাহ করেছেন। তাদের সংসার জীবনে এক ছেলে ও দুই মেয়ে রয়েছে। এদের মধ্যে এক স্ত্রী বিদেশ ও আরেক স্ত্রী বাবার বাড়ি চলে গেছেন। কিন্তু তারেক মিয়ার তিন স্ত্রী ও তিন সন্তান থাকার পরও ক্ষান্ত হননি। তিনি মোবাইল ফোনে ফুসলিয়ে পাশের কাচিঘাটা গ্রামের আব্দুল কাদেরের এসএসসি উত্তীর্ণ হওয়া মেয়ে রোজিনা আক্তারের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলেন। পরে তিনি বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে দীর্ঘদিন তাদের প্রেমের সম্পর্ক অতিবাহিত করে। এরমধ্যে তাদের সম্পর্কের বিষয়টি জানাজানি হলে একাধিক গ্রাম্য শালিসও করা হয়।

কিন্তু কোনো প্ররোয়ারা না করে তারা তাদের সম্পর্ক বজায় রেখেছে। সর্বশেষ গত বৃহস্পতিবার বিকেলে রোজিনা বিয়ের দাবীতে প্রেমিক তারেকের বাড়িতে উঠে। বিষয়টি জানাজানি হলে পরের দিন শুক্রবার স্থানীয় ইউপি সদস্য ছিদ্দিকুর রহমান ও স্থানীয় মাতাব্বররা ওই বাড়িতে যান। এ সময় প্রেমিক-প্রেমিকাকে বুঝিয়ে রোজিনাকে তার বাবার হাতে তোলে দেন। কিন্তু পরের দিন শনিবার সকালে রোজিনা আবারও তারেকের বাড়ি উঠে।

পরে স্থানীয় কিছু দুস্কৃতি লোক তাদের বিয়ের আয়োজন করেন। খবর পেয়ে কালিয়াকৈর থানাধীন ফুলবাড়িয়া পুলিশ ক্যাম্পের পুলিশ তারেক ও রোজিনাকে আটক করে। পরে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) আদনান চৌধুরীর নেতৃত্বে ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করেন। এসময় বর তারেক মিয়াকে দুই বছর সশ্রম কারাদন্ড এবং কনে রোজিনাকেও দুই বছর কারাদন্ড প্রদান করেন। রবিবার দুপুরে পুলিশ তারেককে গাজীপুর কারাগারে এবং রোজিনাকে কোনাবাড়ি দুস্থ ও কিশোরী উন্নয়ন কেন্দ্রে পাঠিয়েছে।

(আইএস/এসপি/আগস্ট ০৯, ২০২০)