স্পোর্টস ডেস্ক: পরপর দুই মৌসুমে স্প্যানিশ লা লিগা শিরোপা জেতার পর এবার সেটি খোয়া গেছে রিয়াল মাদ্রিদের দাপটের কাছে। একপ্রকার নিজেদের সম্পত্তি বানিয়ে ফেলা কোপা দেল রে’র ট্রফিটিও এবার ঘরে তুলতে পারেনি স্প্যানিশ ক্লাব বার্সেলোনা। সব হারিয়ে বার্সার সামনে এখন একটাই আশা; উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগ।

কিন্তু চলতি মৌসুমের ছন্নছাড়া পারফরম্যান্সের পর চ্যাম্পিয়নস লিগ নিয়েও খুব বেশি আশাবাদী হওয়ার সুযোগ নেই বার্সেলোনার সমর্থকদের জন্য। তার ওপর কোয়ার্টারে বার্সার প্রতিপক্ষ দুর্দান্ত ফর্মে থাকা বায়ার্ন মিউনিখ। যারা কি না চ্যাম্পিয়নস লিগে এখনও পর্যন্ত জিতেছে সবকয়টি ম্যাচ।

বার্সেলোনাও অবশ্য শেষ ষোলোর দ্বিতীয় লেগের ম্যাচটি জিতেছে ৩-১ গোলের ব্যবধানে। তবে প্রতিপক্ষের মাঠে প্রথম লেগের ম্যাচটি তারা ড্র করেছিল ১-১ ব্যবধানে। দুই লেগে দুই গোল হজম করাও বার্সার জন্য চিন্তার কারণ। বিশেষ করে বায়ার্নের অতি আক্রমণাত্মক ফুটবলের বিপক্ষে ঠিক কতটা শক্ত থাকতে পারবে কাতালুনিয়ান ক্লাবটি, তা নিয়ে সংশয় থেকেই যায়।

এরই মধ্যে জার্মান বুন্দেসলিগা ও জার্মান কাপ জিতে রাখা বায়ার্ন চ্যাম্পিয়নস লিগে নামবে ট্রেবল জয়ের আশায়। লকডাউনের পর খেলা ১৩টি ম্যাচের সবকয়টিতে জিতেছে তারা। কোয়ার্টার ফাইনালে আসার পথে শেষ ষোলোর দুই লেগ মিলে চেলসির জালে ৭ গোল দিয়েছে জার্মান চ্যাম্পিয়নরা। চ্যাম্পিয়নস লিগ জিতলেই এবার তাদের ট্রেবল পূরণ হয়ে যাবে।

বায়ার্নের এই অদম্য যাত্রার অন্যতম কারিগর পোলিশ স্ট্রাইকার রবার্ট লেভানডস্কি। চলতি মৌসুমে মাত্র ৪১ ম্যাচে ৫৩ গোল করেছেন তিনি। চ্যাম্পিয়নস লিগে খেলা ৮ ম্যাচে গোলসংখ্যা ১৩। আর মাত্র ৪টি গোল হলেও ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর এক আসরে করা সর্বোচ্চ গোলের রেকর্ডও নিজের করে ফেলবেন তিনি।

তবে শুধুমাত্র লেভানডস্কিকে নিয়ে ভাবছে না বার্সেলোনা। এমনটাই জানিয়েছেন ক্লাবটির ফ্রেঞ্চ ফরোয়ার্ড অ্যান্তনিও গ্রিজম্যান। তার কথা, ‘বায়ার্ন মানে শুধু লেভানডস্কি নয়। ওদের উইঙ্গাররাও আক্রমণে অনেক এগিয়ে যায়। মুলার, জিনাব্রিও খুব ভালো... লেভানডস্কি অনেক গোল করছে। তবে যেকোনো জায়গা থেকে বিপদ আসতে পারে।’

তাই বায়ার্নের শক্তির জায়গায় আঘাত করতে চান গ্রিজম্যান, ‘আমাদের নিজেদের শক্তির দিকে নজর দিতে হবে এবং সেমি-ফাইনালে ওঠার চেষ্টা করতে হবে। ওরা বল দখলে রেখে খেলতে অভ্যস্ত। ওদের জন্য কাজটা কঠিন করে তুলতে হবে এবং আমাদের নিজেদের খেলা খেলতে হবে। যতটা সম্ভব বল দখলে রাখার চেষ্টা করতে হবে।’

ওদিকে বায়ার্নের জার্মান মিডফিল্ডার লিওন গোরেৎজকা তো প্রায় বলেই দিয়েছেনন, বার্সা তারকা লিওনেল মেসিকে আটকানোর পথ জানা নেই তাদের। তার মতো আরও হাজারও মানুষ মেসিকে থামানোর পথ খুঁজছে জানিয়ে লিসবনে সংবাদমাধ্যমে গোরেৎজকা বলেছেন, ‘মেসিকে থামানোর পথ হাজারও মানুষ খুঁজছে। তবে এটা ভালো। ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর বিপক্ষে খেলার পর এখন গত দশকের আরেক সেরা খেলোয়াড়ের বিপক্ষে খেলতে পারা দারুণ অভিজ্ঞতা হবে।’

ট্রেবল জয়ের ব্যাপারে তার ভাষ্য ছিল, ‘এখন আর কোনো সহজ পথ নেই। আমরা এখন পর্তুগালে আছি এবং চ্যাম্পিয়নস লিগে নকআউট ম্যাচের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছি। আমরা এর জন্য প্রস্তুত আছি। নকআউট ম্যাচগুলো দারুণ হয়ে থাকে। আমরা এখন দলগত ফুটবল খেলছি। যেখানে একক নৈপুণ্যগুলো বেশ কাজে দিচ্ছে।’

দুই দলের মুখোমুখি লড়াইয়ে অবশ্য বেশ এগিয়ে জার্মান জায়ান্টরা। বার্সেলোনার বিপক্ষে এখনও পর্যন্ত ১০ ম্যাচ খেলে তারা জিতেছে ৬টিতে, হেরেছে মাত্র ২টি, ড্র হয়েছে বাকি ২ ম্যাচ। এবার এগারতম ম্যাচটিতে কী হয় তা দেখার অপেক্ষায় রয়েছে গোটা ফুটবল বিশ্ব।

বহুল প্রতীক্ষিত এই কোয়ার্টার ফাইনাল ম্যাচটি হবে বাংলাদেশ সময় শুক্রবার দিবাগত রাত ১টায়। বাংলাদেশে বসে সরাসরি টিভিতে দেখা যাবে ম্যাচটি। সেজন্য খোলা রাখতে হবে সনি টেন ২ ও সনি টেন ৩ এর পর্দা।

(ওএস/পিএস/১৪ আগস্ট, ২০২০)