স্টাফ রিপোর্টার : শিগগিরই কিতাব বিভাগের কার্যক্রম চালু ও পরীক্ষা নেয়ার সুযোগ করে দিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে আবেদন জানিয়েছে কওমি মাদরাসাগুলো। সোমবার (১৭ আগস্ট) সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিবের কাছে আবেদনপত্রটি পৌঁছান কওমি মাদরাসার একটি বোর্ড জাতীয় দ্বীনি মাদরাসা শিক্ষাবোর্ড, বাংলাদেশের একটি প্রতিনিধি দল।

আবেদনপত্র হস্তান্তর ও মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলামের সঙ্গে বৈঠক শেষে জাতীয় দ্বীনি মাদরাসা শিক্ষাবোর্ডের সহ-সভাপতি মাওলানা ইয়াহইয়া মাহমুদ সাংবাদিকদের বলেন, ‘কোভিড-১৯ এর কারণে কওমি মাদরাসা বন্ধ ছিল, মাদরাসা খোলার ব্যাপারে জাতীয় দ্বীনি মাদরাসা বোর্ডের পক্ষ থেকে আমরা গত ২ জুলাই আবেদন করেছিলাম। ওই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রী স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর মাধ্যমে আমাদের জানান, ১২ জুলাই থেকে হিফজ বিভাগ চালু হবে। ওই আবেদনের মধ্যে কিতাব বিভাগ চালু করারও অনুমতিও চাওয়া হয়েছে। এটা যেহেতু তখন হয়নি। এজন্য আমরা আবার যোগাযোগ করে মন্ত্রিপরিষদ সচিবের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বরাবর আবার একটা আবেদন পাঠালাম।’

তিনি বলেন, ‘উনি (মন্ত্রিপরিষদ সচিব) এটা গ্রহণ করলেন। আমাদের উনি বলেন, আমি দ্রুত মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করে মেসেজ দেয়ার চেষ্টা করব।’

‘আমরা আবেদনে লিখেছি, কওমি মাদরাসার কিতাব বিভাগের শিক্ষা কার্যক্রম চালু এবং আমাদের যে পরীক্ষাগুলো মাস্টার্স ও ডিগ্রি মানের পরীক্ষা, মাদরাসার ঘরোয়া পরীক্ষা- এই তিনটি পরীক্ষা আমরা আয়োজন কতে পারিনি। এই পরীক্ষাগুলো যাতে আমরা স্বল্প সময়ের মধ্যে আয়োজন করতে পারি এজন্য একটু সুযোগ সৃষ্টি করে দেয়ার আবেদন করেছি।’

অন্য স্তরের শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ আছে। সেখানে আপনারা কীভাবে শিক্ষা কার্যক্রম চালাবেন- এ বিষয়ে বোর্ডের সহ-সভাপতি বলেন, ‘আপনারা ইতোমধ্যে জানতে পেরেছেন, আলিয়া মাদরাসার পরীক্ষার, কামিল পরীক্ষার অনুমতি দেয়া হয়েছে, সেটা মনে হয় আজকেই হচ্ছে। আমাদের কওমি মাদরাসাতে স্বাস্থ্যবিধি মানাটা যত সহজ অন্য কোথাও এত সহজ নয়। কারণ আমাদের ৯৯ শতাংশ শিক্ষার্থীই আবাসিক। একবার যারা আসে তারা আর সহজে বের হয় না।’

ইয়াহইয়া মাহমুদ বলেন, ‘আরেকটা জিনিস হলো আমাদের ছেলেপেলেরা ওজুর সাথে থাকে। পাঁচ ওয়াক্ত নামাজে তো ওজু করেই, ক্লাসে বসতেও ওজু করে। হ্যান্ড স্যানিটাইজারে হাত ধোয়া, মুখ ধোয়া এসমস্ত বিষয়গুলো যতটা কওমি মাদরাসায় মেইনটেইন করা হয়, এটা আর কোনো জায়গায় এ রকম হয় না। এজন্য আমরা আশ্বস্ত করেছি মন্ত্রিপরিষদ সচিব মহোদয়কে, আপনি আশ্বস্ত থাকতে পারেন, হেফজখানা খুলে দেয়ার জন্য আজ পর্যন্ত কোথাও থেকে ভাইরাস ছড়ানোর রিপোর্ট আপনারা পাননি।’

‘এই কিতাব বিভাগ চালু করার পরও ইনশাআল্লাহ এমন কোনো রিপোর্ট আপনারা পাবেন বলে আশা করি না। আশা করি ভালোই হবে। আরেকটা জিনিস আমরা বলব কোরাআনে কারিমের তেলাওয়াতের সাথে সাথে যথন হাদিসের পড়া চালু হবে আল্লাহ তা’য়ালা কোভিড-১৯ পুরোপুরি দূর করে দেবেন ইনশাআল্লাহ।’

কবে নাগাদ পরীক্ষা নিতে চাইছেন এবং কিতাব বিভাগের কার্যক্রম চালু চাইছেন- জানতে চাইলে সহ-সভাপতি বলেন, ‘আমরা চাচ্ছি অতি দ্রুত সময়ের মধ্যে। আমরা আশা করছি আগস্টের শেষ নাগাদ পরীক্ষার তারিখ ঘোষণা করতে পারব, এ রকম যাতে করতে পারি, এজন্য আমরা আমরা আবেদন করেছি।’

এ সময় জাতীয় দ্বীনি মাদরাসা শিক্ষাবোর্ডের সহ-সভাপতি মুশতাক আহমদ, মহাসচিব মুফতি মোহাম্মদ আলী উপস্থিত ছিলেন।

(ওএস/এসপি/আগস্ট ১৭, ২০২০)