অমল তালুকদার, পাথরঘাটা (বরগুনা) : বঙ্গোপসাগরের গভীরে ইঞ্জিন বিকল হয়ে তিন দিন ধরে ভাসতে থাকা এফবি তিনবোন ট্রলারের মাঝিমাল্লা সহ ট্রলারটি উদ্ধার করা হয়েছে।

রবিবার বিকেলে পাথরঘাটার বৃহত্তম মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে (বিএফডিসি) ঘাটে এসে পৌঁছানোর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জেলা ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি গোলাম মোস্তফা চৌধুরী।

এর আগে, বৃহস্পতিবার (১৩ আগস্ট) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে পাথরঘাটা থেকে প্রায় ৩'শ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিম বঙ্গোপসাগরে এফবি তিনবোন নামক ট্রলারের পাখা ভেঙে বিকল হয়ে যায়। তখন থেকেই দীর্ঘ ৭২ ঘন্টা গভীর সমুদ্রে ভাসতে থাকে ট্রলারসহ ১৭ জন মাছ ধরা জেলে।

উদ্ধার হওয়া ওই ট্রলারের মাঝি জাহাঙ্গীর জানান, ‘ট্রলারটির ইঞ্জিনপাখা ভেঙে যাওয়ার পর থেকে সাগরবক্ষে ভাসতে শুরু করে। এক পর্যায়ে ট্রলারে থাকা ত্রেপল উড়িয়ে বাতাসে বাদাম লাগাই।

বঙ্গপসাগরে পশ্চিমমুখী জলস্রোত থাকায় তাদের ট্রলারটি আস্তে আস্তে ভারতের দিকে যেতে শুরু করে। এ ঘটনায় তারা খুব ভয়ে পেয়েছিলেন বলেও জানান। পরে বাংলাদেশের মোবাইল নেটওয়ার্কের‌ আওতার মধ্যে আসলে তাদের কোম্পানিকে (ট্রলার মালিক) ফোন দিলে অপর একটি ট্রলারের সহযোগিতায় উদ্ধার করে পাথরঘাটা নিয়ে আসা হয়।’

ওই ট্রলারের সহকারী মাঝি রাজ্জাক বলেন, ‘ট্রলারের সেপ (পাখা) ভেঙে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই আমাদের ভয়ে সকলের খাওন বন্ধ হয়ে যায়। সবাই প্রস্তত ছিলাম। ট্রলার যখন ভাসতেছিল তখন আশপাশের অনেক ট্রলারে জেলেদের কাছে সহযোগিতা চেয়েছি কিন্তু কেউ আগাইয়া আয় নাই। সাগরে আপন কেউ নাই আল্লাহ ছাড়া। ’

এফবি তিনবোন ট্রলারের মালিক হেমায়েত মল্লিক সাংবাদিকদের জানান, শনিবার (১৫ আগস্ট) রাতে সুন্দরবনের মেয়ারআলী পয়েন্টে আসার পর মোবাইল নেটওয়ার্ক পাওয়ায় মাঝি আমাকে ফোন দিলে আমি রোববার (১৬ আগস্ট)সকালে ২০ জেলেসহ এফবি হাজেরা নামে একটি ট্রলার ওই জেলেদের উদ্ধারের জন্য পাঠিয়ে দেই।

এদিকে আবহাওয়ার অবস্থা খারাপ থাকায়‌ উপকূলীয় অঞ্চলের অনেক জেলে ট্রলার নিরাপদ আশ্রয়ে রয়েছে বলে জেলা ট্রলারমালিক সূত্রে জানা গেছে।

গোটা উপকূলজুড়ে বাতাস এবং ভারী বর্ষণ অব্যাহত রয়েছে। জেলে পল্লীসহ খেটেখাওয়া পরিবারগুলোতে অভাব বাড়ছে।

(এটি/এসপি/আগস্ট ১৭, ২০২০)