গোবিন্দগঞ্জ (গাইবান্ধা) প্রতিনিধি : গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে স্কুল ছাত্রী প্রিয়া ধর্ষণ ও হত্যা মামলার আসামীদের পুলিশ ১০ দিনেও গ্রেফতার করতে পারেনি। ফলে বাদীসহ তার পরিবারের লোকজন নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে।

মামলা সূত্রে জানা গেছে, গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার ফুলবাড়ি ইউনিয়নের ছোট সাতাইল বাতাইল গ্রামের মৃত নুর আলমের স্কুল পড়ুয়া মেয়ে জেসমিন আকতার প্রিয়াকে (১৫) পৌরসভার বোয়ালিয়া নয়াপাড়া গ্রামের রহিম উদ্দিনের বিবাহিত ছেলে মোমিন মিয়া (৩৩) স্কুলে যাওয়া- আসার সময় বিভিন্ন কু-প্রস্তাব দিত। এক পর্যায়ে মোমিন মিয়া বিয়ের প্রস্তাব দিলে সে বিবাহিত হওয়ায় প্রিয়া ও তার অভিভাবকরা প্রস্তাবটি প্রত্যাখান করলে সে আরও ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে। এতে বাধ্য হয়ে প্রিয়া স্কুলে যাওয়া বন্ধ করে দেয়।

এর জের ধরে মোমিন মিয়া ক্ষুব্ধ হয়ে গত ১৮ মার্চ সন্ধ্যায় দলবল নিয়ে বাড়ি থেকে প্রিয়াকে অপহরণ করে নিয়ে যায়। অপহরণের পর থেকে মোমিন মিয়া প্রিয়াকে বিভিন্ন স্থানে আটকে রেখে দিনের পর দিন তাকে ধর্ষণসহ শারীরিক নির্যাতন করে। এরই এক পর্যায়ে প্রিয়া অসুস্থ হয়ে পড়লে মোমিন মিয়া ও তার সাঙ্গ-পাঙ্গরা গত ৬ জুলাই তাকে গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করলে পরদিন ৭ জুলাই প্রিয়া মারা যায়। খবর পেয়ে পুলিশ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে প্রিয়ার লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য গাইবান্ধা মর্গে প্রেরণ করে।

নিহত প্রিয়ার মা মরিয়ম বেগম বাদি হয়ে ওই দিন রাতে এ ঘটনায় থানায় মামলা দায়ের করতে গেলে পুলিশ মামলা না নিয়ে সময় ক্ষেপণ করে। পুলিশ মামলা নিতে গড়িমসি করায় মরিয়ম বেগম গাইবান্ধা আদালতে গেলে গাইবান্ধা জেলা জজ আদালতের আ্যাডভোকেট ফৈযী আল ফারাহ খান বাদীর পক্ষে গত ২৩ জুলাই গাইবান্ধা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুন্যালে একটি পিটিশন মামলা দায়ের করেন। মামলার পর বিচারক বিয়য়টি নিয়মিত মামলা হিসেবে রেকর্ড করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য মামলার নথিপত্র গোবিন্দগঞ্জ থানার ওসির নিকট প্রেরণ করলে গত ৬ আগস্ট এ ঘটনায় গোবিন্দগঞ্জ থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা দায়ের করা হয়। মামলা নং ১৫।

এদিকে মামলার বাদী অভিযোগ করে জানান, মোমিন মিয়া প্রিয়াকে কুপিয়ে হত্যা করে তার লাশ কৌশলে গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রেখে পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় থানায় মামলা করতে গেলে পুলিশ মামলা না নিয়ে তার সঙ্গে দূর্ব্যবহার করে। হত্যার ১০ দিন পেরিয়ে গেলেও পুলিশ আসামীদের গ্রেফতার না করায় তারা এখন নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে।

এ ব্যাপারে গোবিন্দগঞ্জ থানার ওসি একেএম মেহেদী হাসান জানান, ওই ঘটনায় আদালতের নির্দেশে থানায় মামলা নেওয়া হয়েছে। বিষয়টি তদন্তাধীন রয়েছে- ময়নাতদন্ত রিপোর্ট পাওয়ার পর পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

(এস/এসপি/আগস্ট ১৭, ২০২০)