রূপক মুখার্জি, নড়াইল : নড়াইলের লোহাগড়া ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান বদর খন্দকার হত্যা মামলার চার্জশিট আদালতে দাখিল করা হয়েছে। দাখিলকৃত চার্জশিটে এজাহারভুক্ত ১৬ জন আসামীসহ মোট ২৬ জনকে অভিযুক্ত করে এ মামলার চার্জশিট দাখিল করা হয়েছে এবং হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত না থাকায় মামলা থেকে একজনকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। সাবেক চেয়ারম্যান বদর হত্যাকান্ডের দীর্ঘ পাঁচ মাস পর মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এস আই মিলটন কুমার দেবদাস গত ৬ জুলাই আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। এদিকে, চাঞ্চল্যকর বদর হত্যা মামলার চার্জশিট (অভিযোগপত্র) আদালতে দাখিল হওয়ায় মামলার বাদি সন্তোষ প্রকাশ করেছেন।

মামলার চার্জশিট সূত্রে জানা গেছে, নড়াইলের লোহাগড়া ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান বদর খন্দকার চলতি বছরের গত ২৪ ফেব্রুয়ারী বিকালে কালনা ঘাট এলাকার নিজ ইট ভাটা থেকে মোটরসাইকেল যোগে বাড়ি ফেরার পথে টি চরকালনা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে পৌঁচ্ছালে পূর্ব থেকে ওৎ পেতে থাকা আসামীরা তার গতিরোধ করে এলোপাতাড়িভাবে কুপিয়ে গুরুতর জখম করে।

এলাকাবাসী তাকে উদ্ধার করে প্রথমে লোহাগড়া হাসপাতালে নিয়ে আসেন। পরে তার অবস্থার অবনতি হলে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়। নিহত বদর চরবগজুড়ি গ্রামের মরহুম ময়ের খন্দকারের ছেলে। এ ঘটনায় নিহত বদরের স্ত্রী নাজমিন বেগম বাদী হয়ে ২৫ ফেব্রুয়ারী ১৬ জনের নাম উল্লেখ করে লোহাগড়া থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও লোহাগড়া থানার তৎকালীন এস আই মিলটন কুমার দেবদাস দীর্ঘ পাঁচ মাস তদন্ত শেষে গত ৬ জুলাই এজাহারভুক্ত ১৬ জনসহ এজাহার বহির্ভূত ১০ জনের নাম উল্লেখ করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত না থাকায় মামলা থেকে রফিকুল ইসলাম নামের একজন আসামীকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে । রফিকুল চরকালনা গ্রামের মৃত আব্দুল হাকিমের ছেলে।

চার্জশিটভুক্ত আসামীরা হলেন, লোহাগড়া ইউপির বর্তমান চেয়ারম্যান নজরুল শিকদার , ইবাদত শিকদার, জাকারিয়া শিকদার, এনায়েত শিকদার, সুজন মোল্যা, আব্দুল্লাহ আল আজাদ সুজন, ফরিদ শেখ, পিকুল শেখ, নজরুল শেখ, রোমান শেখ, আকবর খন্দকার, লাবলু মীর ওরফে লাবু, মতিউর রহমান মুন্না, তারু মোল্যা, সুরুজ মোল্যা ও বাদশা শেখ।

এ ছাড়া তদন্তকারী কর্মকর্তা দীর্ঘ তদন্ত করে এজাহার বহির্ভূত ১০ জনকে অভিযুক্ত করে চার্জশিট দাখিল করেছেন। তারা হলেন, কবির মোল্যা, খায়ের শেখ, ইয়ার আলী, লায়েব আলী মীর, ওমর আলী মীর, শাহিনুর শেখ, রুহুল আমিন, মোহাম্মদ আলী, বাবু মোল্যা ও আকরাম মোল্যা।

এলাকায় আধিপত্য বিস্তার ও আগামী ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আসামীরা পরস্পর যোগসাজসে কয়েকদফা গোপন বৈঠক করে পূর্ব পরিকল্পনা মোতাবেক বদর খন্দকারকে হত্যা করে বলে চার্জশিটে উল্লেখ করা হয়েছে ।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা আদালতে চার্জশিট দাখিল করায় মামলার বাদী নাজমিন বেগম প্রতিক্রিয়ায় বলেন, পুলিশ হত্যাকান্ডে জড়িতদের শনাক্ত করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেছেন। এ মামলার বিচারিক কার্যক্রম শুরু হোক-এটাই আমার চাওয়া।

(ওএস/এসপি/আগস্ট ১৯, ২০২০)