স্টাফ রিপোর্টার, দিনাজপুর : এক সময়ের সোনালী আঁশ পাটের খ্যাতি আর ঐতিহ্য আবারও ফিরে এসেছে দিনাজপুরে। পাটের ন্যায্য দাম পাওয়ায় এ জেলার চাষীদের পাট চাষে আগ্রহ বেড়ছে। এ বছর লক্ষ্য মাত্রার অধিক পাট চাষ হয়েছে। পাটের বাম্পার ফলনও পেয়েছেন কৃষক। দামও পাচ্ছেন, ভালো।

দিনাজপুরের মাঠে-ঘাটে এখন পাট কর্তন,জাক দেয়া,ধোয়া আর উভানোর কাজ চলছে। এ দৃশ্য দেখেই বোঝা যাচ্ছে, সোনালী আঁশ পাটের খ্যাতি আর ঐতিহ্য ফিরে এসেছে দিনাজপুরে। এমনি সুখবর দিলেন, দিনাজপুর সদর উপজেলার চাঁদগঞ্জ এলাকার কৃষক মকবুল হোসেন। একই কথা জানালেন, খানসামা উপজেলার কাচিনিয়া এলাকার কৃষক গোবিন্দ দাস। সরজমিনে ঘুরে পাওয়া গেলো, ‘ফিরে এসেছে পাটের সোনালী ঐতিহ্য’ এমন অসংখ্য চিত্র।

এবার পাটের ফলনও হয়েছে ভালো। সদর উপজেলার রামডুবি হাট এবং খানসামা উপজেলা হাটে পাট বিক্রি করতে আসার কয়েকজন কৃষকের সাথে কথা বলে জানা গেলো, এবার পাটের দামও ভালো। বাজারে পাট বিক্রি হচ্ছে, এক হাজার ৭’শ টাকা থেকে ২ হাজার টাকা মন দরে।

দিনাজপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ মো. তৌহিদুল ইকবাল জানালে, জেলায় চলতি মৌসূমে ৭ হাজার ৩’শ ৫২ হেক্টর জমিতে পাট চাষের ল্যমাত্রা নির্ধারণ করা হলেও অতিরিক্ত ৭’শ ৭১ হেক্টর বেশী জমিতে পাট চাষ হয়েছে।দেশি জাতের পাটের মধ্যে বিজেসি, সিভিএল-১, সিভিই-৩, সিসি-৪৫, ডি-১৫৪, বিজিআরআই-১৫ জাতের পাট চাষ এবার বেশি হয়েছে। তোষা জাতের মধ্যে সোনার বাংলা ৯৮ ও ৯৭, তাজ মহল ৩ ও ৪, লাউ ছড়া ১ ও ২ জাতের পাট রয়েছে।হেক্টর প্রতি দেশী ৮ দশমিক ৫৫ এবং তোষা ১০ দশমিক ৯০ বেল উৎপাদন ল্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।

এ অনুযায়ী জেলায় এবার পাট উৎপাদন নির্ধারণ করা হয়েছে ৭৩ হাজার ১’শ ২১ বেল। কিন্তু উৎপাদন হবে আরও বেশী বলে জানিয়েছে কৃষি বিভাগ। কৃষি বিভাগের মতে,কৃষককে রিবোন রেডিং পদ্ধতিতে পাট পচানো শেখানো হচ্ছে। এতে পাটের গুনগত মান বজায় থাকছে। পাশাপাশি আধুনিক পদ্ধতিতে পাট চাষ,পাট বীজ উৎপাদন ও সংরক্ষণের কলা-কৌশল,পাট পচন এবং পাটের গ্রেডিং নিয়ে পাট চাষী প্রশিক্ষণ এবং কর্মশালা’র আয়োজন করা হচ্ছে।

সরজমিনে দেখা গেছে, পাটের সোনালী অতীত ফিরিয়ে আনতে পাট চাষের প্রতি আগ্রহ বাড়ছে কৃষকের। পাটের ন্যায্য মূল্য পেলে এ অঞ্চলে পাট চাষের পরিধি আরও বেড়ে যাবে এমনটাই মন্তব্য করেছেন কৃষিবিদরা।

(এস/এসপি/আগস্ট ২০, ২০২০)