সালথা (ফরিদপুর) প্রতিনিধি : ফরিদপুরের সালথায় গ্রাম্য দলীয় বৈঠককে কেন্দ্র করে দু-দলের সংঘষ আহত অন্তত ৪০ জন ও অর্ধসতাধীক বাড়িঘর ভাংচুরের ঘটনা ঘটেছে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনা স্থলে গিয়ে রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে।

স্থানীয় সুত্রে জানা যায়, উপজেলার ভাওয়াল ইউনিয়নের ভাওয়াল গ্রামে গতকাল শুক্রবার ২১ আগস্ট রাতে লুৎফর মাতুব্বরের বাড়ীতে ভাওয়াল ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ওহাব মাতুব্বারের দলের এক গ্রাম্য দলীয় বৈঠক হয়।

তার সুত্র ধরে আজ শনিবার সকাল ১০ টায় ভাওয়াল ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ওহাব মাতুব্বারের সমর্থকদের সাথে আওয়ামীলীগ সমর্থীত ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ওহিদুজ্জামানের সমর্থক ভাওয়াল গ্রামের বাসিন্দা মুকা মাতুব্বরের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের সৃষ্টি হয়।

এসময় উভয়পক্ষের লোকজন দেশীয় অস্ত্র ঢাল-কাতরা, সড়কী-ভেলা, রামদা ও ইটপাটকেল নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। প্রায় ২ ঘন্টা ব্যাপি চলা সংঘষে উভয় দলের অন্তত ৪০ জন আহত হয় এছাড়া ৫০ টির ও বেশি বাড়ীঘর ভাংচুর ও গরু- ছাগল পাট পিঁয়াজসহ বসতঘরের মালামাল লুট করে নিয়ে যায় সংঘর্ষকারীরা।

গুরুত্বর আহতদের নগরকান্দা স্বাস্থ্য কেন্দ্র ও ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। বাকীদের স্থানীয় ভাবে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।

এদিকে আধিপত্য বিস্তার বা গ্রাম্য দলাদলি নিয়ে সংঘর্ষে জড়ানো রীতিমতো ঐতিহ্যে পরিণত হয়েছে সালথা উপজেলায়। পান থেকে চুন খসে পড়লেই দা, লাঠি, টেঁটা, রামদা,বল্লম, ঢাল সরকির মতো দেশীয় মারণাস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়া যেন নিত্য দিনের সঙ্গী। দীর্ঘদিন যাবৎ চলা এসব গ্রাম্য সংঘর্ষে প্রাণ যাচ্ছে অনেকের। আহত হয়ে পঙ্গুত্ব বরণ করছেন অনেকে। এছারা বাড়ীঘর ভাংচুরসহ লুট করে নেয়ার ঘটনা ও ঘটছে প্রতিটি সংঘর্ষে।

সাধারন জনগনের ভাষ্যমতে, এলাকায় যার আধিপত্য থাকে তিনি আর্থিকসহ নানা সুবিধা ভোগ করেন। এর ফলে ছোট-খাটো ঘটনাগুলো সংঘর্ষে রূপ নেয়। প্রতিটি সংঘর্ষের ঘটনায় থানায় মামলা হয়। আর ওই সব মামলায় গ্রাম্য মাতুব্বরদের কারনে ন্যায় বিচার থেকে বঞ্চিত হন সাধারণ মানুষ।

সংঘষের বিষয়ে সালথা থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ বলেন, সংঘর্ষের খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে শর্টগানের ১৭ রাউন্ড রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এলাকা শান্ত রাখতে পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।

(এস/এসপি/আগস্ট ২৪, ২০২০)