টাঙ্গাইল প্রতিনিধি : টাঙ্গাইলের কালিহাতীস্থ বঙ্গবন্ধু টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের ছাত্রী হোস্টেলে দুর্ধর্ষ চুরি সংঘটিত হয়েছে। করোনাকালীন সময়ে কলেজ ও হোস্টেল বন্ধ থাকায় হোস্টেল থেকে কয়েক লাখ টাকার মালামাল চুরি হয়।

কলেজ সূত্র জানায়, বৃহস্পতিবার (২৭ আগস্ট) বিকালে চুরির ঘটনা জানার পর শুক্রবার (২৮ আগস্ট) ছাত্রীরা হোস্টেলে আসেন। হোস্টেলের ম্যনেজারের দয়িত্বপ্রাপ্ত ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শেষ বর্ষের শিক্ষার্থী দিপা সমাদ্দার, অ্যাপারেল ডিপার্টমেন্টের শেষ বর্ষের শিক্ষার্থী সুরাইয়া সুলতানা, অ্যাপারেল ২য় বর্ষের শিক্ষার্থী সুমি, ফেব্রিক ডিপার্টমেন্টের ৩য় বর্ষের শিক্ষার্থী আম্বিয়া আক্তার আঁখি সহ অনেকেই জানান, গত ১৬ মার্চ কলেজ বন্ধ ও হোস্টেল ছাড়ার নির্দেশ আসার পর শুধুমাত্র প্রয়োজনীয় কয়েকটি কাপড় নিয়ে তারা সবাই বাড়ি গিয়েছিলেন।

খবর পেয়ে হোস্টেলে এসে তারা দেখতে পান, তাদের থাকার ৭টি কক্ষ ও ডাইনিং রুমের জিনিসপত্র তছনছ হয়ে আছে। সবগুলো ঘরেই ছাত্রীদের কাপড়, বইপত্র, প্রয়োজনীয় জিনিস ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে। ছাত্রীদের কাপড়-চোপর, নগদ টাকা, দুটি ল্যাপটপ, একটি ডেক্সটপ কম্পিউটার, প্রায় ৩০টি টেবিল ফ্যান, চার্জার ফ্যান, রুমের লাইট, থালা-বাসন, বেশ কয়েকটি ইলেকট্রনিক আয়রণ, কয়েকটি ইলেকট্রনিক স্টোভ, গ্যাসের চুলা। ছাত্রীদের লাগেজ থেকে অ্যাকাডেমিক ও পূর্ববর্তী শিক্ষার সার্টিফেকেটসহ প্রয়োজনীয় কাগজপত্রও নিয়ে গেছে চোরেরা। এছাড়া বাথরুমের ফিটিংসগুলোও চুরি হয়ে গেছে।

হোস্টেলের নাইটগার্ড মো. জাকির হোসেন বিপ্লব জানান, কলেজের নিজস্ব সাবস্টেশন নষ্ট থাকায় প্রতিষ্ঠানটি দুই মাস ধরে বিদুুৎবিহীন রয়েছে। হোস্টেলে ছাত্রী না থাকায় তারা বাইরে থেকে টর্চ দিয়ে দেখা-শোনা করতেন। কবে বা কোনদিন চুরির ঘটনা ঘটেছে তা তারা বলতে পারছেন না।

হোস্টেল সুপার তোহপা আক্তার বলেন, আমি মূলত কলেজের ফোরম্যানের দায়িত্বে রয়েছি। পাশাপাশি ছাত্রী হোস্টেলের সুপারের অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করছি। চুরির বিষয়টি জানার পর উর্ধতন কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করে বিষয়টি থানা পুলিশকে অবগত করেছি। অধ্যক্ষ কলেজের বাইরে থাকায় কোন ব্যবস্থা নেয়া যাচ্ছে না ।

এ বিষয়ে অধ্যক্ষ মো. বকতিয়ার হোসেনের সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি প্রথমে অসুস্থতার কথা বলে এড়িয়ে যান। পরে তিনি জানান, থানা পুলিশের সাথে এ বিষয়ে কথা হয়েছে। তিনি কলেজে আসার পর ছাত্রীদের সাথে কথা বলে তাদের কী কী ক্ষতি হয়েছে সে বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিবেন।

তিনি আরও জানান, গত ৭দিন আগেও হোস্টেল সুপার হোস্টেলের ভেতরে ঢুকে সবকিছু ঠিকঠাক দেখেছেন। এই ৭দিনের মধ্যেই সম্ভবত কোন এক সময় চুরির ঘটনা ঘটেছে।

কালিহাতী থানার অফিসার ইনচার্জ(ওসি) হাসান আল মামুন জানান, বিষয়টি মৌখিকভাবে জানানো হলে তিনি ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়েছিলেন। দীর্ঘদিন কলেজ এবং হোস্টেল বন্ধ থাকার কারণে ঠিক কবে চুরি হয়েছে সেটা বলা যাচ্ছে না। লিখিত অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

(আরকেপি/এসপি/আগস্ট ২৯, ২০২০)