স্বাস্থ্য ডেস্ক : বিশ্বে এখন আতঙ্কের নাম করোনাভাইরাস। প্রাণঘাতী এ ভাইরাস থেকে বাঁচতে ভ্যাকসিনের দিকে তাকিয়ে আছে বিশ্ববাসী। বিভিন্ন দেশের বিজ্ঞানীরা ইতোমধ্যে ভ্যাকসিন উন্নয়নের কাজ অনেকটাই এগিয়ে এনেছেন।

তবে ভ্যাকসিন হাতে আসার আগেই করোনার চিকিৎসায় ‘জীবনদায়ী’ ওষুধের তালিকায় জায়গা করে নিয়েছে বেশ কয়েকটি কম ডোজের স্টেরয়েড। এই তালিকায় রয়েছে হাইড্রোকর্টিসোন, ডেক্সামিথাসোন বা মিথাইল প্রেডনিসোলোনের মতো স্টেরয়েড। আর এটা ব্যবহারে সমর্থন দিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)।

৭টি আন্তর্জাতিক ট্রায়ালের প্রতিবেদন অনুযায়ী, প্রায় ৬৮ শতাংশ সঙ্কটজনক করোনা রোগী কর্টিকোস্টেরয়েড প্রয়োগের ফলে মৃত্যুর হাত থেকে বেঁচে ফিরেছেন। এর আগে একই ভাবে সঙ্কটজনক করোনা রোগীর চিকিৎসায় অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি স্টেরয়েড ডেক্সামেথাসোনের কার্যকারিতা পরীক্ষা করে দেখেছেন অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা।

তারা জানান, এই স্টেরয়েড প্রয়োগ করে ভেন্টিলেশনে থাকা রোগীদের মৃত্যুর হার প্রায় ৪১ শতাংশ কমানো গেছে। এই ওষুধের প্রয়োগে অক্সিজেনের সাহায্য নেয়া গুরুতর অসুস্থ করোনা আক্রান্তদের মৃত্যুর হার কমেছে প্রায় ২৫ শতাংশ এবং স্থিতিশীল করোনা রোগীদের মৃত্যুর হার প্রায় ১৩ শতাংশ কমেছে।

ডেক্সামেথাসোনের কার্যকারিতা সম্পর্কে অক্সফোর্ডের বিজ্ঞানীদের বলার আগে থেকেই ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব মেডিকেল রিসার্চের গাইডলাইনেও করোনার চিকিৎসায় ‘মিথাইল প্রেডনিসোলন’ নামের একটি স্টেরয়েড প্রয়োগের পরামর্শ দেয়া হয়েছিল।

ব্রিটিনের ব্রিস্টল বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল স্ট্যাটিসটিকস অ্যান্ড এপিডেমিওলজি বিভাগের অধ্যাপক জোনাথান স্টার্নের বলেন, স্টেরয়েডের খরচ কম এবং এগুলো বিশ্বের প্রায় সর্বত্রই সহজলভ্য। ব্রিটেন, যুক্তরাষ্ট্র, ব্রাজিল, ফ্রান্স, চীন, স্পেন ও কানাডার গবেষকরা করোনা চিকিৎসায় স্টেরয়েডের কার্যকারিতা পরীক্ষা করে দেখেছেন।

আমেরিকান মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের (এএমএ) একটি প্রতিবেদনে করোনা চিকিৎসায় স্টেরয়েডের ইতিবাচক কার্যকারিতা দাবি করেছেন বিজ্ঞানীরা।

এ বিষয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ক্লিনিক্যাল কেয়ার লিড জ্যানেট ডিয়াজ জানান, সঙ্কটজনক করোনা রোগীদের চিকিত্সায় স্টেরয়েডের ব্যবহারকে জোরালোভাবেই সমর্থন করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। এ কারণে স্টেরয়েডের ব্যবহারের নির্দেশিকাতেও পরিবর্তন আনা হচ্ছে।

(ওএস/এসপি/সেপ্টেম্বর ০৪, ২০২০)