স্টাফ রিপোর্টার : হেফাজতে ইসলামের আমির আল্লামা শাহ আহমদ শফী মারা গেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। শুক্রবার (১৮ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় রাজধানীর আসগর আলী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। হেফাজতে ইসলামের ঢাকা মহানগরীর যুগ্ম-মহাসচিব মাওলানা ফজলুল করিম কাসেমী মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছেন।

বৃহস্পতিবার (১৭ সেপ্টেম্বর) রাতে একদল শিক্ষার্থীর আন্দোলনের মুখে হাটহাজারী দারুল উলুম মুঈনুল ইসলাম মাদ্রাসার মহাপরিচালক (মুহতামিম) পদ থেকে পদত্যাগ করেন হেফাজতে ইসলামের আমির আল্লামা শাহ আহমদ শফী। হাটহাজারী মাদ্রাসার শুরা সদস্যদের বৈঠকে আল্লামা শফী এই ঘোষণা দেন। বৈঠকের পরপরই অসুস্থ হয়ে পড়েন শতবর্ষী এই আলেম। তাকে মধ্যরাতে অ্যাম্বুলেন্সে হাটহাজারী মাদ্রাসা থেকে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে নেওয়া হয়।

চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডা. আফতাবুল ইসলাম জানান, মধ্যরাতে শফী হুজুরকে অ্যাম্বুলেন্সে হাটহাজারী মাদ্রাসা থেকে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে আনা হয়। পরে হাসপাতালের ৩য় তলার ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটের (আইসিইউ) ৮ নম্বর বেডে তাকে ভর্তি করা হয়।

তিনি জানান, শফী হুজুর ডায়াবেটিস, হৃদরোগসহ বার্ধক্যজনিত নানা জটিল রোগে ভুগছেন। তার চিকিৎসায় শুক্রবার সকালে মেডিক্যাল বোর্ড গঠন করা হয়। চিকিৎসকদের পরামর্শে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিকেলে ঢাকার আসগর আলী হাসপাতালে নিয়ে যান পরিবারের সদস্যরা।

বার্ধক্যজনিত কারণে অনেক দিন ধরে নানা শারীরিক সমস্যায় ভুগছেন আল্লামা শাহ আহমদ শফী। গত কয়েক বছরে তিনি বেশ কয়েকবার দেশ ও বিদেশের হাসপাতালে চিকিৎসা নেন। সর্বশেষ গত জুনে শ্বাসকষ্ট, ডায়াবেটিসসহ নানা শারীরিক সমস্যা দেখা দেওয়ায় চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউতে ভর্তি করানো হয় আল্লামা শাহ আহমদ শফীকে।

আল্লামা শাহ আহমদ শফীর জন্ম চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া উপজেলার পাখিয়ারটিলা গ্রামে। তিনি দুই ছেলে ও তিন মেয়ের জনক। আল্লামা শফীর শিক্ষাজীবন শুরু হয় রাঙ্গুনিয়ার সরফভাটা মাদ্রাসায়। এরপর পটিয়ার আল জামিয়াতুল আরাবিয়া মাদ্রাসায় (পটিয়া জিরি মাদ্রাসা) পড়াশোনা করেন তিনি। পরে হাটহাজারীর দারুল উলুম মঈনুল ইসলাম মাদ্রাসা এবং ভারতের দারুল উলুম দেওবন্দ মাদ্রাসায় পড়াশোনা করেন তিনি।

১৯৮৬ সালে হাটহাজারী দারুল উলুম মুঈনুল ইসলাম মাদ্রাসার মহাপরিচালক (মুহতামিম) হিসেবে দায়িত্ব নেন আল্লামা শাহ আহমদ শফী। বৃহস্পতিবার পর্যন্ত টানা ৩৪ বছর ধরে তিনি এই দায়িত্ব পালন করেন।

দেশের কওমি মাদ্রাসাগুলোর মধ্যে সবচেয়ে পুরনো এবং বড় মাদ্রাসা হিসেবে পরিচিত হাটহাজারী দারুল উলুম মুঈনুল ইসলাম মাদ্রাসা। এই মাদ্রাসার মহাপরিচালক হিসেবে কওমি মাদ্রাসাগুলোর নেতৃত্ব দিয়ে আসছিলেন আল্লামা শাহ আহমদ শফী।

(ওএস/পি/সেপ্টেম্বর ১৮, ২০২০ইং)