স্টাফ রিপোর্টার, দিনাজপুর : দিনাজপুরে ঘোড়াঘাট ইউএন ওয়াহেদা খানমকে হত্যার প্রচেস্টা মামলায় দুই দফা রিমান্ড শেষে আজ রবিবার মামলার অন্যতম আসামী ইউএনও’র বাড়ির সাময়িক বরখাস্ত মালি রবিউল ইসলাম আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দী দিয়েছে। পরে তাকে প্রেরণ করা হয়েছে জেলহাজতে।

কড়া নিরাপত্তা মধ্যে রবিউল ইসলামকে হেলমেন্ড পরিয়ে আজ রবিবার সকাল ৯টা ৫৮ মিনিটে দিনাজপুর আদালতে নিয়ে আসে পুলিশ। পরে বিকেল সাড়ে ৩টায় সিনিয়র জুডিশিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রিট বিচারক ইসমাইল হোসেনের আদালতে রবিউলকে হাজির করা হবে হয়। আসামী রবিউল ইসলাম আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দী প্রদান করে। স্বীকারোক্তি নেয়ার পর আদালত তাকে জেল-হাজতে প্রেরণের নির্দেশ প্রদান করেন।

রবিউল ইসলাম আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দী দিয়েছে বলে জানিয়েছেন, দিনাজপুর কোর্ট পরিদর্শক ইসরাইল হোসেন।

দিনাজপুর চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলি আদালত-৭ এর বিচারক ইসমাইল হোসেনের আদালতে তোলা হয় রবিউলকে। আদালতে তোলার ৩ ঘণ্টা পর বিচারকের সামনে স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দি প্রদান করেন রবিউল। জবানবন্দির পর রবিউলকে দিনাজপুর জেলা কারাগারে প্রেরণ করা হয়।

এর আগে পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে রবিউল জানিয়েছিলেন, এ ঘটনার একমাত্র পরিকল্পনাকারী এবং হামলাকারী তিনি নিজেই। আক্রোশ থেকেই এই ঘটনা ঘটিয়েছে তিনি। তার দেওয়া তথ্যমতে হামলায় ব্যবহৃত হাতুড়ি, লাঠি, মই, চাবিসহ বিভিন্ন আলামত উদ্ধার করেছে পুলিশ। একই সঙ্গে তার পরনের প্যান্ট, হাতের ছাপসহ মোবাইলের লোকেশন- বিষয়গুলো আলামত হিসেবে ঢাকায় প্রেরণ করা হয়েছে। এসব আলামত বিচারকার্যে সহায়ক হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

গত ৯ সেপ্টেম্বর সন্দেহভাজন ও প্রযুক্তির সহায়তার রবিউল ইসলামকে নিজ বাড়ি থেকে আটক করে পুলিশ। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তিনি নিজের দোষ স্বীকার করেন।

এই মামলাটি তদন্তকারী কর্মকর্তা দিনাজপুর গোয়েন্দা পুলিশ-ডিবির ওসি ইমাম আবু জাফরও রবিউল ইসলাম আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দী দেয়ার সত্যতা স্বীকার করেন।

এদিকে আদালতে উপস্থিত রবিউল ইসলামের ভাইয়েরা অভিযোগ করেন,পুলিশ রবিউলকে দু’পাশে ধরে উচু করে আদালতে প্রবেশ করেছেন। জোরপূর্বক স্বীকারোক্তি নেয়ার জন্য অমানুষিক নির্যাতন ও মারধর করায় রবিউল হাঁটতে পাছেন না বলেও তারা অভিযোগ করেন।

এর আগে বৃহস্পতিবার আসামী রবিউল ইসলামকে পুলিশ আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দী দিতে বললে রবিউল অসম্মতি জানায়। পরে ৬ ঘন্টা পর পুলিশ ওনদিন বিকেল সাড়ে ৫ টায় সিনিয়র জুডিশিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রিট আদালতের বিচারক আনজুমান আরার আদালতে রবিউলকে হাজির করে আরো ৭ দিনের রিমান্ড চায়। অদালতের বিচার ৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

প্রসঙ্গতঃ গত ২রা সেপ্টেম্বর দিবাগত রাত সাড়ে ৩টায় ঘোড়াঘাট ইউএনওর বাস ভবনে ভেন্টিলেটার দিয়ে প্রবেশ করে দুর্বৃত্তরা ইউএনও ওয়াহিদা খানম এবং তার বাবা মুক্তিযোদ্ধা শেখ ওমর আলীর উপর হামলা চালায়।

(এস/এসপি/সেপ্টেম্বর ২০, ২০২০)