স্টাফ রিপোর্টার, দিনাজপুর : দিনাজপুরে ঐতিহ্যবাহী গাউসুল আজম এমিতখানার প্রায় শতকোটি টাকার সম্পত্তি আত্মসাতের অভিযোগে ভূমিদষ্যু শাহরিয়ারের বিচারের দাবিতে ফুঁসে উঠেছে এলাকাবাসী ও ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা।

আজ রবিবার সকালে শেখ জাহাঙ্গীর কবরস্থান সংলগ্ন এলাকায় সমাবেশ,মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসুচি পালন করেছে এলাকার কয়েক’শ মানুষ।

এ সময় সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বক্তারা বলেন, দিনাজপুরের শেখপুরা মৌজার ৩নং জেএল ২২২/৫২ খতিয়ানভূক্ত ৬৬১ দাগে ৭ দশমিক ৫ শতক, ৬৬০ দাগে ২৮ শতক (ডাঙ্গা) সহ মোট ৭ দশমিক ৩৩ শতক সম্পত্তি বালুবাড়ী এলাকার মৃত দলিল উদ্দীন আহমেদের ছেলে মৃত গোলাম মোস্তফা ১৯৯৪ সালের জানুয়ারী মাসে গাওসুল আজম এতিমখানার নামে দানস্বত্ব দলিল মূলে রেজিষ্ট্রি করে দেন। তিনি সেখানে প্রাথমিকভাবে একটি এতিম খানাও গড়ে তুলেন। ওই এতিম খানার আশপাশে বাস্তহারা অসহায় ভুমিহীন কয়েকটি পরিবারও বসবাস করতেন। পরে গোলাম মোস্তফা’র ছেলে গাওসে শাহরিয়ার ওই সম্পত্তি আত্মসাতের করার জন্য নানান অপকৌশল ও সন্ত্রাসী কার্যক্রমে লিপ্ত হয়। এতিম খানা ভেঙ্গে দেয়া ছাড়াও বসবাসরত অসহায় মানুষের ঘর-বাড়ি আগুন লাগিয়ে জ¦ালিয়ে দেয়। সেখানে একজনের অস্বাভাবিক মৃত্যুও হয়।

এক পর্যায়ে শহরের ইসলামী ব্যাংক, সোনালী ব্যাংক সহ বিভিন্ন পর্যায়ের ৮/৯ জন প্রভাবশালী ব্যক্তি’র কাছে বেশকিছু কমি অবৈধভাবে বিক্রি করে প্রায় ২০ কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়। শাহরিয়ার ২০ কোটি টাকা আত্মাসাৎ করলেও এর সাথে সহযোগী রয়েছেন জমি ক্রেতারা,এমন অভিযোগ এলাকাবাসী’র। কারণ, ইসলামী ব্যাংক, সোনালী ব্যাংকের কতিপয় ওই কর্মকর্তারা এতিমের সম্পদ ক্রয় করে আট্টালিকা তৈরী করেছেন। কোন নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে কম দামে জমি ক্রয়ের জন্য ওই ব্যাংক কর্মকর্তারা এমনটা করেছেন। এলাকাবাসীর অভিযোগ, এসব অসাধু কর্মকর্তাদের মধ্যে রয়েছেন, ইসলামী ব্যাংকের আসাদুল, কিবরিয়া, মোহাম্মদ আলী, আব্দুল জলিল, আমিনুল ইসলাম, ওয়ামিক হাসান চৌধুরী, সোনালী ব্যাংকের তাহমিদুর রহমান সহ আরও অনেকে। এরা সেখানে বিশাল বিশাল অট্টালিকা নির্মাণ করেছেন। পাশাপাশি শাহরিয়ার সুইমিং পুল, সহ আলিশান একটি ৬ তলা বিশিষ্ট ভবন নির্মাণ করেন।

ভূমিদষ্যু শাহরিয়রসহ তার সহযোগিদের বিরুদ্ধে কেউ প্রতিবাদ করলে তার ওপর নেমে আসে নানা রকম নির্যাতন এবং মিথ্যা মামলাসহ হয়রানী। তাই কেউ ভয়ে মুখ খুলতে ভয় পায়।

এ ব্যাপারে অভিযুক্ত শাহরিয়ারের সাথে মুঠোফোনে জানতে চাইলে,তিনি সাংবাদিকের সাথে কথা বলেন না বলে সাফ জানিয়ে দেন। কেনো কথা বলেন না জানতে চাইলে বলেন,“আপনারা খোঁজ-খবর না নিয়ে বেশি বেশি লিখেন। আগে নিজেরাই তদন্ত করেন। জমি কার। তার পর জনিতে চাইয়েন।”

আজকের মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসুচীতে গাওসুল আজম এতিমখানা পরিচালনা কমিটির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আমির হোসেন, সহ-সভাপতি ও পৌর কাউন্সিলর কাজী আকবর হোসেন অরেঞ্জ, সাধারণ সম্পাদক বিশিষ্ট শিল্পপতি লিয়ন চৌধুরী, সদস্য সৈয়দ মনসুর হোসেন ডাব্লুউ এবং আবাল-বৃদ্ধ, বনিতা সহ প্রায় দেড় হাজার মানুষ উপস্থিত ছিলেল।

(এস/এসপি/সেপ্টেম্বর ২০, ২০২০)