স্টাফ রিপোর্টার : রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে পাওয়া যাচ্ছে না মোটা চাল। ফলে বেড়েছে মাঝারি ও চিকন চালের দাম। সপ্তাহের ব্যবধানে মানভেদে চালের দাম কেজিতে ২ থেকে ৪ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। মৌসুম শেষে চালের সরবরাহ কমায় এই দাম বেড়েছে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।

রবিবার (২০ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর বিভিন্ন বাজারের খুচরা ব্যবসায়ীদের দেয়া তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে মিনিকেট চাল বিক্রি হচ্ছে ৫৮ থেকে ৬০ টাকা, যা আগে ছিল ৫৬ থেকে ৫৮ টাকা। নাজিরশাইল চালের দামও কেজিতে ২ টাকা বেড়ে ৬২ থেকে ৬৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অপরদিকে, ৪৪ থেকে ৪৬ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া মাঝারি মানের চালের দাম বেড়ে ৪৮ থেকে ৫০ টাকা হয়েছে।

আড়তে চিকন চালের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৫৫ টাকা, যা আগে ছিল ৪৫ থেকে ৪৮ টাকা। আর মাঝারি মানের চালের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪২ থেকে ৪৪ টাকা, যা আগে ছিল ৪০ থেকে ৪২ টাকা। খুচরা বজারে চালের দাম বাড়ার বিষয়ে খিলগাঁও তালতলার চাল ব্যবসায়ী জানে আলম ভূঁইয়া বলেন, ‘এক সপ্তাহ ধরে চালের দাম বাড়তি। যা খবর শুনছি সামনে চালের দাম আরও বাড়বে। ইতোমধ্যে রশিদের মিনিকেট ২৫ কেজির বস্তা আমাদের কিনতে হচ্ছে এক হাজার ৪০০ টাকা দিয়ে। কিছুদিন আগে এই চাল আমরা এক হাজার ৩৫০ টাকায় বিক্রি করেছি।’

তিনি বলেন, ‘রশিদের চালের দাম বাড়লে, অন্য ব্যবসায়ীরাও চালের দাম বাড়িয়ে দেয়। গত কয়েকদিনে সবাই কেজিতে চালের দাম ২-৩ টাকা বাড়িয়ে দিয়েছে। ৫০ টাকার নিচে বাজারে এখন কোনো চাল নেই। দাম বাড়ায় মিনিকেট চাল বিক্রি করতে হচ্ছে ৫৮ থেকে ৬০ টাকা, যা আগে ৫৬ টাকাও বিক্রি করেছি। মোটা চাল তো বাজারে নেই। আর মাঝারি মানের আটাশ ও লতা চাল বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৫২ টাকা, যা আগে ৪৬ টাকা ছিল। যা শুনছি, তাতে আগামী সপ্তাহ থেকে মাঝারি চাল ৫৫ টাকা এবং চিকন চাল ৬০ টাকার উপরে বিক্রি করতে হবে।’

প্রায় একই ধরনের কথা বললেন মালিবাগ হাজীপাড়ার ব্যবসায়ী মো. সোহাগ। তিনি বলেন, ‘দুদিন আগে রশিদের ২৫ কেজির বস্তা এক হাজার ৩৫০ টাকায় বিক্রি করেছি। কিন্তু গতকাল আমাদেরই কিনতে হয়েছে এক হাজার ৪০০ টাকা করে। সুতরাং এই চাল এক হাজার ৪২০ টাকার নিচে বিক্রি করার উপায় নেই। একইভাবে অন্যান্য চালের দামও বেড়েছে। আমাদের কাছে যে চাল আছে এর মধ্যে সব থেকে কম দামেরটা ৫০ টাকা কেজি।’

চালের দামের বিষয়ে জানতে চাইলে ঠাকুরগাঁওয়ের ন্যাশনাল রাইস মিলের কর্ণধার মোহাম্মদ হাসান রাজু বলেন, ‘ঠাকুরগাঁওয়ে এখন আমরা মাঝারি মানের চাল ৪২ থেকে ৪৪ টাকায় বিক্রি করছি। চিকন চাল বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৫৫ টাকা। চালের যে অস্বাভাবিক দাম বেড়েছে তার মূল কারণ ছোট ছোট হাসকি মিলগুলো এখন চলে না। সারাদেশে এক হাজারের মতো হাসকি মিল বন্ধ রয়েছে। শুধু বড় বড় অটো মিলে চাল উৎপাদন হচ্ছে। এ কারণে স্বাভাবিকভাবেই বাজারে চালের সরবরাহ কমে গেছে। আর সরবরাহ কমে গেলে দাম বাড়বে এটাই স্বাভাবিক।’

যোগাযোগ করা হলে বাংলাদেশ অটো মেজর অ্যান্ড হাসকিং মিল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন সাধারণ সম্পাদক লায়েক আলী বলেন, ‘হাসকি মিল বন্ধ হয়ে যাওয়ার কারণে চালের দাম বাড়ছে, এটা সঠিক না। হাসকি মিল থেকে চাল খুব বেশি আসে না। চালের দাম বাড়ার কারণ মৌসুম শেষের দিকে চলে এসেছে। তাছাড়া এবার বছরজুড়েই প্রাকৃতিক দুর্যোগ রয়েছে। এখনও প্রতিদিন বৃষ্টি হচ্ছে। যে কারণে বাজারে ধানের সরবরাহ কম, দামও বেশি। ধানের দাম বেশি হলে চালের দাম বাড়বে এটাই স্বাভাবিক।’

(ওএস/পি/সেপ্টেম্বর ২০, ২০২০ইং)