আন্তর্জাতিক ডেস্ক : পাকিস্তানের ইতিহাসে ভয়াবহতম শিল্প ট্র্যাজেডি বলা হয় ২০১২ সালে বলদিয়া শহরের গার্মেন্টস ফ্যাক্টরিতে অগ্নিকাণ্ডকে। ওই ঘটনায় আগুনে পুড়ে মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছিল ২৬০ জনেরও বেশি শ্রমিকের। টানা আট বছর বিচারপ্রক্রিয়া শেষে গার্মেন্টেসের সেই অগ্নিকাণ্ডকে দুর্ঘটনা নয়, ইচ্ছাকৃত সহিংসতা বলে ঘোষণা করা হয়েছে। এ ঘটনায় দোষী দুইজনকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন করাচির সন্ত্রাসবিরোধী একটি আদালত।

পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম ডনের তথ্যমতে, ২০১২ সালের ১১ সেপ্টেম্বর আগুন লেগেছিল আলি এন্টারপ্রাইজ গার্মেন্টস ফ্যাক্টরির একটি বহুতল ভবনে। এসময় অন্তত ২৬৪ জন অগ্নিদগ্ধ হয়ে প্রাণ হারান। এদের মধ্যে ১৭ জনের দেহ এত বেশি পুড়ে গিয়েছিল যে তাদের আর শনাক্ত করাই সম্ভব হয়নি।

এ ঘটনায় পাকিস্তানে ক্ষমতাসীন জোটের অন্যতম শরিক মুত্তাহিদা কওমি আন্দোলনের (এমকিউএম) নেতা এবং বাণিজ্য ও শিল্প মন্ত্রণালয়ের তৎকালীন প্রাদেশিক মন্ত্রী রউফ সিদ্দিকী, বলদিয়া শহরে এমকিউএমের তৎকালীন সেক্টর ইনচার্জ আব্দুল রেহমান, জুবাইর, ব্যবসায়ী আব্দুল সাত্তার খান, গার্মেন্টসের চার দারোয়ানসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয়।

ফ্যাক্টরি মালিক ২৫ কোটি রুপি ‘প্রোটেকশন মানি’ না দেয়ায় এমকিউএমের করাচি তানজিমি কমিটির তৎকালীন প্রধান হাম্মাদ সিদ্দিকীর নির্দেশে অভিযুক্তরা বহুতল ভবনটিতে আগুন ধরিয়ে দেন বলে অভিযোগ করা হয়েছিল।

বর্বরোচিত এ ঘটনার স্বঘোষিত অপরাধী হাম্মাদ এবং ব্যবসায়ী আলি হাসান কাদরি বিদেশে পালিয়ে রয়েছেন বলে জানা গেছে।

মঙ্গলবার জুবাইর ওরফে চার্য এবং রেহমান ওরফে ভোলাকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন পাকিস্তানের সন্ত্রাসবিরোধী আদালত। অগ্নিসংযোগে সহযোগিতার অভিযোগে সাজা দেয়া হয়েছে চার দারোয়ানকেও।

তবে আসামিদের মধ্যে প্রভাবশালী রউফ সিদ্দিকী, ইকবাল আদিল খানুম এবং আব্দুল সাত্তার খানকে বেকসুর খালাস দেয়া হয়েছে। শুরু থেকেই অবশ্য এসব ব্যক্তি নিজেদের নির্দোষ দাবি করছিলেন।

(ওএস/এসপি/সেপ্টেম্বর ২২, ২০২০)