এস আলম: বাড়ি করার জন্য রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) থেকে বছর দুয়েক আগে প্ল্যান পাস করেছিলেন নবোদয় হাউজিং সোসাইটির প্লট মালিক নওরোজা পারভীন। কিন্তু আসল নকশা বাদ দিয়ে নিজের খুশিমতো বাড়ি করছেন তিনি। ভবন নির্মাণের বেলায় মানা হচ্ছে কোনো নিয়ম।

আড়াই কাঠা জমির ওপর তিনি ছয় তলা ভবন করছেন। এরইমধ্যে ভবনের কাঠামো দাঁড়িয়ে গেছে। কিন্তু ভবন নির্মাণে সব জায়গাতেই অনিয়ম করেছেন তিনি। ভবনের সামনে পেছনে কিংবা দুই পাশে কোনো জায়গা ছাড়া হয়নি। নওরোজার স্বামী হাবিবুর রহমান মারা যাওয়ার পর তাদের দুই ছেলে এই ভবন নির্মাণ তদারকি করছেন।

নবোদয় বি ব্লকের ৩ নম্বর রোডের ৯ নম্বর হোল্ডিংয়ে এই ভবনটি গড়ে তোলা হচ্ছে। ভবন নির্মাণের বেলায় রাজউকের আইন অনুযায়ী সাইন বোর্ড টানানোর কথা থাকলেও নওরোজা পারভীন তা রাখেননি। রাজউকের চোখ ফাঁকি দিয়ে তথ্য গোপন করে তিনি বাড়ি নির্মাণ করছেন।

স্থানীয়দের অভিযোগ, রাজউকের তদারকি না থাকায় ব্যক্তি মালিকাধীন ওই বাড়িটি গড়ে উঠছে। তারা জেনেশুনে আইন না মেনে বাড়ি করছেন। এমনকি সাংবাদিকরা গেলেও তারা কোনো তথ্য দিতে চাননি।

স্থানীয় একজন দোকানদার নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘আইন মেনে বাড়ি করতে হয় এটি সবাই জানে। জেনেশুনে কেউ যদি আইন না মানে তাহলে কী বলব? ইচ্ছামতো একটা বাড়ি গড়ে উঠছে। আমরা জেনেও চুপ আছি।’

ইমারত নির্মাণ বিধিমালা অনুযায়ী সীমানা সংলগ্ন রাস্তা থেকে ভবনের দূরত্ব হতে হবে ১ দশমিক ৫ মিটার বা পাঁচ ফুট। এক্ষেত্রে ছয় তলা বিশিষ্ট ভবন নির্মাণের বেলায় নিয়ম মানা হয়নি। এছাড়া ভবনের দুই পাশে ও পেছনে মাত্র এক ফুট করে জায়গা ছাড়া হয়েছে। নির্মাণাধীন ভবনের সামনে কোনো জায়গা জায়গা ছাড়া হয়নি। এ ছাড়া ভবনের নকশা পরিবর্তন করা হয়েছে। ভবনে ডেভিয়েশন বাড়ানো হয়েছে অন্তত পাঁচফুট।

বিধি অনুযায়ী সেট ব্যাকের মধ্যে ব্যালকনি করা যাবে না উল্লেখ থাকলেও ওই ভবনে সেট ব্যাকের মধ্যে ব্যালকনি করা হয়েছে।

বিধিমালা না মেনে ভবন কীভাবে গড়ে তুললেন জানতে চাইলে প্লটের মালিক নওরোজা পারভীনের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। নির্মাণ কাজ তদারক করা তাদের ছেলে বিপু বলেন, ‘আমরা চেষ্টা করেছি আইন মেনে বাড়ি করতে। তারপরও শতভাগ নিয়ম মেনে বাড়ি করা কোনোভাবেই সম্ভব না।’

তিনি আরও বলেন, ‘রাজউকের লোকজন এলে আমরা তাদের সঙ্গে কথা বলব। আপনাদের সঙ্গে কোনো আলোচনা করতে চাই না।’ এই বলে মোবাইল সংযোগ কেটে দেন বিপু।

বিধি না মেনে ইমারত নির্মাণের বিষয়ে জানতে রাজউকের জোন-৩ পরিদশক মো. সেলিম আহমেদ বলেন, ‘আমি নতুন এসেছি। এলাকাগুলো সব তেমন চিনি না। পর্যায়ক্রমে সব নির্মাণাধীন ভবন পরিদর্শন করব। বিধি না মেনে কেউ বাড়ি করলে অবশ্যই রাজউক ব্যবস্থা নেবে।’

(এসআ/পিএস/২২ সেপ্টেম্বর, ২০২০)