স্টাফ রিপোর্টার : কৃষি যান্ত্রিকীকরণে মাঠ পর্যায়ে কৃষি প্রকৌশলী নিয়োগের প্রক্রিয়া চলছে বলে জানিয়েছেন কৃষিমন্ত্রী মো. আব্দুর রাজ্জাক।

বুধবার (২৩ সেপ্টেম্বর) বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে বাস্তবায়নাধীন অ্যাপ্রোপ্রিয়েট স্কেল মেকানাইজেশন ইনোভেশন হাব-বাংলাদেশ (আসমি) প্রকল্প আয়োজিত ‘লাগসই কৃষি যন্ত্রপাতি : বাংলাদেশে টেকসই খাদ্য নিরাপত্তার চাবিকাঠি’ শীর্ষক বার্ষিক ভার্চুয়াল কর্মশালার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা জানান।

মন্ত্রী বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সরকার কৃষিকে আধুনিকীকরণ ও অধিকতর লাভজনক করতে যান্ত্রিকীকরণে অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে কাজ করছে। দেশে লাগসই কৃষি যন্ত্রপাতি জনপ্রিয় করার লক্ষ্যে কৃষির যান্ত্রিকীকরণে সম্প্রতি তিন হাজার ২০ কোটি টাকার প্রকল্প অনুমোদন দেয়া হয়েছে।’

তিনি বলেন, ইতিমধ্যে ‘জাতীয় কৃষি যান্ত্রিকীকরণ নীতিমালা ২০২০’ প্রণয়ন করা হয়েছে। মাঠ পর্যায়ে কৃষি প্রকৌশলী নিয়োগের জন্য কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরে কৃষি প্রকৌশল উইং স্থাপনে কৃষি মন্ত্রণালয় কাজ করছে। কৃষক ও স্থানীয় উদ্যোক্তাদেরকে কৃষি প্রকৌশলীরা সহযোগিতা করবে।’

‘দেশে কৃষি কাজের প্রতিটি ধাপে লাগসই কৃষি যন্ত্রের প্রয়োগ খুবই জরুরি হয়ে পড়েছে। ধানের চারা রোপনের সময় শ্রমিক সঙ্কটসহ শ্রমিকের বাড়তি মজুরি ও প্রাকৃতিক দুর্যোগ একদিকে যেমন উৎপাদন খরচ বৃদ্ধি করে অপরদিকে উৎপাদন ব্যাহত করে।’

মন্ত্রী বলেন, ‘দেশে সনাতন পদ্ধতিতে অসংখ্য শ্রমিকের কঠোর পরিশ্রমে, বহু শ্রম ঘণ্টার বিনিময়ে ধান কাটা, মাড়াই-ঝাড়াই করা হয়। এসবের ফলে ধানের উৎপাদন খরচ বেড়ে যায়। ফলে, কৃষিকে লাভজনক করার জন্য ভৌগোলিক ও কৃষি পরিবেশ বিবেচনায় নিয়ে অঞ্চলভিত্তিক একেক এলাকায় একেক ধরনের কৃষি যন্ত্রপাতির ব্যবহার করতে হবে।’

স্থানীয়ভাবে কৃষি যন্ত্রপাতি তৈরিতে গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, এ ক্ষেত্রে কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, গবেষণা প্রতিষ্ঠান, সরকারি সম্প্রসারণ প্রতিষ্ঠান ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোকে একত্রে যৌথভাবে লাগসই দেশীয় কৃষি যন্ত্রপাতি উদ্ভাবনে গবেষণা, উদ্ভাবিত যন্ত্রের উন্নয়ন ও জনপ্রিয়করণের কাজ করতে হবে। কৃষি যন্ত্রপাতি তৈরিতে বিদেশি বিনিয়োগ দরকার। সেজন্য দেশি-বিদেশি যৌথ উদ্যোগকে উৎসাহ দেয়া হচ্ছে।

কর্মশালায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষিশক্তি ও যন্ত্র বিভাগের অধ্যাপক ও আসমি-বাংলাদেশ প্রকল্পের পরিচালক মো. মঞ্জুরুল আলম। আমেরিকার ইউনিভার্সিটি অব ইলিনয়ের অধ্যাপক ও অ্যাপ্রোপ্রিয়েট স্কেল মেকানাইজেশন কনসর্টিয়ামের পরিচালক প্রশান্ত কুমার কলিতার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক লুৎফুল হাসান, আমেরিকার কানসাস স্টেট বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও ফিড দ্য ফিউচার ইনোভেশন ল্যাব ফর কলাবোরেটিভ রিসার্চ অন সাসটেইনেবল ইনটেনসিফিকেশনের পরিচালক পিভি ভারা প্রসাদ, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক এম এ সাত্তার মণ্ডল বক্তব্য রাখেন।

দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, বিভিন্ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের গবেষক, কৃষি মন্ত্রণালয় ও সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের গবেষক/কর্মকতা, ছাত্র, কৃষক, ব্যবসায়ীসহ দুই শতাধিক ব্যক্তি কর্মশালায় অংশ নেন। এছাড়া, আন্তর্জাতিক বিভিন্ন দাতাসংস্থা, উন্নয়ন সহযোগী প্রতিষ্ঠান ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা কর্মশালায় উপস্থিত ছিলেন।

(ওএস/এসপি/সেপ্টেম্বর ২৩, ২০২০)